প্রতিদিনের সব কাজের মধ্যে ঘুম হচ্ছে সবচেয়ে শান্তির। ভালো ঘুম যেন সব কাজের শক্তি জোগায়। ঘুম কম হলে কাজের স্পৃহা কমে যায়। শরীরও সঠিকভাবে সাড়া দেয় না। শুধু ঘুম হলেই হবে না। ঘুম হতে হবে সঠিক ভঙ্গিতে।
সঠিক ভঙ্গিতে না ঘুমালেও আপনার শরীর অকেজো হয়ে যেতে পারে। একেকজন একেক ভঙ্গিতে ঘুমান। কেউ চিত হয়ে, তো কেউ উপুড় হয়ে। কেউ আবার একপাশে কাত না হয়ে ঘুমাতেই পারেন না। ঘুমের ভঙ্গির কারণেই সকালে আপনার শরীর সাড়া দেয়। ঠিক ভঙ্গিতে ঘুম হলে শরীর-মন ফুরফুরে থাকে। নয়তো বেকায়দার ঘুমে ঘাড়ে কিংবা কোমরে ব্যথা হয়, হাত-পা অবশ হয়ে যায়, রগে টান লাগে, ঝিনঝিন হয় অথবা জয়েন্ট শক্ত হয়ে যায়, যা আপনাকে সারা দিন ভোগাবে। ভুল ভঙ্গিতে ঘুমের অভ্যাস পরিহার করে তাই সঠিক ভঙ্গি আয়ত্ত করুন।
সঠিক ভঙ্গিতে ঘুমের কায়দাগুলো নিয়ে থাকছে আজকের আয়োজন।
- কাঁধে, ঘাড়ে বা কোমরে ব্যথা থাকলে কখনোই চিত হয়ে ঘুমাবেন না। যেকোনো একদিকে কাত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করুন।
- ঘুমানোর সময় বালিশ ঘাড়ে রাখবেন। মাথায় ও ঘাড়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বালিশ ব্যবহার করবেন। শুধু মাথায় বালিশ দিয়ে ঘুমাবেন না। এতে ঘাড়ে ও কাঁধে ব্যথা বাড়বে। কারণ, এই শুধু মাথায় বালিশ থাকলে ঘাড়ের মাংসপেশি ও লিগামেন্ট টান লাগে। তাই ঘাড়ের নিচে বালিশ রাখুন।
- চিত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস না করাই ভালো। তবু যদি চিত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস থাকে তাহলে পায়ের নিচে অবশ্যই বালিশ ব্যবহার করবেন। শরীরের ব্যালান্স ঠিক থাকবে।
- ভুল ভঙ্গিতে শোয়ার কারণে অনেকে ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে। এ ক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতি জানুন। আপনি যদি হালকা নাক ডাকেন তাহলে চিত হয়ে ঘুমান। তবে নাক ডাকার শব্দ বেশি হলে একপাশে কাত হয়ে ঘুমাবেন।
- উপুড় হয়ে ভুলেও ঘুমাবেন না। পেটে চাপ পড়লে শ্বাসপ্রশ্বাসের পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
- অ্যাসিডিটির সমস্যা, বুকে জ্বালাভাবের প্রবণতা থাকলে চিত হয়ে ঘুমাবেন না। সব সময় বাঁ দিকে কাত হয়ে ঘুমাবেন। ডান দিকেও কাত হবেন না। এতে অ্যাসিড আরও বেশি নিঃসরণ হয়।
- সঠিক বিছানায় সঠিক ভঙ্গিতে ঘুমাতে হবে। শক্ত বিছানা হলেই যে ব্যথা কমবে, এটা ঠিক নয়। অবশ্যই বিছানা আরামদায়ক হতে হবে। খুব নরম বা খুব শক্ত বিছানা ঘুমের উপযোগী নয়।
- গর্ভাবস্থায় নারীদের জন্য ঘুমের সঠিক ভঙ্গি অত্যন্ত জরুরি। অনেকেই এই বিষয়ে সতর্ক থাকেন না। গর্ভাবস্থায় ভালো ভঙ্গি হলো বাঁ দিকে কাত হয়ে ঘুমানো। এতে মায়ের শরীরে রক্ত চলাচল সহজ হয়। যা গর্ভে থাকা বাচ্চা ও মা উভয়ের জন্যই ভালো।
- গর্ভাবস্থায় ঘুমানোর সময় দুই হাঁটুর নিচেও বালিশ দিতে হয়। এছাড়া পেটের নিচেও বালিশ রাখতে হবে। এতে মেরুদণ্ডের অ্যালাইনমেন্ট ঠিক থাকে। ঘুম ভালো হয়।