করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়লে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ এবং নতুন শিক্ষাবর্ষে বিনা মূল্যে বই বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এতে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “করোনা কখনো কমছে, কখনো বাড়ছে। শীতে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়লে, অনলাইনে যেন শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা যায়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিক্ষার্থীরা সংসদ টিভির মাধ্যমে তাদের পাঠ কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে। ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ এ কার্যক্রমে সকলকে সহযোগিতা করতে হবে।”
পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পুষ্টি ও মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সরকারপ্রধান বলেন, “শিক্ষার্থীরা শুধু পড়লেই হবে না, তাদের পুষ্টিও নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।”
দুই লাখ শিক্ষককে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “শিক্ষার্থীরা অমনোযোগী হলে তাদের মারধর নয়, আদর-যত্ন করতে হবে। এটাও একধরনের প্রতিবন্ধিতা। এদিকে শিক্ষকদের আরও বেশি নজর দিতে হবে।”
শেখ হাসিনা আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠন করবে আজকের শিক্ষার্থীরা। তাই তাদের সেভাবে গড়ে তুলতে হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী নাগরিক তৈরি করতে হবে। প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সমাজকে এমনভাবে গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষা আমার, যাতে কেউ কাউকে কাজের জন্য হুকুম দিতে না পারে। নিজের কাজ নিজে করে।”
শহরে বেড়ে ওঠা শিশুদের নানা ধরনের সংকটের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “শহরের শিশুরা টিভি, মোবাইল ফোন নিয়ে সময় কাটায়। এভাবে থাকতে থাকতে তারা তাদের চাহিদার দিকে নজর দিতে পারে না। শিশুরা চায় তাদের সাথি, যা বাবা-মাকেই পূরণ করতে হবে। তাদের মানসিকভাবে বেড়ে ওঠার শিক্ষা দিতে হবে।”
শেখ হাসিনা আরও বলেন, “আজকের দিনটা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলাফল ঘোষণা পাশাপাশি নতুন বছরের নতুন বই দেওয়া হচ্ছে। বই হাতে পাওয়ার আনন্দ আলাদা। নতুন বই মলাট লাগানো ও তাতে নাম লেখা, এটা অন্য রকম অনুভূতি।”
সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী যাতে পিছিয়ে না থাকে, এ জন্য তাদের উপযোগী করেও বই প্রস্তুত করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদেরও নিজেদের ভাষায় বই তৈরি করে দিচ্ছি। এ পর্যন্ত আমরা তাদের ৫টি ভাষা পেয়েছি। সে ভাষায় বই করে দিয়েছি।”
এ সময় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল উপস্থিত ছিলেন।