• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অনুবাদ সাহিত্য পুরস্কার পেলেন আলম খোরশেদ ও রওশন জামিল


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২১, ০৮:১৯ পিএম
অনুবাদ সাহিত্য পুরস্কার পেলেন আলম খোরশেদ ও রওশন জামিল

বাংলা ট্রান্সলেশন ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘অনুবাদ সাহিত্য পুরস্কার-২০২১’ পেলেন অনুবাদক আলম খোরশেদ ও রওশন জামিল। এসময় আজীবন সম্মাননা বিভাগে পুরস্কৃত হয়েছেন আলম খোরশেদ। একই সঙ্গে বর্ষসেরা অনূদিত বই বিভাগে পুরস্কৃত হয়েছেন রওশন জামিল তাঁর অনূদিত আলেক্সান্ডার দ্যুমার উপন্যাস ‘কালো টিউলিপ’র জন্য।

মঙ্গলবার (৩০শে নভেম্বর) জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বিকাল পাঁচটার সময় এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরস্কৃত অনুবাদকদের হাতে আজীবন সম্মাননার জন্য ১ লাখ ও বর্ষসেরা অনূদিত বইয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকার অর্থ সম্মানি তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও তাদের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও উত্তরীয় তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা ট্রান্সলেশন ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক অনুবাদক আনিসুজ জামান। প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক মাসরুর আরেফিন। সভাপতিত্ব করেন অনুবাদক অধ্যাপক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস। তিনি পুরস্কার নির্বাচন কমিটিরও সভাপতি ছিলেন।

স্বাগত বক্তব্যে অনুবাদক আনিসুজ জামান বলেন, “একটি দেশের সাহিত্য একই সঙ্গে সমৃদ্ধ ও আন্তর্জাতিক হয়ে ওঠে অনুবাদের মাধ্যমে। এমনকি জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ইতিহাস-দর্শনেও পৃথিবী সমৃদ্ধ হয়েছে অনুবাদের মধ্য দিয়ে। তাই, আমরা দেখতে পাই, অনুবাদকর্মকে (ট্রান্সলেশন ইন ও ট্রান্সলেশন আউট উভয় ক্ষেত্রেই) যে জাতি যত বেশি গুরুত্ব দিয়েছে সে জাতি তত বেশি অগ্রসর হয়েছে।”

আনিসুজ জামান আরো বলেন, “বাংলাদেশের অনুবাদকরা পর্যাপ্ত সামাজিক, সাহিত্যিক ও অর্থনৈতিক স্বীকৃতি পান না। দেশের অনুবাদকদের উৎসাহ প্রদান করতে বাংলা ট্রান্সলেশন ফাউন্ডেশন ‘বর্ষসেরা অনূদিত বই’ ও ‘অনুবাদক আজীবন সম্মাননা’ প্রতি বছর প্রদান করবে। প্রতি বছর প্রকাশিত অনূদিত গ্রন্থ থেকে একটি বইকে পুরস্কৃত করা হবে। এবং একজন অনুবাদককে দেশের অনুবাদ-সাহিত্যে তাঁর সামগ্রিক অবদানের জন্য আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হবে। পাশাপাশি একটি অনুবাদ পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হবে।”

পত্রিকা যুক্তস্বরের পাঠোন্মোচনে অনুবাদক-লেখক মুম রহমান বলেন, “বাংলাদেশে অনুবাদ সাহিত্য নিয়ে নিয়োমিত কোনো পত্রিকা ছিল না। এই পত্রিকাটি নিয়মিত হোক, এই কামনা করি। নবীন ও প্রবীণ অনুবাদকদের অনুবাদে সমৃদ্ধ একটি সংখ্যা প্রকাশিত হলো, এই ধারা অব্যহত থাকুক।” 

প্রধান আলোচক মাসরুর আরেফিন বলেন, “অনুবাদ সাহিত্য নিয়ে বাংলাদেশে প্রত্যাশা অনুযায়ী কোনো কাজ আমরা করতে পারিনি। এখনো অনেক ক্লাসিক সাহিত্য অনুবাদ হতে বাকি আছে। আমরা এই ফাউন্ডেশনের দিকে তাকিয়ে থাকব, সেই সঙ্গে আমি নিজেও সব ধরনের সহযোগিতা করব।”

অনুভূতি ব্যক্ত করতে এসে পুরস্কৃত অনুবাদক আলম খোরশেদ বলেন, “আশির দশক থেকে টানা কাজ করে যাচ্ছি, কখনো পুরস্কারের কথা ভাবিনি। বাংলাদেশে অনুবাদ করে পুরস্কার পাওয়ার বিষয়টিও কল্পনা করা যায় না। বাংলাদেশে অনুবাদ সাহিত্য যতটা সম্মানের কাজ হওয়া উচিত ছিল, ততটা এখনো হয়নি। অথচ আমাদের সাহিত্যের সমৃদ্ধ ও আন্তর্জাতিকীকরণ অনুবাদ সাহিত্য ছাড়া সম্ভবও না।”

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস বলেন, “আমরা বহুদিন থেকে এ রকম একটি প্লাটফর্ম প্রত্যাশা করে এসেছি। বাংলাদেশে অনুবাদ সাহিত্য নিয়ে মানুষের আগ্রহ থাকলেও উচ্ছ্বাস খুব কম। তবে এখন তরুণরা উঠে আসছেন, অনুবাদকদের যোগ্য সম্মান তাঁরা দিতে শিখছেন। আমরা এই প্লাটফর্মের মধ্য দিয়ে অনুবাদ সাহিত্যের সামগ্রিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারি।

অনুষ্ঠানে এসময় উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক সালেহা চৌধুরী, কবি-প্রাবন্ধিক রাজু আলাউদ্দিন, কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদারসহ আরো অনেকে। অনুষ্ঠানে অনুবাদ সাহিত্য পত্রিকা ‘যুক্তস্বর’-এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।  সেই সঙ্গে চর্যাপদের গান পরিবেশন করে ভাবনগর ফাউন্ডেশনের সাধুসঙ্গ।

সাহিত্য-সংস্কৃতি বিভাগের আরো খবর

Link copied!