চমৎকার দিন আজ,
আকাশে মেঘ নেই এতটুকু
শীতের পর বাতাস বইছে।
পাশের পার্কটায় দেখে এলাম
একপাল মেগপাইয়ের সভা বসেছে,
দূর থেকে দেখলাম ভিক্টোরীয়
বিল্ডিংয়ের চূড়ায় পরীটাকে!
আকাশের দিকে বাড়ানো এক হাত
অন্য হাত তার বাঁ দিকের স্তন ছুঁয়ে আছে,
পাশে হুট করে দাঁড়িয়ে গেল
ছানার জলের মত সবুজ ধোয়া
রঙের স্কুটার।
কালো টুপি পরা যুবক
মাথা নেড়ে বলল—হ্যালো,
চোখগুলো এতই চঞ্চল তার
যেন রাতের বেড়াল খুঁজতে এসেছে
দিনের আলোতে।
দূর বন্দরের মধ্যে ওঠে জাহাজের ভোঁ
মাথার ওপরে উড়োজাহাজের বিষণ্ন শব্দ,
হঠাৎ মনে পড়ল লাল পেড়ে
গরদের শাড়ি,
পৃথিবী আসলে মন্দ নয়
তোমরা কি বল!
প্রেমিক তোমার স্টিয়ারিং হুইল বাজ
অসহায় দুই হাত,
দাঁতে ঠোঁট চেপে বিরক্তি লুকাচ্ছো।
তোমার কপালে ঘাম
তোমার মুখ লাল
তোমার নিকেলের চশমায় কুয়াশা।
স্বপ্ন দেখলাম যেন
দুদণ্ড দাঁড়িয়ে
অসংখ্য দেয়ালের গায়ে
যেন অবিশ্রাম তুলি দিয়ে
তোমারই মুখ, নানা ভঙ্গির।
পর্যটন শহরে রাত ৯টা,
অচেনা রাস্তায় দাঁড়িয়ে
হিম কুয়াশায় আচ্ছন্ন
যেন বাতাসে বরফ আসছে
একটা ট্রাম স্টপে থেমে আছে
ট্রামের পেছনে বিজ্ঞাপন
লং লাস্টিং লুব্রিকেন্ট।
ওভারকোটের ভেতরের হাত মুঠো
বেঁধে চলছি
হাঁটছি শ্লথ গতিতে হাঁটছি
সামনের যেকোনো পাবে
ঢুকে যাব রহস্যময়।
খেয়ে নেব এক গ্লাস বিয়ার
গুনগুন করে গাইব
‘অভিযোগ করাটা তোমার সাজে না’।
ঐ অচেনা স্মৃতিগুলো
অচেনা মদের নাম যা
পাবের বিজ্ঞাপনে ঝোলানো
সি-ই-নু-জা-আ-ন-ও-ও
ঘরে ফিরবার আগে
হোটেলের বলরুমে ঢুকে
নেচে নেব দুচক্কর নাচ
হেঃ এ টুইস্ট টুইস্ট।
চেনা রাস্তাগুলো অচেনা
গুড উড মোড়ে দাঁড়িয়ে
চুমুক দিলুম এক্সপ্রেসোর কাপে,
ট্রাফিকের সবচেয়ে সুন্দর
ক্ষণস্থায়ী হলুদ বাতি ঝলসে
উঠলে স্ট্রিট বাসের গিয়ার
বদলানোর শব্দ হোলো
জ্বলে উঠল সবুজ।
আমি জেগে উঠলাম
রাতের ঘুম ভাঙা কবুতরের পাখার
শব্দে,
আমার সামনে ভিক্টোরিয়ার পরী
পেছনে অস্পষ্ট আইফেল টাওয়ার,
সামনে বহুদূর স্টাচু অব লিবার্টি,
বাঁয়ে ব্রহ্মপুত্রের ওপর দিয়ে
বয়ে আসছে গুদারা নৌকা,
মাঝির কণ্ঠে—
ওরে নীল দরিয়া আমায় দেরে দে ছাড়িয়া।
আমার অচেনা শহরের ফুটে
ওঠা ফেলে আসা চেনা শহরের
ছবি,
তবে তোমরা বলো সে
কি কেবলই ছবি শুধু পটে আঁকা?