বর্তমান সময়ে ফ্যাশনদুনিয়া মাতিয়ে তুলেছে ক্রকস জুতো। তরুণ থেকে বয়স্ক সবার পায়েই শোভা পাচ্ছে আরামদায়ক এই জুতো। ফ্যাশনজগতের এই স্টাইলটি একেবারেই নতুন। স্লিপার আর জুতার মাঝামাঝি কম্বিনেশনে তৈরি হয়েছে এটি। যা নজর কেড়েছে সব বয়সী মানুষের। বাজারে আসার কিছুদিনের মধ্যেই বাজিমাত করেছে ক্রকস।
একুশ শতকে এসে স্বাচ্ছন্দ্য আর আরামকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন ফ্যাশনসচেতনরা। পোশাক যেমনই হোক জুতো হতে হবে আরামদায়ক। যেকোনো স্টাইলের সঙ্গেই যেন মানিয়ে যায় এমন একটি জুতো। যার সব বৈশিষ্ট্যই রয়েছে ক্রকসের মধ্যে। স্টাইলিশ একটি জুতা ক্রকস। যার আরাম ও বহুমুখিতার কারণে এখন জনপ্রিয় হয়েছে সারা বিশ্বে।
ফ্যাশনদুনিয়ায় ক্রকসের আবির্ভাব বেশি দিনের নয়। আরামদায়ক, মজবুত জুতোর চাহিদা মাথায় রেখেই এটি তৈরি হয়েছে। জানা যায়, ২০০২ সালে মার্কিন কোম্পারি ক্রকস ইনকরপোরেট প্রথম ক্রকস জুতো বাজারে আসে। মাত্র ২০০ জোড়া জুতা তৈরি করা হয় ওই সময়। সেই সংগ্রহের নাম ছিল ‘দ্য বিচ’। ফ্লোরিডার ফোর্ট লডারডেলের একটি বোট শোতে উপস্থাপন করা হয় সেই জুতোগুলো। সেখানেই বিক্রি হয়ে যায় সব জুতো।
এরপর ২০০৫ সালে তারা রিব্র্যান্ডিং করে। সে বছরই তাদের লোগো নিবন্ধন করা হয় এবং তারা নতুন প্রচারণা শুরু করে। এর শিরোনাম ছিল ‘দ্য আগলি ইজ বিউটিফুল’।
ডেনমার্কের জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের একটি ডিজাইন থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই এই জুতা তৈরি করা হয় বলে জানায় প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তা পাওয়া এই জুতো তৈরি হয় ইভা ফোম থেকে। যা খুবই হালকা হয় এবং জলপ্রতিরোধী। যদিও রাবার ও প্লাস্টিক দিয়েও এই জুতো তৈরি হয়। এর স্বাচ্ছন্দ্য ও বহুমুখিতার কারণে অল্প সময়েই জনপ্রিয়তা পায়। ধীরে ধীরে এই জুতোর ডিজাইনেও নতুনত্ব আসে।
বর্তমান সময়ে ক্রকস ব্র্যান্ডের বিভিন্ন স্টাইলের জুতো বাজারে পাওয়া যায়। স্টাইলিশ ডিজাইন এবং এর কার্যকারিতার জন্য সববয়সীদের নজর কাড়ে। মার্কিন ব্র্যান্ডের পর বর্তমানে অনেক জনপ্রিয় ব্র্যান্ড এই জুতা নিয়ে কাজ করছে। তাই দেশিয় বাজারেও এর চাহিদা এখন তুঙ্গে।
ক্রকসের বহুমাত্রিক ব্যবহারের কারণে তরুণ প্রজন্মরাও একে স্বাচ্ছন্দে গ্রহণ করেছে। বড়রাও বাদ যাননি। বরং নিয়মিত ব্যবহারের জন্য এখন প্রথম পছন্দই থাকছে ক্রকস জুতো।
বিশেষজ্ঞরা জানান, পায়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ক্রকস জুতো আরামদায়ক। এই জুতা শক্ত কোনো উপকরণে তৈরি হয় না। তাই সারাদিন ব্যবহারেও অস্বস্তিবোধ হবে না।
সাধারণ ক্রসলাইট ফোম, ইভা ফোম, রাবারের মতো উপাদানে ক্রকস জুতো তৈরি হয়। যা সহজেই পরিষ্কারযোগ্য। বাতাসেই এই জুতো শুকিয়ে যায়। সাবান আর পানি ব্যবহার করেই এটি নিয়মিত পরিষ্কার করা যায়। ডিটারজেন্ট দিয়েও পরিষ্কার করা যাবে। সামান্য কাদা বা ময়লা লাগলে তা কাপড় দিয়ে মুছলেই উঠে যাবে। তবে সাদা ক্রকসের জন্য বেকিং সোডা ও ভিনেগার ব্যবহার করা যেতে পারে। সফট ব্রাশ দিয়ে এর আলগা ময়লা তুলে ফেলা যাবে।
ক্রকস জুতোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এটি ইউনিসেক্স। নারী-পুরুষ উভয়ের কথা মাথায় রেখেই এর ডিজাইন তৈরি করা হয়েছে। ওয়েস্টার্ন কিংবা ট্র্যাডিশনাল যেকোনো পোশাকের সঙ্গেই বেশ মানিয়ে যায়।