সাঁকোর ওপারের বাড়িটিতে
যাঁদের অধিবাস ছিল
তাঁরা জনপদের প্রচলিত মানুষের থেকে
ছিলেন ভিন্নতর
অনেকে অনুযোগ করে বলত—
ওখানে মৌসুমী হাওয়ার বিন্যাস
ঠিক প্রথাসিদ্ধ নয়;
ধ্যান যোগ প্রাণায়াম ছাড়াই
মস্তিষ্ক খুঁড়ে ওরা কথার স্তবক
তুলে আনতেন
তাতে সূর্যের আলো পড়ে
সদ্য উৎপাদিত ধাতব মুদ্রার ঔজ্জ্বল্যে
ছলকে উঠত।
চোখ ঝলসানো আলো কিংবা
দ্যুতির অভ্যন্তরের স্পষ্ট এক বর্ণচ্ছটার
দুর্দমনীয় আকর্ষণে
আমরা ব্যাপক আকৃষ্ট হয়েছিলাম
বাড়িটির প্রতি;
এমন নয় যে অধিবাসীরা মায়াজাল ছড়িয়েছিলেন
কিংবা বাগাড়ম্বরে আসর জমিয়েছিলেন
সেসব কিছুই নয়
তবু ওই দুর্দমনীয় আকর্ষণ
উপেক্ষা করতে পারিনি আমরা
সমতল ভূমি আর সুউচ্চ পর্বতমালায়
বিজলীরঙা আলো ছড়ানো
মধ্যাহ্নে পেরিয়ে গিয়েছিলাম সাঁকো।
অনেক ঝড় আর বৈরী বাতাসের ঝাপটায়
বাড়িটি আজ নিঃস্ব
আগতদের বেশির ভাগই
একে পান্থশালা ভেবে
চলে গেছে ভিন্ন পথে,
মস্তিষ্ক খুঁড়ে আনা কথার স্তবকে
তাদের চোখে ধাঁধা লেগেছিল শুধু
অন্তর্গত বর্ণচ্ছটা রয়ে গিয়েছিল অনুভবহীন,
প্রথাবদ্ধ মানুষেরা তাই
হাঁটু ভেঙে পড়ে যাচ্ছে বারবার
ঘাতক হাতে খাবলাচ্ছে এ ওর করোটি
বাড়িটি বিধ্বস্ত হওয়ায়
জনপদ ভেসে যায় আদিম বিবমিষায়।