চুলের যত্নে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট সবচেয়ে জনপ্রিয়। ধুলো-ময়লা, কেমিক্যালের কারণে চুল কেরাটিন হারিয়ে ফেলে। এতে চুলের উজ্জ্বলতা কমে যায়। চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চুলের সৌন্দর্য ফেরাতে নারীরা পার্লারের দ্বারস্থ হয়। কেরাটিন থেরাপিও নেয়।
চুলের মূল উপাদানই কেরাটিন। চুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন থাকলে ঝলমলে ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল হয়। আর প্রোটিনের ঘনত্ব কম থাকলে চুল আর্দ্রতা হারায়। সেই সঙ্গে চুল ভেঙে যায়, ঝরে যায়, এবং স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারায়।
কেরাটিন ট্রিটমেন্ট কী এবং কীভাবে কাজ করে তা আগে জেনে নিন। এই ট্রিটমেন্টে ফরমালডিহাইড নামক একধরনের কেমিক্যালের মাধ্যমে চুলে কেরাটিন ঢোকানো হয়। প্রথমে এই কেমিক্যালকে ব্লো-ড্রাই করে চুলে লাগানো হয়। এরপরে ফ্ল্যাট আয়রন হিটার দিয়ে চুলে হিট দেওয়া হয়। ব্লো-ড্রাইয়ের ফলে চুলের কিউটিকল খুলে যায় এবং ফরমালডিহাইড চুলের ভেতরে ঢুকতে পারে। আর উচ্চ তাপমাত্রার হিট দিয়ে সিল করে দেওয়া হয়, যাতে চুল কেরাটিন শুষে নিতে পারে। হিটের কারণে চুলে কেরাটিন দ্রুত ও গভীরে প্রবেশ করে এবং চুলকে স্মুদ বানায়। কিউটিকল বন্ধ হয়ে যায়।
কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করালে চুল ৩ মাস থেকে ৬ মাস পর্যন্ত ভালো থাকে। প্রফেশনাল কেরাটিন ট্রিটমেন্ট না করালে হিতের বিপরীত হতে পারে। মানে চুলের আরও ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু কেরাটিন থেরাপি অনেকটাই ব্যয়বহুল। তাই নিয়মিত পার্লারে গিয়ে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করানো সম্ভব হয় না। তাই ঘরে বসেই কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করুন। ঘরোয়াভাবে কীভাবে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করবেন তা বিস্তারিত থাকছে আজকের আয়োজনে।
- সাদা চালের ভাত – ৩ টেবিল চামচ
- কোকোনাট মিল্ক – ৬ টেবিল চামচ। বাজারের কোকোনাট মিল্কের বদলে ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন। নারিকেল কুচে নিন। কুচানো নারিকেল নিন ৩ টেবিল চামচ, সাথে ৬ টেবিল চামচ পানি। দুটো একসাথে গ্রাইন্ডারে ভালোভাবে গ্রাইন্ড করে নিন। এরপরে ছাঁকনিতে মিশ্রণটা ছেঁকে নিলে সাদা তরল যেটা পাবেন সেটাই কোকোনাট মিল্ক।
- ক্যাস্টর অয়েল, অলিভ অয়েল, আমন্ড অয়েল, কোকোনাট অয়েল যে কোনো একটি তেল ২ টেবিল চামচ নিন। এটি দিয়ে কেরাটিন ক্রিম বানাতে পারেন। কেরাটিন ক্রিমের জন্য অলিভ অয়েল ভালো। নারিকেল তেল বা আমন্ড অয়েলও ব্যবহার করতে পারবেন। চুল বেশি ড্রাই হলে তেল দুই চামচ বাড়িয়ে নিন।
কেরাটিন মাস্ক যেভাবে ব্যবহার করবেন_
ভাত এবং কোকোনাট মিল্ক প্রথমে ব্লেন্ডার করে নিন। চুল অনুযায়ী উপাদানের পরিমাণ কম-বেশি করতে পারেন। তবে কোকোনাট মিল্ক চালের দ্বিগুণ পরিমাণের নিতে হবে। ভালোভাবে ব্লেন্ডার করুন। মসৃণ ক্রিমের মতো হতে হবে মিশ্রণটি। এরসঙ্গে প্রয়োজনমতো অলিভ অয়েল বা অন্য যেকোনো তেল মিশিয়ে নিন।
ক্রিম বানানো শেষ হলে তা চুলে লাগাতে হবে। অল্প করে চুল নিয়ে তাতে পুরো ক্রিম লাগিয়ে নিন। একবারে অনেকটা করে লাগাবেন না। সামান্য পরিমাণে নিয়ে প্রতি গোছায় লাগিয়ে নিবেন। সব চুলে সমানভাবে ক্রিম লাগিয়ে নিন। এরপর চুল খোলা রাখুন।
চুল বড় হলে শুধু হেয়ারব্যান্ড দিয়ে একটা পনিটেইল করে রাখুন। কোনোভাবেই চুল পেঁচিয়ে বাঁধবেন না। ২০ থেকে ৩০ মিনিট রাখতে হবে। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। দেখবেন চুলের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে।