• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা করতে মানা, যা বলছেন লেখক-প্রকাশকরা


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৪, ০৩:১২ পিএম
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা করতে মানা, যা বলছেন লেখক-প্রকাশকরা
অমর একুশে বইমেলা। ছবি : সংগৃহীত

অমর একুশে বইমেলা। আমাদের ঐতিহ্যবাহী মেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম এটি। এই মেলার সঙ্গে দুটি নাম বিশেষভাবে জড়িয়েছে। তা হলো, বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। বাংলা একাডেমির উদ্যোগে প্রতি বছর এই স্থান দুটিতেই বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু আগামী বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত হচ্ছে না। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে বইমেলা কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। সেক্ষেত্রে আগামী মেলার আয়োজন কোথায় কীভাবে হবে, সে প্রশ্নই এখন সবার কাছে ঘুরে ফিরে আসছে।

বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়ে উঠেছেন কবি-লেখকরাও।

প্রকাশক শরীফা বুলবুল প্রশ্ন রেখে বলেন, “সোহাওয়ার্দী উদ্যান হচ্ছে ‘কালচারাল হাব’, এখান থেকে সরে গেলে বইমেলা কি আর বইমেলা থাকবে? প্রতি বছর এভাবে নাটক করা হয় কেন? সোহাওয়ার্দীতে না হলে কোথায় হবে বইমেলা?”

কবি, প্রকাশক ও সাংবাদিক অচিন্ত্য চয়ন লিখেছেন, “সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘না’, অমর একুশে বইমেলা তাহলে কোথায়?”

কবি ও সাংবাদিক মেহেদী হাসান শোয়েব লিখেছেন, “বইমেলা হওয়া না-হওয়াতেই কি খুব বেশিকিছু আসে যায়?”

আবৃত্তিশিল্পী ও লেখক সাফিয়া খন্দকার রেখা লিখেছেন, “হতাশ হওয়ার কিছু নেই, গত দুই বছর এই কাহিনি করতেছে, তারপর ঠিকই উদ্যানেই মেলা হয়। এবার যদি না হয়, তাহলে বুঝতে হবে এর অন্য ব্যাখ্যা রয়েছে...।”

কবি ও প্রকাশক কাদের বাবু লিখেছেন, “অমর একুশে বইমেলা আয়োজনের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ চাই, দিতে হবে।”

কবি সদ্য সমুজ্জ্বল লিখেছেন, “সব সময় চেয়েছি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অমর একুশে বইমেলা হোক।”

প্রবাসী কবি ও কথাসাহিত্যিক ফকির ইলিয়াস লিখেছেন, “বইমেলা তুরাগ নদীর তীরে নিয়ে যাওয়া হোক।”

ঔপন্যাসিক ফরিদুল ইসলাম নির্জন লিখেছেন, “সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা দেওয়ার জোর দাবি জানাই। আগের চেয়ে বড় পরিসরে আয়োজন দেখতে চাই।”

লেখক ও সাংবাদিক আরিফ মজুমদার লিখেছেন, “বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হবে আগামী শত বছর। একটু রসিকতা হতেই পারে।”

লেখক শামস সাঈদ লিখেছেন, “বইমেলা এবার গণভবনে করেন, সংসদ ভবনেও করতে পারেন। দক্ষিণ প্লাজায়।”

এদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা করতে চান বলে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম। তিনি বলেন, “সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অমর একুশে বইমেলা করা যাবে না, এমন সিদ্ধান্ত জানিয়েছে গণপূর্ত ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়। তারা বলেছে, একাডেমির চত্বরের ভেতরে মেলার আয়োজন করার কথা। তবে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা করতে চাই।”

এর আগে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, বিগত ২১ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণেই অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ আয়োজন করতে হবে। ৬ নভেম্বর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অধিশাখা-৩ থেকে এ চিঠি পাঠানো হয়।

১৯৭২ সালে ভাষার মাসে বাংলা একাডেমির চত্বরে চাটাই বিছিয়ে বই বিক্রি শুরু করেছিলেন মুক্তধারা প্রকাশনার প্রতিষ্ঠাতা চিত্তরঞ্জন সাহা। ১৯৮৪ সাল থেকে বাংলা একাডেমি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে অমর একুশে গ্রন্থমেলা নাম দিয়ে ধারাবাহিকভাবে মেলা পরিচালনা করছে। এরপর ২০২১ সাল থেকে মেলার প্রাতিষ্ঠানিক নামকরণ করা হয় ‘অমর একুশে বইমেলা’।

Link copied!