• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা না থাকলে আমাদের দেশে সাহিত্য শুকিয়ে যেত


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৪, ০৫:১৬ পিএম
বইমেলা না থাকলে আমাদের দেশে সাহিত্য শুকিয়ে যেত

এবার আপনার নতুন বই বেরিয়েছে—বেকারবিপ্লব। বইটি সম্পর্কে কিছু বলুন।

সালাহ উদ্দিন শুভ্র : এ উপন্যাসটা আমার মনে হয়েছে যে বাংলাদেশে অজস্র তরুণ-তরুণী বাম রাজনীতিতে যুক্ত হয়। কিন্তু তারা টিকতে পারে না। কেন পারে না? এ প্রশ্নের সন্ধান করেছি। আমি দেখেছি কত কষ্ট করে এসব তরুণ, অথচ শেষ পর্যন্ত তারা ব্যর্থ হয়। এর পেছনের কারণগুলো বিস্ময়কর। তবে ব্যর্থ হলেও বাম করা তরুণদের একটা মেনটাল শেপ তৈরি হয়। যা জাতীয় রাজনীতি বা সাংস্কৃতিক, সিভিল সোসাইটিতে ভূমিকা রাখে। এ বিষয়গুলোর উপস্থিতি আমাদের উপন্যাসে নাই। বেকারবিপ্লব নিয়ে বলতে গেলে এটুকুই।

আপনি দীর্ঘদিন ধরে উপন্যাস লিখছেন। মূলত ফিকশনধর্মী লেখালেখি আপনার। সায়েন্স ফিকশনও লিখেছেন। এ ক্ষেত্রে (সায়েন্স ফিকশন) বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত লেখকদের যে প্রবণতা, তা থেকে নিজেকে ভিন্ন করছেন কীভাবে?

সালাহ উদ্দিন শুভ্র : সায়েন্স ফিকশনে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত লেখক সেভাবে নাই। যারা সায়েন্স ফিকশন লেখেন, তারা মূলত অন্য বিষয়ের লেখক। যেমন আমি মূলত সাধারণ ধারার উপন্যাস লেখি। বিশেষায়িত সায়েন্স ফিকশন ধারায় মাত্র তিনটা বই করেছি। দুইটা আবার ছোটদের জন্য। সায়েন্স ফিকশন আমার ছোটবেলার ফ্যাসিনেশন। বড় হয়ে হুট করে আবার সেটা আমাকে ধরে বসেছে। তবে আমি যে সায়েন্স ফিকশন লিখছি, সেটা বলতে পারেন অ্যাক্টিভিজমের জায়গা থেকে। আমাদের দেশে প্রায় সব সায়েন্স ফিকশনই বিদেশি কাহিনী মেরে দেওয়া। একই ঘেরাটোপে আটকে আছে। কাহিনী-চরিত্রের ধরন-ধারণও একই। আমি সেখানে দেশজ প্রেক্ষাপট, দেশি চরিত্র, কাহিনী, আমাদেরই নদী-জঙ্গল নিয়ে সায়েন্স ফিকশন লিখেছি। আমি মনে করি এটা বাংলাদেশে নতুন সংযোজন।

আমাদের দেশে বর্তমান উপন্যাস চর্চা নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ জানতে চাই।

সালাহ উদ্দিন শুভ্র : শুধু বর্তমান সময়ে না। বাংলাদেশের উপন্যাস সেই কমলকুমার বা অমিয়ভূষণ মজুমদারদের পর থেকেই ভালো। এমনকি দেবেশ রায়ের চেয়ে ভালো লিখেছেন অনেকে। সত্তরের পর আশির দশক বা নব্বইয়েও আমাদের ভালো লেখক আছেন। কিন্তু দেশ পত্রিকার প্রতি আনুগত্য, কলকাতার দিকে ঝুঁকে থাকার যে একটা চর্চা, তার কারণে এখানে আমরা কনফিডেন্টলি নিজেদের ভালো বলতে পারছি না। আমার মনে হয় এটা ভেঙে দিতে হবে। এবং আমাদের পূর্ববঙ্গের যে ক্রাইসিস সেটা ইউনিক। আমাদের পক্ষেই সম্ভব সবচেয়ে ভালো উপন্যাস লেখা।

বইমেলা কি লেখক-পাঠককে কাছাকাছি আনতে পারছে? পাশাপাশি এ মেলা কি সৃজনশীল পাঠাভ্যাস তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারছে?  

সালাহ উদ্দিন শুভ্র : বইমেলা আমি মনে করি ঠিক আছে। এখানে বাংলা একাডেমি তাদের অবহেলা কমিয়ে সৃজনশীল যেটা বললেন, মানে কবিতা-উপন্যাসকে মেলায় গুরুত্ব দিয়ে, সেভাবে তাদের নীতিমালা, পরিকল্পনা সাজালে এ ধারার বই পাঠক কিনবেই। যেমন ধরেন এক্সপোজার দেওয়া লেখকদের। আখতারুজ্জামান ইলিয়াস বা শওকত আলী এমন লেখকদের ছবি টানানো, তাদের কিছু কথা সামনে নিয়ে আসা, বই, বইয়ের কভার প্রচার করা। মেলাকে কেন্দ্র করে পাঠকের পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার যথেষ্ট সুযোগ আছে।

বইমেলা কি জরুরি? কেন?

সালাহ উদ্দিন শুভ্র : বইমেলা না থাকলে আমাদের দেশে সাহিত্য শুকিয়ে যেত। কারণ এখানে বই পড়ার চর্চা নাই। আপনি গাইড বইয়ের মতো করে ইতিহাস লিখে দেন মানুষ প্রচুর কিনবে। কিন্তু উপন্যাস আর সেভাবে পড়তে চায় না। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে যাচ্ছি না এখন। তবে বইমেলা আছে বলে আমরা প্রাণে বেঁচে থাকি বাকি এগার মাস।

Link copied!