• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চায়ের নানান রকমফের


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২১, ১১:২৮ এএম
চায়ের নানান রকমফের

অবসাদ-ক্লান্তি দূর করতে এককাপ চা যেন ওষুধের মতো কাজ করে অমাদের শরীরে। তাছাড়া অভ্যাসের জন্যই আমরা নিয়মিত চা পান করে থাকি। তাই দৈনন্দিন জীবনে চা আমাদের নিত্যসঙ্গী। তবে আগে চা বলতে শুধু সাধারণ চাপাতাকে বোঝাতো। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের চা পাওয়া যায়। নানা স্বাদের এই চা যেমন আমাদের নানা স্বাদ দেয়, তেমনি এই চায়ের মধ্যেও আছে নানা পুষ্টিগুণ।

চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন চায়ে কোন পুষ্টিগুণ আছে এবং তা কীভাবে বানাবেন—

লেবু চা

লেবু চা ওজন কমাতে অসাধারণ কার্যকরী। কালো চা বা লিকার চায়ের তুলনায় পুষ্টিগুণে এটি বেশি উপকারী। লেবু চাপানে সতেজ করে মেজাজ। সকালে হোক বা সন্ধ্যায়, লেবু চা আপনাকে ক্লান্তি দূর করে একেবারে সতেজ করে তুলবে।

লেবু চায়ের রেসিপিতে সাধারণ লিকার চায়ের সঙ্গে পরিমাণমতো লেবুর রস মিলিয়ে দিলেই হবে।

মালটা চা

মালটা চা স্বাদে অনন্য। পাশাপাশি ভিটামিন সি-এর পরিবাহক। মালটা চায়ের জনপ্রিয়তা এখন বেশ। মানসিক উদ্বেগ কাটাতেও এই চা বেশ উপকারী।

মালটা চা বানাতে হলে আপনাকে সাধারণ লিকার বা রংটা বানানোর সময় কেবল পরিমাণমতো মালটার রস মিশিয়ে দিতে হবে।

আদা চা

সাধারণ সর্দি, মাথাব্যথা, গলা ব্যথায় আদা চায়ের উপকারিতা আমরা প্রায় সবাই জানি। গরম এক কাপ চা জাদুর মতো মাথা ব্যথা সারাতে সাহায্য করে।

এর রেসিপিতে আপনাকে পানি গরম করার সময় আদা টুকরা করে দিয়ে কিছুক্ষণ জ্বাল দিতে হবে। এরপর চাপাতা ও চিনি দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। এছাড়া চা বানিয়ে তাতেও আদার কিছুটা রস মিশিয়ে চাপান করা যায়।

ব্ল্যাক টি

সাধারণ চাপাতা থেকে এটি তৈরি করা হয়। নাম কালো চা হলেও এটির রঙ হয় লাল। লাল চা আর কালো চায়ের মধ্যে পার্থক্য এতটুকুই লাল চা স্বাদে কিছুটা ধোঁয়াটে গন্ধযুক্ত হয়ে থাকে।

এর রেসিপিতে আপনাকে পানি গরম করার সময় পরিমাণ মতো  চাপাতা ও চিনি দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। এছাড়া চায়ে ভিন্ন স্বাদ আনতে এবং সুস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে মেশাতে পারেন মধু।

গ্রিন টি

এটিও বেশ জনপ্রিয়। বাজারে গ্রিন টি অত্যন্ত সহজলভ্য। গ্রিন টি আপনার ত্বক পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এটি সুন্দর স্বাস্থ্য গঠনেও সাহায্য করে। ওজন কমানোর জন্যই মূলত এই চায়ের প্রচলন বেশি।

গ্রিন টি বানাতে কোনো কসরত করতে হয় না। কেবল পানি ভালো করে ফুটিয়ে টিব্যাগ দিয়ে দিন। হয়ে যাবে আপনার চা।

তুলসি চা

অসাধারণ উপকারী এই তুলসি চা সর্দিজনিত মাথা ব্যাথা, কাশি, সর্দি জ্বর ও ঠান্ডা লাগা দূর করে। এটি দুশ্চিন্তা থেকে রক্ষা পেতেও সাহায্য করে।

তুলসি চা বানাতে ২ থেকে ৩ কাপ পানিতে ৫/৬ টি তুলসি পাতা ফুটতে দিন। পানি ফুটে ১ কাপ পরিমাণ হয়ে এলে তা নামিয়ে গরম গরম পান করুন, যন্ত্রণার উপশম হবে। এটি অ্যাসিডিটি নিরাময়ে অনেক জনপ্রিয়। তুলসি চা প্যাকেটে বাজারে কিনতেও পাওয়া যায়।

পুদিনা চা

পুদিনা চা পেটের বাড়তি মেদ কমাতে সাহায্য করে। পুদিনা চা বানাতে তাজা অথবা শুকনো দু’রকম পাতাই ব্যবহার করা যায়।

পুদিনা চা বানাতে ২ কাপ পানি, দেড় কাপ তাজা পাতা অথবা ১ চা চামচ শুকনো পাতা, স্বাদের জন্য চিনি, মধু ও লেবু দেওয়া যেতে পারে। পানি ফুটিয়ে পান করার ২-৩ মিনিট আগে গরম পানিতে পাতা দিয়ে রেখে দিতে হবে নির্যাস বের হওয়ার জন্য।

জবাফুলের চা

জবা ফুলের স্বাস্থ্য উপকারের কথা আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন বহুকাল আগে থেকেই। আধুনিক গবেষণাতেও দেখা গেছে রক্তজবার এক্সট্রাক্ট নিয়মিত পান করলে কমবে খারাপ কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারিড। রক্তচাপ কমাতেও এটি কার্যকর।

তিন থেকে চারটি জবা ফুল পরিষ্কার করে পানিতে সেদ্ধ করুন। পানি অর্ধেক না হওয়া পর্যন্ত ফোটাতে থাকুন। এরপর পানিতে মধু ও লেবুর রস যোগ করলেই হয়ে গেল জবাফুলের চা।

অপরাজিতা চা

অপরাজিতা চায়ের ভেষজ গুণ অনেক বেশি। এই চা রোগপ্রতিরোধ বৃদ্ধি করার পাশাপাশি ঠান্ডাজনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য কর। সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে সকালের শুরুটা এককাপ অপরাজিতার চা দিয়ে করা ভালো। অ্যান্টি অক্সিডেন্টের গুণে ভরপুর অপরাজিতার চা শরীরে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়িয়ে তোলে।

অপরাজিতা ফুলগুলো প্রথমে শুকিয়ে একটি বোতলে রেখে দিন। তারপর চা বানানোর মতো একটা কাপে ৬টা শুকনো ফুল দিন। তার মধ্যে ফুটন্ত গরম জল ঢালুন একটু পরে দেখবেন ফুলগুলো সাদা হয়ে গেছে। আর জল কি সুন্দর নীল হয়েছে। এখন পরিমাণ মতো চিনি মেশান। চায়ের সাধ একটু বাড়াতে চাইলে সাথে কিছু মসলা যোগ করুন যেমন— দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচি, আদা, লেবু ব্যবহার করতে পারেন। অ্যান্টি অকসিডেন্টে ভরপুর দারুন এই চা পানীয়।

তেঁতুলে চা

তেঁতুলে টারটারিক এসিড থাকায় খাবার হজমে সহায়তা করে। পেটের বায়ু, হাত-পা জ্বালায় তেঁতুলের শরবত খুব উপকারী। রক্তে কোলস্টেরল কমানোর কাজে আধুনিককালে তেঁতুল ব্যবহার হচ্ছে। জ্বরে ভোগা রোগীর জ্বর কমানোর জন্য এ ফল ব্যবহৃত হয়।

তেঁতুল অল্প পানি দিয়ে হাত দিয়ে এর মাড় বের করে নিন। চুলায় ২ কাপ পানি দিন। ১ কাপ এর চেয়ে একটু বেশি পানি থাকতে তেঁতুলের মাড় ঢেলে দিন। ১ মিনিট পর চিনি, কাঁচামরিচ, বিট লবণ স্বাদমতো দিন। ভালোভাবে নাড়া দিন। ১ মিনিট জ্বাল দিন। চাপাতা দিয়ে সাথে সাথে নামিয়ে নিন তেঁতুল চা।

Link copied!