অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধনের দিন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাত থেকে ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার’ নিয়েছেন ৭ লেখক। প্রত্যেককে দেওয়া হয় ৩ লাখ টাকার চেক, সম্মাননাপত্র ও সম্মাননা স্মারক। তবে অনুষ্ঠানে পুরস্কৃতদের পেছনে দাঁড় করিয়ে ফটোসেশন করা নিয়ে শুরু হয় নানা সমালোচনা। এ বিষয়ে এবার মুখ খুলেছেন পুরস্কারপ্রাপ্তদের একজন, লেখক অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) এক অনুষ্ঠানে সলিমুল্লাহ খান বলেন, “বাংলা একাডেমির পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান নিয়ে অনেকে ট্রল করছে। আমাকে জিজ্ঞেস করছে, ‘ছাত্রদের সামনে বসিয়ে আপনারা পেছনে দাঁড়িয়েছিলেন কেন।’ আমি বলেছি, তারা ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে বসেছে। বাংলা একাডেমি যদি মানুষকে সম্মান প্রদর্শন করতে না জানে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করব নাকি? তাদের আদবকায়দা যদি না থাকে, আমরা কী করব?”
প্রবন্ধ/গদ্যে পুরস্কার পাওয়া এই লেখক বলেন, “লোকজন বলছে, ‘আপনি পুরস্কার নিলেন কেন?’ আরে…পুরস্কার নেওয়ার পরেই তো বেইজ্জতটা করছে।”
বাংলা একাডেমি এবং আয়োজকদের সমালোচনা করে সলিমুল্লাহ খান বলেন, “এখানেও দাসত্বের অবসান করতে হবে। দাসত্বের অবসান করতে হলে সবাইকে এক করতে হবে। সবাই যদি সমান না হই, তাহলে আমরা এক হব না। চব্বিশের আন্দোলনের মূল বৈশিষ্ট্য ছিল বৈষম্যবিরোধী, এটা ‘সাম্য’ কথাটারই একটি অনুবাদ।”
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তাদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি নাট্য গবেষক সৈয়দ জামিল আহমেদ, প্রাবন্ধিক সলিমুল্লাহ খানসহ ১০ জনকে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। পরে তালিকায় থাকা কারও কারও সম্পর্কে ‘কিছু অভিযোগ’ আসায় ২৫ জানুয়ারি পুরস্কার স্থগিত করা হয়। এরপর ২৯ জানুয়ারি তিনজনকে বাদ দিয়ে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কথাসাহিত্যে সেলিম মোরশেদ, মুক্তিযুদ্ধে মোহাম্মদ হান্নান এবং শিশুসাহিত্যে ফারুক নওয়াজকে বাদ দিয়ে পুরস্কারের জন্য ৭ জনকে মনোনীত করে বাংলা একাডেমির নির্বাহী পরিষদ। তবে স্থগিত হওয়ার পর কথাসাহিত্যে সেলিম মোরশেদ তা প্রত্যাখান করার কথা বলেছিলেন।
ফলে এবার ৭ জনের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। তারা হলেন, কবিতায় মাসুদ খান, নাটক ও নাট্যসাহিত্যে শুভাশিস সিনহা, প্রবন্ধ/গদ্যে সলিমুল্লাহ খান, অনুবাদে জিএইচ হাবীব, গবেষণায় মুহম্মদ শাহজাহান মিয়া, বিজ্ঞানে রেজাউর রহমান ও ফোকলোরে সৈয়দ জামিল আহমেদ।