কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ১১তম প্রয়াণ দিবসে গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে তাকে স্মরণ করেছেন স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরা।
গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেছেন স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরা। বুধবার (১৯ জুলাই) বেলা ১১টায় লেখকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, দুই পুত্র নিনিত ও নিষাদ লেখকের কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আফরোজ শাওন বলেন, “হুমায়ূন আহমেদ যখন মারা যান তখন আমার বড় ছেলের বয়স সাড়ে পাঁচ বছর এবং ছোট ছেলের বয়স দেড় বছর ছিল। তখন ওরা বাবার অভাব ও প্রয়োজন তেমন বুঝত না। তবে এখন ওরা বড় হয়েছে। বড় ছেলে এখন বুঝে হুমায়ূন আহমেদ নামটির কী ভার। মাঝেমধ্যে ও মন খারাপ করে বসে থাকে। ও বলে যদি বাবাকে পেতাম তাহলে অনেক গল্প করতাম, অনেক কিছু শিখতাম। এ জায়গাটা আমাকে থমকে দেয়। এটাই আমাকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট দেয়।”
শাওন বলেন, “হুমায়ূন আহমেদ তার বাবাকে স্মরণ করে তার এলাকায় শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই স্বপ্নের স্কুল থেকে এখন ভালো রেজাল্ট আসছে। তার স্বপ্ন ছিল এটি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় করার। সম্প্রতি আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিটিং করেছি, সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে স্কুলটি কলেজে রূপান্তরের। ইতোমধ্যে আমরা চারতলা একটি ভবন পেয়েছি। এটা ভেবে খুব ভালো লাগছে যে, হুমায়ূন আহমেদের স্বপ্নের স্কুলটি কলেজে রূপান্তর হবে।”
সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে শাওন বলেন, “১১ বছর হলো হুমায়ূন আহমেদ চলে গেছেন। এখনো তার নাটক যদি ইউটিউব বা চ্যানেলে চলে আমরা শেষ না করে উঠতে পারি না। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, তার বহু নাটক, সিনেমা বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ও ইউটিউব চ্যানেলে কোনো রকম চুক্তিপত্র ছাড়াই চালানো হচ্ছে। তিনি বেঁচে থাকতেও অনুমতি নেয়নি, মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারী কারও সঙ্গেও চুক্তি বা মৌখিক অনুমতি নেয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের প্রথম সারির ওটিটি প্ল্যাটফর্ম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। উকিল নোটিশ পাঠিয়েছি। কিন্তু তারা এটি গ্রহণ করেননি। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগও করেননি। আমরা চাই তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। আপনাদের মাধ্যমে ওনাদের কাছে যেন আমাদের বার্তা পৌঁছে যায়।”
এর আগে ২০১২ সালে ১৯ জুলাই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে মারা যান হুমায়ূন আহমেদ। পরে তাকে গাজীপুর সদরে পিরুজালী তার স্বপ্নের নুহাশপল্লীর লিচুতলায় দাফন করা হয়।