বর্তমান সময়ে প্রায়ই আত্মহত্যার খবর পাওয়া যায়। তরুণ থেকে মধ্যবয়সীরাই এই পদক্ষেপ বেশি নিচ্ছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। কারণ এসব বয়সী মানুষের মধ্যেই বিভিন্ন মানসিক, সামাজিক কিংবা ব্যক্তিগত সমস্যা ঘিরে থাকে। যা থেকে নিজেকে বাঁচাতে আত্মহুতির পথ বেছে নেয়। তাদের ধারণা, আত্মহত্যা করলেই হয়তো জীবনের সব সমস্যার অবসান হয়ে যাবে। কিন্তু আত্মহত্যা করা যে মহাপাপ তা কারো অজানা নয়। তবে কেন এটি মহাপাপ, জানেন কি?
পবিত্র ইসলাম ধর্মে আত্মহত্যাকে মারাত্মক অপরাধ, বড় গুনাহ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা আত্মহত্যা করার বিষয়ে কঠোরভাবে নিষেধ করে বলেছেন, ‘তোমরা নিজেরা নিজদেরকে হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ব্যাপারে পরম দয়ালু। (সুরা নিসা: ২৯)’
আত্মহত্যা যেকোনো কবিরা গুনাহ বা বড় পাপের চেয়েও বেশি ভয়াবহ। কারণ আল্লাহর ওপর ভরসাহীনতা এবং আল্লাহর রহমত থেকে নৈরাশ্য প্রকাশ পায় আত্মহত্যার মাধ্যমে। এই পাপ থেকে ফিরে আসার এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার কোনো সুযোগ থাকে না। তাই এটি মহাপাপ।
বিভিন্ন হাদিসে আত্মহত্যাকারীর কঠোর শাস্তির কথা বর্ণিত হয়েছে। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যাক্তি কোনো ধারাল অস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করবে, সে অস্ত্র তার হাতে থাকবে, জাহান্নামের মধ্যে সে অস্ত্র দিয়ে সে তার পেটে আঘাত করতে থাকবে, এভাবে সেখানে সে চিরকাল অবস্থান করবে। আর যে ব্যক্তি বিষপানে আত্নহত্যা করবে, সে জাহান্নামের আগুনের মধ্যে অবস্থান করে ওই বিষ পান করতে থাকবে, এভাবে সেখানে সে চিরকাল অবস্থান করবে। আর যে ব্যাক্তি নিজেকে পাহাড় থেকে নিক্ষেপ করে আত্নহত্যা করবে, সে ব্যক্তি সব সময় পাহাড় থেকে নিচে গড়িয়ে জাহান্নামের আগুনে পতিত হতে থাকবে, এভাবে সে ব্যাক্তি সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। (সহিহ মুসলিম: ১০৯)’
আত্মহত্যার বিষয়ে হাসান বসরি (রহ.)ও বলেছেন। তিনি বলেন, জুনদাব (রা.) এ মসজিদে আমাদের একটি হাদিস শুনিয়েছেন, আর তা আমরা ভুলে যাইনি এবং আমরা এ আশঙ্কাও করিনা যে জুনদাব (রা.) নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নামে মিথ্যা বলেছেন। তিনি বলেছেন, এক ব্যক্তির শরীরে জখম ছিল, সে আত্মহত্যা করল। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা বললেন, আমার বান্দা তার প্রাণ নিয়ে আমার সাথে তাড়াহুড়া করেছে। আমি তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিলাম। (সহিহ বুখারি: ১৩৬৪)’