বরেণ্য লেখক ও দার্শনিক আহমদ ছফার ৭৯তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৪৩ সালের আজকের এই দিনে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের গাছবাড়িয়া গ্রামে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। আহমেদ ছফা ছিলেন একাধারে একজন লেখক, কবি ও সমাজবিজ্ঞানী। তার লেখায় বাংলাদেশি জাতিসত্তার পরিচয় নির্ধারণ প্রাধান্য পেয়েছে। প্রথাবিরোধী আচরণের পাশাপাশি নির্মোহ ও অকপট দৃষ্টিভঙ্গির জন্য আলোচিত ছিলেন তিনি।
চট্টগ্রামে স্কুল ও কলেজের লেখাপড়া সমাপ্ত করে আহমদ ছফা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। বিভিন্ন সময়ে সাহিত্য-সাময়িকপত্র সম্পাদনা করেছেন গুণী এই লেখক। আহমদ ছফার উপন্যাসগুলো হলো সূর্য তুমি সাথী (১৯৬৭), উদ্ধার (১৯৭৫), একজন আলী কেনানের উত্থান-পতন (১৯৮৯), অলাতচক্র (১৯৯০), ওঙ্কার (১৯৯৩), গাভীবৃত্তান্ত (১৯৯৪), অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী (১৯৯৬), পুষ্পবৃক্ষ ও বিহঙ্গপুরাণ (১৯৯৬)। ছফার গল্পগ্রন্থ নিহত নক্ষত্র (১৯৬৯)।
ছফার কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে জল্লাদ সময়, একটি প্রবীণ বটের কাছে প্রার্থনা, লেনিন ঘুমোবে এবার। জার্মান কবি গ্যেটের বিখ্যাত কাব্য ‘ফাউস্ট’-এর অনুবাদ এবং বার্ট্রান্ড রাসেলের ‘সংশয়ী’ রচনার বাংলা রূপান্তর আহমদ ছফাকে অনুবাদক হিসেবেও খ্যাতি এনে দেয়। ছফার চিন্তা প্রকাশিত হয়েছে তার দুটি উল্লেখযোগ্য রচনা ‘বুদ্ধিবৃত্তির নতুন বিন্যাস’ (১৯৭৩) ও ‘বাঙালি মুসলমানের মন’ (১৯৭৬)-এ।
সমাজের ইতিহাস, বিবর্তন ও মননশীলতা নিয়ে ছফা লিখেছেন ‘সিপাহি যুদ্ধের ইতিহাস’ ও ‘যদ্যপি আমার গুরু’-এর মতো গ্রন্থ। আহমদ ছফা ছিলেন দক্ষ এবং উদ্যমী সংগঠক। আহমদ শরীফের নেতৃত্বে বাংলাদেশ লেখক শিবির গড়ায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেন তিনি। পরবর্তী জীবনের নানা সাংগঠনিক ও প্রতিবাদী রাজনৈতিক তৎপরতায় যুক্ত ছিলেন তিনি। ২০০১ সালের ২৮ জুলাই সংগ্রমী এই লেখকের মৃত্যু হয়।
