• ঢাকা
  • বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩০, ১৩ শা'বান ১৪৪৬

৫৪-তে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২২, ০৩:৪৫ পিএম
৫৪-তে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী

গণমানুষের মুক্তির গান গেয়ে যাত্রা করে ৫৪-তে পা রেখেছে দেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। দীর্ঘ সময়ের পথচলায় বহু রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকায় ছিল সংগঠনটি।

১৯৬৮ সালের ২৯ অক্টোবর সত্যেন সেনের হাতে উদীচীর যাত্রা শুরু। তার পরের বছর থেকে সংগঠনটি প্রতিবছর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে আসছে। ‍‍‘শোষণের বেড়াজালে মানুষের প্রাণ/ মুক্তির মিছিলে লড়াইয়ের গান‍‍’- এ স্লোগান সামনে রেখে শনিবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মিলিত হচ্ছেন উদীচীর শিল্পী-কর্মী-সহযোদ্ধারা।

৫৪তম বার্ষিকী পালন উপলক্ষে নৃত্য ও আলেখ্যের পাশাপাশি সমাজবিকাশে অবদান রাখা ব্যক্তিত্ব ও দুর্নীতিবিরোধীদের নিয়ে নতুন গীতি-আলেখ্য ‘ধর ধর, চোর চোর’ নিয়ে আসছে সংগঠনটি। আলেখ্যটি দুর্নীতিবাজদের ব্যঙ্গ করে লেখা হয়েছে; রচনা  করেছেন মাহমুদ সেলিম।

অনুষ্ঠান বিষয়ে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন বলেন, “এ সময়ের আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নিয়ে যারা নির্যাতিত হয়েও পিছু হটেননি, উল্টো প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন এবং সমাজবিকাশে অবদান রেখেছেন; তাদের নিয়ে এবারের আয়োজন করেছি। নারী ফুটবল দলের ৮ জন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় তৈরির কারিগর মায়ারানী সরকার, চা শ্রমিকদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সন্ধ্যা রানী সরকার, খুলনার পাটকল শ্রমিক আন্দোলনের নেতা নওশের আরিফ ও টিপকাণ্ডে তেজগাঁও বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষিকা লতা রানী সমাদ্দার ও উদীচী প্রতিষ্ঠার সঙ্গে জড়িত গোলাম মোহাম্মদ ইদু ও শিশুসাহিত্যিক আক্তার হোসেনের উপস্থিতিতে আমাদের ৫৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন হবে।”

সংগঠনটির সভাপতি মাহমুদ সেলিম গীতি-আলেখ্য ‘ধর ধর, চোর চোর’ সম্পর্কে বলেন, “বর্তমান সময়ের রাজনীতির অপপ্রক্রিয়া এবং দুর্নীতি আমাদের সমাজকে ঘিরে ধরেছে। সামাজিক অবক্ষয়ের থাবায় গোটা সমাজ। এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের ব্যঙ্গ করে আমাদের গীতি-আলেখ্য ‘ধর ধর, চোর চোর’।”

উদীচীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিল্পী-সাহিত্যিক সত্যেন সেন খুব সচেতনভাবেই উদীচী নামটি নির্বাচন করেছিলেন। ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন- উদীচীর অর্থ উত্তর দিক বা ধ্রুবতারা দিক। দিকহারা নাবিকরা যেমন উত্তর দিকে ধ্রুবতারার অবস্থান দেখে তাদের আপন গন্তব্য স্থির করেন, তেমনি এ দেশের সংস্কৃতি তথা গণমানুষের সংস্কৃতি, সাংস্কৃতিক আন্দোলন- সবকিছুই উদীচীকে দেখে তার চলার পথ চিনতে পারবে।

জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে উদীচীকে দেওয়া হয়েছে ‍‍`একুশে পদক‍‍`। দেশের রাজনীতির চলমান সংকটের পেছনে সাম্রাজ্যবাদী ও সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ সুস্পষ্ট বলে মনে করে উদীচী। এ রকম পরিস্থিতি মোকাবিলায় উদীচীর সাংস্কৃতিক সংগ্রাম জাতিকে আবারও পথ দেখাতে সাহায্য করবে।

Link copied!