রাজধানীর সবচেয়ে প্রাচীন আবাসিক এলাকা ধানমণ্ডি হলেও এত বছরেও এর অধিবাসীদের কল্যাণে গঠিত হয়নি কোনো সোসাইটি। অবশেষে প্রথমবারের মতো আত্মপ্রকাশ করলো ধানমণ্ডি সোসাইটি।
সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ধানমণ্ডিস্থ এক রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে ধানমণ্ডি সোসাইটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোসাদ্দেক হাবিব।
এ সময় মোসাদ্দেক হাবিব বলেন, “ধানমণ্ডি ঢাকার অত্যন্ত পুরোনো আবাসিক এলাকা হলেও এই এলাকার মানুষদের কল্যাণে কোনও সংগঠন ছিল না এতদিন। গত বছর থেকে পুরোনো অধিবাসীদের নিয়ে এই বিষয়ে কাজ করছিলাম। অবশেষে আজ সেটা পূর্ণাঙ্গ রূপ পেলো।”
ধানমণ্ডিবাসীদের সামাজিক নিরাপত্ত্বা, সার্বিক কল্যাণে সোসাইটি কাজ করবে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া যানজট, অবৈধ ফুটপাত দখল, শিশুদের খেলার মাঠ, সর্ব সাধারণের হাঁটার জন্য ওয়াকওয়ে এবং লেকের সঠিক ব্যবহারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করবে এই সোসাইটি বলে জানা যায়।
সোসাইটির সভাপতি আবু মুহাম্মদ সবুর বলেন, “ধানমণ্ডির হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সবার আগে প্রয়োজন সব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা। আর আলোচনার জন্য একটি অরাজনৈতিক সামাজিক ফোরাম তৈরি করা। আর কমিটি গঠনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা এবং স্বেচ্ছাসেবী উপকমিটি গঠনের মাধ্যমে সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করা। সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে, সেই উদ্দেশ্য আদর্শকে সামনে রেখেই- ধানমণ্ডির স্থানীয় সমাজসচেতন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে অবশেষে আমরা ধানমণ্ডি সোসাইটি গড়ে তুলতে সফল হয়েছি।”
সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, “এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস ও স্থানীয় কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বাবলার সঙ্গে ধানমণ্ডিবাসীর উন্নয়ন বিষয়ে কর্মপদ্ধতি নিয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও আলোচনা চলছে।”
মোসাদ্দেক হাবিব আরও বলেন, “ধানমণ্ডি এলাকার অধিবাসীদের কল্যাণে বৃক্ষরোপণ, লেক ব্যবহার, মেডিক্যাল ক্যাম্প, সামাজিক নিরাপত্তাসহ জনগণের বসবাসযোগ্য এলাকা হিসেবে ধানমণ্ডিকে গড়ে তুলতে সোসাইটি নিরলসভাবে কাজ করবে।”
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোসাদ্দেক হাবিব বলেন, “ধানমণ্ডির অন্যতম সমস্যা যানজট। আর এই যানজটের তিনটি কারণ হচ্ছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল-ক্লিনিক এবং হাইরাইজ মার্কেট। এসব জায়গায় আগতদের গাড়ির কারণে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পুরো এলাকায় যানজট লেগে থাকে। যা পরে চারপাশের এলাকায়ও সে জ্যাম ছড়িয়ে পড়ে। এই বিষয়ে তাদের সোসাইটি কাজ করবে বলেও জানান তিনি।”
যতদিন আবাসিক এলাকা থেকে এসব স্কুল, হাসপাতাল বা মার্কেট সরানো যাচ্ছে না, ততদিন এসব স্থানে আগতদের গাড়ি পার্কিং বিষয়ে তারা ইতোমধ্যে ডিএসসিসির সঙ্গে আলোচনা করে বিকল্প পার্কিং ব্যবস্থা করবে। প্রয়োজনে সারাদিন গাড়ি রাস্তায় বা অন্যের বাড়ির সামনে না দাঁড়িয়ে থেকে আবারও যার যার বাড়িতে ফিরে যাবে। দরকার মত পরে এসে যাত্রী নিয়ে যাবে। আপাতত এইভাবে যানজট কমানোর ব্যাপারে তাদের ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া অনুষ্ঠানে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়। এ সময় নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে উপস্থিত সাংবাদিকদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
সোসাইটির কার্যনির্বাহী সদস্যরা হলেন সভাপতি আবু মোহাম্মদ সবুর, সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. লিয়াকত হোসাইন (মিলন) ও মো. মনির হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক ডা. মোসাদ্দক হাবিব (মিতু), যুগ্ন সম্পাদক এ কামাল অনু, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল খান (অলক), অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ সাদ উল্লাহ, দপ্তর সম্পাদক মো. শরিফুল হক, নারী বিষয়ক সম্পাদক দিলারা হাফিজ, জন কল্যাণ সম্পাদক এ. এম. কামাল, শিক্ষা ও আইন বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ অনীক রুশদ হক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক সৈয়দ আশেক আলী, কমিউনিটি স্বাস্থ্য সম্পাদক হোসাইন এ সিকদার, কমিউনিটি পরিবেশ সম্পাদক মো. তারেক রহমান, ক্রীড়া সম্পাদক মো. তৈয়ব আফজাল, গণমাধ্যম ও যোগাযোগ সম্পাদক মো. ইসাম, জনসংযোগ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান, সদস্য ডা. মেহরাজ রহমান চৌধুরী এবং খান মো. ওসামা সালেহিন।