নারীর সাজের অন্যতম উপকরণ গয়না। এই গয়নারও বৈচিত্র্যের শেষ নেই। যুগের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে গয়নার ধরন। বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করা হয় গয়না ব্যবহারে। দামি রত্ন থেকে শুরু করে স্বর্ণ, রুপা, কাঠ, মাটিসহ অনেক উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয় গয়না। তবে এসবের মূল্য ছাপিয়ে গেছে মায়ের দুধ থেকে তৈরি গয়নার।
একজন সন্তানের কাছে মায়ের মূল্য অপরিসীম। যার ঋণ পৃথিবীর কোনো কিছু দিয়েই শোধ করা যায় না। এই ভাবনাকেই কাজে লাগিয়েছেন সাফিয়া নামের এক নারী। সাফিয়া ও তার স্বামী অ্যাডম রিয়াধ তৈরি করছেন এক বিশেষ ধরনের গয়না, যা তৈরি হচ্ছে মায়ের বুকের দুধ থেকে।
২০১৯ সালে এই দম্পতি বুকের দুধ থেকে গয়না তৈরির একটি সংস্থা গড়েন। এরই মধ্যে সেই সংস্থা এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছে যে তার মুনাফা ছাড়াতে চলেছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা।
এই বিরল গয়না তৈরির কথা তার মাথায় আসে ২০১৯ সালে। তখন দ্য মিরর ম্যাগাজিনে মায়ের দুধ সম্পর্কে একটি আর্টিকেল পড়েছিলেন। তিন সন্তানের মা সোফিয়ার তখন সন্তানদের কাছে মায়ের দুধ কতখানি আবেগের, তা অনুভব করেন।
সোফিয়া বলেন, “মায়ের দুধ সন্তানের সঙ্গে এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের কথা মনে করিয়ে দেয়, তাই স্তন্যদানকে স্মারক হিসেবে রেখে দিতে চান অনেকেই। সন্তানধারণ থেকে সন্তান বড় হয়ে ওঠার মাঝে এই স্তন্যদানের সময়টুকুকেও স্মৃতিতে ধরে রাখতে চান কেউ কেউ। এই গয়না কার্যত সেই সব ইচ্ছেকেই মর্যাদা দেওয়ার একটি প্রয়াস।“
এই গয়না তৈরির সময় মায়ের বুকের দুধ সংগ্রহের পর, প্রথমে ডিহাইড্রেশন প্রক্রিয়ায় জলীয় উপাদান কমিয়ে ফেলা হয়। তারপর তাতে মিশ্রিত করা হয় উচ্চমানের এক বিশেষ ধরনের রজনের সঙ্গে।
এই রজনের বিশেষত্ব হলো, দীর্ঘ সময় পরও এই রজনের রং হলদে হয়ে যায় না। এরপর এই মিশ্রণের ফলে তৈরি হওয়া পদার্থটিকে দেওয়া হয় পছন্দের আকৃতি। একটি ছোট্ট পাথর তৈরি করতে কমপক্ষে ৩০ মিলি দুধের প্রয়োজন হয়।
বুকের দুধের গয়নার মধ্যে রয়েছে নেকলেস, কানের দুল এবং আংটি। যখন প্রথম তারা এই ধরনের কাজ করার কথা ভাবেন তখন কিন্তু তারা মোটেও নিশ্চিত ছিলেন না ভবিষ্যৎ নিয়ে। কিন্তু এরই মধ্যেই চার হাজারেরও বেশি মানুষ কিনেছেন এই গয়না, তাই এখন তারা বেশ আশাবাদী এই ধরনের গয়নার বাজার নিয়ে।
সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস