চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ব্যবসায়ী জানে আলম (৪৮) হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জসিম উদ্দিনকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গত ২০ বছর ধরে তিনি গাড়ির চালকের ছদ্মবেশে পলাতক ছিলেন।
শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় র্যাব।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর থানার নিমতলা বিশ্বরোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি র্যাবের কাছে জানে আলম হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বলে স্বীকার করেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, গত ২০০২ সালের ৩০ মার্চ সকালে আদালতে সাক্ষী দেওয়ার আগে জানে আলমকে তার এক বছরের শিশুর সামনে পিটিয়ে, কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে দুষ্কৃতিকারীরা। এই ঘটনায় ওইদিনই নিহতের বড় ছেলে মো. তজবিরুল আলম বাদী হয়ে চট্টগ্রাম থানায় ২১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যার অন্যতম প্রধান আসামি জসিম উদ্দিন। পরে ২০০৭ সালের ২৪ জুলাই ১২ জনকে ফাঁসি ও ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করলে আদালত জসিমসহ ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বাকিদের মামলা থেকে খালাস দেন।
র্যাব আরও জানায়, জানে আলমের ছোট ভাইকেও ২০০১ সালের ৯ নভেম্বর একই কায়দায় হত্যা করে জসিম উদ্দিনসহ একই দুষ্কৃতিকারীরা। জানে আলম এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলেন। তাই মামলার সাক্ষীকে সরিয়ে দিতে প্রকাশ্যে তাকে হত্যা করে দুষ্কৃতিকারীরা।
গ্রেপ্তারকৃত জসিম উদ্দিন র্যাবকে জানায়, জানে আলমের ছোট ভাইকে হত্যার পর তিন মাস চট্টগ্রাম মহানগরীর ডাবলমুড়িং থানার ফকিরহাটে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন তিনি। এ সময় তিনি ট্রাক চালাতেন। এখান থেকে গিয়ে জানে আলমকে হত্যায় অংশ নেন। দ্বিতীয় হত্যাকাণ্ডের পর কালুরঘাট এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বোয়ালখালীতে বিয়ে করেন তিনি এবং সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। পরে কালুরঘাটে তিন বছর, আগ্রাবাদে চার বছর এবং সর্বশেষ বন্দর থানার নিমতলীতে বাসা ভাড়া নিয়ে ট্রাক চালাতেন তিনি। মূলত ট্রাক চালকের পেশার আড়ালে গত ২০ বছর আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। এমনকি ড্রাইভিং লাইসেন্স ও অন্যান্য কাগজপত্র তৈরিতে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্রও ব্যবহার করেন তিনি। জসিম উদ্দিনে সঙ্গে তার আত্মীয়-স্বজনের কোনো যোগাযোগ ছিল না বলে জানায় র্যাব।