কথাসাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী কানাডীয় লেখক এলিস মুনরো মারা গেছেন। স্থানীয় সময় সোমবার (১৩ মে) রাতে অন্টারিওর নিজ বাসভবনে ৯২ বছর বয়সে মৃত্যু হয় এই খ্যাতিমান সাহিত্যিকের।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এলিস মুনরো দীর্ঘ ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ছোট গল্প ও উপন্যাস লিখেছেন। তার সাহিত্যের প্রধান অনুষঙ্গ ছিল কানাডার গ্রামীণ জীবন। গভীরতম সাহিত্যবোধের কারণে তাকে কিংবদন্তী রুশ লেখক আন্তন চেখভের সঙ্গে তুলনা করা হয়। তিনি ২০১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জয় করেছিলেন।
এলিস মুনরোর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে তার প্রকাশক ও পেঙ্গুইন র্যান্ডম হাউস কানাডার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিস্টিন কোচরান বলেন, “অন্টারিওর পোর্ট হোপে নিজ বাড়িতেই মারা গেছেন এলিস মুনরো। সারা বিশ্বে এই মহান লেখকের পাঠকেরা রয়েছেন। তিনি তার লেখায় গভীর জীবনবোধ ও মানবতা তুলে ধরার কারণে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়েছেন।”
১৯৬৮ সালে প্রথম ছোটগল্প সংকলন প্রকাশের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন এলিস মুনরো। তার ছোটগল্প ‘ডান্স অব দ্য হ্যাপি শেড’ কানাডার সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার গভর্নর জেনারেল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিল। জীবদ্দশায় তিনবার তিনি এই পুরস্কার পেয়েছিলেন।
এলিস মুনরো তার জীবদ্দশায় তেরটি ছোটগল্পের বই, একটি উপন্যাস ও দুটি নির্বাচিত ছোটগল্পের সংকলন প্রকাশ করেছেন। একটিমাত্র উপন্যাস ‘লাইভস অব গার্লস অ্যান্ড উইমেনস’ লিখে তিনি বিশ্বজুড়ে পাঠকদের মন জয় করেছেন।
১৯৩১ সালে অন্টারিওর উইংহামে জন্মেছিলেন এলিস মুনরো। তার বাবা ছিলেন খামারচাষী ও মা ছিলেন স্কুলশিক্ষক। মুনরোর বেশির ভাগ লেখায় এই অঞ্চলের মানুষ, সংস্কৃতি ও তাদের জীবনযাপন উঠে এসেছে। তিনি লন্ডনের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্নে বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।
মুনরোর লেখা ‘দ্য বিয়ার কাম ওভার দ্য মাউন্টেন’ গল্প থেকে ২০০৬ সালে ‘অ্যাওয়ে ফ্রম হার’ চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য ২০০৯ সালে তিনি ম্যান বুকার পুরস্কার পেয়েছেন। ম্যান বুকার পুরস্কার দেওয়ার সময় বিচারকেরা বলেছিলেন, “এলিস মুনরো পড়ার অর্থ হচ্ছে, প্রতিবার আপনি এমন কিছু শিখবেন যা আগে কখনো ভাবেননি।”