আজ ২১ জুন কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯১ সালের এই দিনে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে তিনি মারা যান। সত্তরের দশকের অন্যতম প্রতিনিধি রুদ্র কবিতাপাঠকের কাছে পরিচিত তারুণ্য ও দ্রোহের প্রতীক হিসেবে। এ বছর তাকে একুশে পদক (মরণোত্তর) দেওয়া হয়।
এ উপলক্ষে কবির জন্মস্থান বাগেরহাটের মোংলার রুদ্র স্মৃতি সংসদ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
দিনটি স্মরণে রুদ্র স্মৃতি সংসদ, কাল শুক্রবার সকালে কবির গ্রামের বাড়ি মোংলার মিঠেখালিতে তাঁর কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। স্মরণসভা শেষে রুদ্রের কবিতা আবৃত্তি ও গান পরিবেশিত হবে।
সাম্যবাদ, মুক্তিযুদ্ধ, ঐতিহ্য চেতনা ও অসাম্প্রদায়িকবোধে উজ্জ্বল রুদ্রর কবিতা। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’ এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি তিনি উচ্চারণ করেছেন অবিনাশী স্বপ্ন ‘দিন আসবেই দিন সমতার’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান কবিকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক’-এ। একই সঙ্গে তার কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের প্রতি মগ্নতা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাঋদ্ধ পঙ্ক্তি ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’-এর পাশাপাশি উচ্চারণ করেছেন প্রতিবাদী জীবনবোধ থেকে উৎসারিত ‘ভুল মানুষের কাছে নতজানু নই’।
স্বল্পায়ু জীবনে রুদ্র সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং তুমুল জনপ্রিয় হওয়া ‘ভালো আছি ভালো থেকো’সহ ৫০টির বেশি গান রচনা ও তাতে সুরারোপ করেছেন।
মাত্র ৩৫ বছরের (১৯৫৬-১৯৯১) জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’সহ অর্ধ শতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। পরবর্তীকালে এ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। ‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দুইবার ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।