গাছের কোটরে পাখির বাসা হবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু গাছ জেলের কাজ করে এমনটা শুনেছেন কখনও? কিন্তু সেটাই হত। গাছের ভেতর জেলখানা। এই জেলখানার সন্ধ্যান পাওয়া গেছে অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানকার অধিবাসীরা কারাগার হিসেবে ব্যবহার করতো বাওবাবের প্রকান্ড খোঁড়ল।
বাওবার একটি গাছ যেটি বাঁচত হাজার হাজার বছর। এই গাছ এতই প্রকান্ড যে এর ভেতর মাদাগাস্কারের আদিবাসীরা একসময় বসবাস করতো। আর অস্ট্রেলিয়ার অধিবাসীরা রাখতো বন্দী। একেকটি খোঁড়লে বন্দী ধরত ২০-২৫ জন। এবার ভাবেন কেমন হবে সেই গাছ! এজন্য এদের নাম বাওবাব প্রিজন ট্রিও বলা হয়। এখন অবশ্য বন্দী রাখা হয় না বরং এটি এখন পর্যটন স্থান।
এই পর্যটন স্থানে যেতে হলে আপনাদের যেতে হবে অস্ট্রেলিয়ার ইউন্ডহ্যাম অঞ্চলে। বাওবাব গাছ Adansonia গণের উদ্ভিদ, জন্মে মরুভূমিতে। এই গাছের ডিএনএ নিয়ে গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, ২ কোটি ১০ লাখ বছর আগে আফ্রিকার মাদাগাস্কারে এই গাছের উৎপত্তি হয়েছিল। পরে এই গাছের বীজ সমুদ্রের ঢেউয়ে ভেসে অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে ও বিভিন্ন প্রজাতির সৃষ্টি হয়। তবে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কয়েকটি অঞ্চলেও এর দেখা পাওয়া যায়। বিশেষ করে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের সাভানুর নামক জায়গায় এমন তিনটি গাছের দেখা মেলে।
সবচেয়ে বড় গাছটি আছে দক্ষিণ আফ্রিকার লিনপোপো প্রদেশের একটি খামারে, উচ্চতা ৪৭ মিটার আর বেড় ২২ মিটার। এর নাম সানল্যান্ড বিগ বাওবাব। যার বয়স ৬,০০০ বছর। এই গাছের মালিক গাছের ভেতর একটা বার খুলে বসেছেন। এমনকি এটি একটি দর্শনীয় স্থানও। এখানে গিয়ে গাছটি দেখতে হলে গুণতে হবে টাকা। আর গাছের খোড়লে বসে খেতে পারবেন পছন্দের পানীয়।
বাওবাব গাছ আরও আপনাকে অবাক করবে তার পানি ধারণ ক্ষমতা। এরা কান্ডের ভেতরে খাদ্য এবং পানি সঞ্চয় করে রাখে। খাদ্য-পানি সঞ্চিত হতে হতে কান্ডটি ব্যারেলের মতো মোটা হয়ে যায়। কোনো কোনো গাছ তার কান্ডে ১,২০,০০০ লিটার পানি ধরে রাখতে পারে। তবে এরা মরুভূমির গাছ, জলাবদ্ধ জায়গায় এরা বাচেঁ না।