বইমেলায় এসেছে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক আহমাদ মোস্তফা কামালের নতুন উপন্যাস ‘জলের অক্ষরে লেখা’। উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে পাঠক সমাবেশ। প্রচ্ছদ করেছেন আনিসুজ্জামান সোহেল।
উপন্যাসটি সম্পর্কে আহমাদ মোস্তফা কামাল তার ফেসবুকে লিখেছেন, উপন্যাসটি লিখতে শুরু করার ঘণ্টাখানেক আগেও আমি জানতাম না যে একটা নতুন উপন্যাস শুরু হতে যাচ্ছে। আমি তখন কাজ করছিলাম অন্য একটি অসমাপ্ত উপন্যাস নিয়ে। কিন্তু কোনোভাবেই ওটার কূলকিনারা করতে পারছিলাম না। উদ্বেগ, হতাশা, বিরক্তি আর ক্লান্তিতে বিধ্বস্ত হয়ে একটু বিশ্রাম নেওয়ার জন্য উঠে গিয়েছিলাম লেখার টেবিল থেকে। মনে হচ্ছিল, লেখকের জীবন এক অন্তহীন অকথ্য যন্ত্রণার জীবন, যা আমি নিজেই বেছে নিয়েছি...
ব্যালকনিতে গিয়ে দেখি পাশের বাসার কাঠবাদাম গাছের পাতাগুলো ঝরে পড়ার আগে রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে। আর তখনই মনে হলো মাথার ভেতরে কিছু পঙক্তি ঘোরাফেরা করছে। এইমাত্র ছেড়ে আসা উপন্যাসের সঙ্গে ওগুলোর কোনো সম্পর্ক নেই। এগুলো নতুন এবং ভিন্ন কিছু। হয়তো কোনো গল্প তৈরি হবে কিংবা হারিয়েই যাবে ফের, যেমনটি প্রায়ই হারায়। কিন্তু ওটা ডালপালা মেলতে লাগলো। মনে হলো, লিখে রাখি না কেন, যা হওয়ার হোক! লিখতে বসে দেখলাম, ওটা আমাকে ছেড়ে যাচ্ছে না। টানা এক মাস ওটা নিয়েই রইলাম। কিন্তু তাও শেষ হলো না। এরপর সাহিত্যপত্রিকা ‘কালি ও কলম’ থেকে অনুরোধ এলো একটা উপন্যাসের জন্য। বললাম, কোনো উপন্যাসই শেষ হয়নি, নির্দিষ্ট শব্দসংখ্যা মেনে উপন্যাস লিখতেও পারবো না। তারা তখন ধারাবাহিকভাবে প্রকাশের প্রস্তাব দিলেন। প্রায় দুবছর ধরে একুশ পর্বের উপন্যাসটি প্রকাশ করলেন তারা। সত্যি বলতে কি, প্রতি সংখ্যায় নতুন পর্ব দিতে হবে, এই তাগিদে উপন্যাসটি শেষ হলো। নইলে পারতাম না। কারণ গত দুবছর বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ভয়াবহ এবং অকল্পনীয় ব্যস্ততা এবং যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে।
এই দুবছরে অল্প কয়েকজন পাঠক তাদের পাঠপ্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ধারাবাহিক উপন্যাস পড়া কঠিন, আমি নিজেও পারি না। তবুও এর ইতিবাচক দিক হলো, নিয়মিত লিখতে হয়, নিজেকে ফাঁকি দেয়ার সুযোগ নেই।
এটি আমার নবম উপন্যাস। এখন আর সেই প্রথম যৌবনের উত্তেজনা নেই। আছে একা একা অনির্দিষ্টকাল ধরে গন্তব্যহীন পথচলা ...