• ঢাকা
  • সোমবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩০, ২৮ রজব ১৪৪৬

‘আমাদের গণতন্ত্র কেন স্বৈরাচারী হয়, তা জানা দরকার’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২৫, ০২:৪৯ পিএম
‘আমাদের গণতন্ত্র কেন স্বৈরাচারী হয়, তা জানা দরকার’
অনুষ্ঠানে আগতদের একাংশ। ছবি : সংগৃহীত

“বাংলাদেশে উত্তম গণতান্ত্রিক শাসন ছিল, সেই গণতান্ত্রিক শাসন কেন বারবার আমাদের এখানে স্বৈরাচারে রূপ নেয়, তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন।” কবিতার আলোচনায় প্রসঙ্গক্রমে এই কথাগুলো বলেছেন গবেষক ও প্রাবন্ধিক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী।

‘কবিতার স্ফুলিঙ্গ, স্ফুলিঙ্গের কবিতা’ শিরোনামে তরুণ কবিদের কবিতা পাঠ এবং সেসব কবিতার ওপর আলোচনার আয়োজন করে সংস্কৃতিবাংলা। 

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানী মিরপুরের বৌটুবানি মিলনায়তনে এই আয়োজনে ছিল ২০ তরুণের কবিতা পাঠ, আলোচনা ও গান।

আয়োজনে উদ্বোধনী বক্তব্যে কবি ও প্রাবন্ধিক মজিদ মাহমুদ শেখ হাসিনার দুঃশাসনের কথা উল্লেখ করে বলেন, “দীর্ঘ একটা সময় গেছে, যখন আমরা প্রশ্ন করতে পারতাম না। সেটা ছিল একটা হুজুন।”

প্রশ্ন করার পরিসর যেন আবার সীমাবদ্ধ হয়ে না পড়ে, এমন আশা করেন মজিদ মাহমুদ।

আয়োজনে তরুণ কবিদের কবিতার বৈশিষ্ট্য, বিশিষ্টতা ও খামতির নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন কবি, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক ফয়েজ আলম। তিনি বলেন, “বহুমতের সমাবেশ ছাড়া একটি আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যায় না।”

এই সময়ের কবিদের বহুমত, বহুমাত্রিকতা এবং বহুস্বরিকতার নানা দিক নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে ফয়েজ আলম বলেন, “এই আয়োজনে যারা কবিতা পড়লেন, তাদের অনেকের কবিতায় এমন এক ব্যাপার আছে যা এই আয়োজনের শিরোনাম ‘কবিতার স্ফুলিঙ্গ, স্ফুলিঙ্গের কবিতা’র সঙ্গে খুব যায়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে-পরে যা ঘটেছে তার প্রতিক্রিয়া রয়েছে কবিতাগুলোয়, সে সময়ের ক্ষোভ ও দুঃখও আছে এসব কবিতায়।”

আয়োজনের সভাপ্রধান গবেষক ও প্রাবন্ধিক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী এই সময়ের তরুণদের কবিতার বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে ধ্রুপদি সাহিত্যের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “কবিতার ধ্রুপদি ধারার বৈশিষ্ট্য সমসময় এক রকম থাকে না, সময়ের দাবিতে তা বদলেও যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জীবনানন্দ দাশ, বুদ্ধদেব বসু, শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, আবুল হাসান প্রমুখদের লেখা ধ্রুপদি। কিন্তু তারা কেউ কেউ আলাদা সময়ের কবি, কেউবা একই সময়ের, তাদের লেখা আলাদা বৈশিষ্ট্যের হয়েও ধ্রুপদি হয়ে উঠেছে।”

ফয়জুল লতিফ চৌধুরী সাম্প্রতিক আলোড়ন-আন্দোলনের প্রসঙ্গ ধরে এই সময়ের তরুণ কবিদের মনোযোগ আকর্ষণ করে বলেন, “সুপরিচিত ঘটনা ও প্রসঙ্গকে অপরিচিত করে তোলার শিল্প-সাহিত্যের কাজ।”

এই অপরিচিতকরণ কৌশল এখনকার সময়ের বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্যে প্রয়োগের ওপর জোর দেন ফয়জুল লতিফ চৌধুরী।

আয়োজনে কবিতা পাঠ করেন রাসেল রায়হান, রোজেন হাসান, শাকিল মাহমুদ, রনক জামান, খান আলাউদ্দিন, আবিদ আজম, হিম ঋতব্রত, মঈন মুনতাসীর, শামস আরেফিন, তাজ ইসলাম, সায়্যিদ লুমরান প্রমুখ।

তরুণ কবিদের কবিতা পাঠের এই আয়োজনে সংস্কৃতিবাংলার পক্ষে সূচনা বক্তব্য দেন কবি, কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক চঞ্চল আশরাফ। তিনি সংস্কৃতিবাংলার বিভিন্ন কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। 

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডা. শাহনাজ পারভিন। আয়োজনে নজরুল গীতি এবং আধুনিক গান পরিবেশনের মাধ্যমে সমাপনী মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেন তরুণ কণ্ঠশিল্পী তানজিনা রহমান মীম।

আয়োজনে উপস্থিত কবি, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিকর্মীরা সংস্কৃতিবাংলার বহুত্ববাদী সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলকে আরও প্রসারিত করার যে প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ তার প্রশংসা করেন।  

Link copied!