রাজধানীর বাজারে সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি থাকলেও অস্থিরতা বেড়েছে চাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কয়েকটি পণ্যের দাম। এর মধ্যে ক্রেতাদের সবচেয়ে বেশি অভিযোগ চাল নিয়ে। পাশাপাশি তেল ও চিনির দাম আগের চেয়ে বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সকাল থেকেই রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় ছিল। ট্রাক ও ভ্যানে করে শাকসবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ রয়েছে। তবে সবজির দাম আগের চেয়ে কমে যাওয়ায় অনেকে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
বর্তমানে প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, আটাশ ৪৮ টাকা, নাজিরশাইল ৫৫ থেকে ৭০ টাকা, স্বর্ণা ৪৮ টাকা। ঈদুল আজহার পর থেকে চালের বাজারে এ চিত্র দেখা গেছে।
চালের দাম বাড়ার কারণ কী জানতে চাইলে বিক্রেতারা বলছেন, জেলা পর্যায়ের যেসব জায়গা থেকে চাল ঢাকায় আসত, সেগুলোর সরবরাহ কমে গেছে। ছোট ব্যবসায়ীদের পরিবর্তে এখন বড় ব্যবসায়ীরা চালের দামে বাড়িয়ে দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতির তৈরি করে তারা সুযোগ নিচ্ছেন।
কয়েক দিন আগে ভোজ্যতেলের দাম কিছুটা কমলেও আবার দাম বেড়েছে। রূপচাঁদা সয়াবিন ৫ লিটার ৬৯০, বসুন্ধরা ৬৭০, পুষ্টি ৬৬০, তীর ৬৮০, পামওয়েল কেজি ১২০ টাকা, সরিষার তেল ৫ লিটার ৯২০ টাকা।
ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজয় নামের এক ক্রেতা বলেন, “আমি আগারগাঁও থেকে প্রায় শুক্রবার কারওয়ান বাজারে আসি। গত দুই সপ্তাহে আসিনি। কিন্তু আজ এসে দেখলাম চাল ও তেলের দাম অনেক বেশি বেড়ে গেছে, যা মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।”
এছাড়া চিনির দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে খোলা চিনি বিক্রি হতো ৬৫-৭০ টাকা, এখন সেটা ৭৫-৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগের গত সপ্তাহের চেয়ে ১০-১২ টাকা বেশি। প্যাকেটজাত চিনি ৮০-৮৫ টাকা। মসুর ডাল ভারতীয় কেজি ৭৭, সরুটা ১০০, বুটের ডাল ৭৫, মুগ ডাল দেশি ১২৫ টাকা। আটা বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা করে।
তেল ও চিনির দাম কেন বাড়ছে, জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী হানিফ মিয়া বলেন, তেল ও চিনির দাম বেশি হওয়ার কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে তেল ও চিনির দাম বেশি। আমাদের যেহেতু বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে কমে কীভাবে বিক্রি করব।
পেঁয়াজের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কেজি ৪৫, আলু ২০ টাকা কেজি। আলুর দাম গত সপ্তারের চেয়ে কমেছে। রসুন ১২০, চীনা আদা বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা, চীনা রসুন ১০০ টাকা এবং দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা।
মাছের দামের মধ্যে ইলিশ প্রতি কেজি ৭৫০-৯০০ টাকা, তেলাপিয়া কেজি ১৭০, পাঙাশ ১১০ ১৩০।
গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৩৫ টাকা করে। এছাড়া সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা, লেয়ার ২৩০ টাকা, হাঁস প্রতি পিস ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, কবুতর ১৩০ টাকা। মুরগির ডিমের হালি ৩৫, হাঁসের ডিম হালি ৫০ টাকা।
এদিকে সবজির বাজারে স্বস্তি প্রকাশ করতে দেখা যায় ক্রেতাদের। গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। গত সপ্তাহে শসার কেজি ছিল ৪০ টাকা আজ ২০-২৫ টাকা। বরবটি ৫০, গাজর ৮০, টমেটো ৮০, লাউ প্রতি পিস ৪০-৫০, কাঁচা মরিচ ৬০, পটোল ৩০, কচু আলু ২০, করলা ২০, করলা ৩০, লেবু হালি ২০, ধুন্দুল ৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, শিম ১৩০ টাকা, কাঁকরোল ৪০ টাকা, কচুর মুখী ৩০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, মুলা ৩৫ টাকা, ঝিঙে ৮০ টাকা, চিচিঙা ৪০ টাকা, কুমড়া ৩০-৪০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতিটি ৪০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৪০ টাকা, ফুলকপি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা।