• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অডিও-ভিডিও ফাঁস শাস্তিযোগ্য অপরাধ


শাহাদাত হোসেন তৌহিদ
প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২১, ০৬:৫৮ পিএম
অডিও-ভিডিও ফাঁস শাস্তিযোগ্য অপরাধ

নাগরিকদের গোপনীয়তা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংবিধানে কঠোর শাস্তির বিধান থাকলেও ব্যক্তির গোপনীয়তা কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না। ফাঁস করে দেওয়া হচ্ছে ব্যক্তিগত ফোনালাপ রেকর্ডসহ অডিও-ভিডিও ক্লিপ। এতে ব্যক্তি ও সমাজে বিরূপ প্রভাব ফেলায় তা নিয়ে চলছে চারদিকে আলোচনা-সমালোচনা।

সম্প্রতি সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েন শিথিলের জন্মদিনে আলোচিত নায়িকা পরীমনি ও সাকলাইনের কেক কাটার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ফাঁস কর হয় গতকাল মঙ্গলবার। এর কিছুদিন আগেই ফাঁস হয় আলোচিত রাজনৈতিককর্মী হেলেনা জাহাঙ্গীরের ফোনালাপ। এছাড়া নানা সময়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অডিও-ভিডিও ফাঁসের ঘটনা ঘটেই চলেছে।

এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মিতি সানজানার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইনের ৭১ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি অপর দুইজন ব্যক্তির টেলিফোন আলাপে ইচ্ছাকৃতভাবে আড়ি পাতেন, তাহলে এটাকে অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।”

অডিও বা ভিডিও ছড়িয়ে পড়াসংক্রান্ত আইন নিয়ে ব্যারিস্টার সানজানা বলেন, “বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের ৯৭ (ক) ধারায় বলা হয়েছে—‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার স্বার্থে যেকোনো টেলিযোগাযোগ সেবা ব্যবহারকারীর প্রেরিত বার্তা ও কথোপকথন প্রতিহত, রেকর্ড ধারণ বা তৎসম্পর্কিত তথ্যাদি সংগ্রহের জন্য সরকার সময় সময় নির্ধারিত সময়ের জন্য গোয়েন্দা সংস্থা, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা বা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত সংস্থার কোনো কর্মকর্তাকে ক্ষমতা প্রদান করতে পারবে এবং উক্ত কার্যক্রমে সার্বিক সহায়তা প্রদানের জন্য টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারীকে নির্দেশ দিতে পারবে এবং পরিচালনাকারী উক্ত নির্দেশ পালন করতে বাধ্য থাকবে। সে জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অথবা স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর অনুমতি প্রয়োজন হবে।”

যেকোনো নাগরিকের অডিও বা ভিডিও ফাঁসের বিষয়টি কাম্য নয় বলে জানিয়েছেন মানবাধিকারকর্মী নীনা গোস্বামী। তিনি বলেন, “প্রত্যেকটা মানুষেরই গোপনীয় কিছু থাকবে। ব্যক্তিগত অডিও-ভিডিও ফাঁস হওয়া এটা অবশ্যই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, একের পর এক এমন ঘটনা ঘটছে। অথচ কোনো বিচার হচ্ছে না। আর এ কারণে এমন গর্হিত কাজ থামছে না।”

এ বিষয়ে সরকারকে আরও বেশি কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান এ মানবাধিকারকর্মী। তাহলে অডিও-ভিডিও ফাঁসের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটবে না।

 

Link copied!