মায়ের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্কের গভীরতা এক অন্যবদ্য বিষয়। পৃথিবীর আর কেউ মায়ের মতো করে সন্তানকে ভালোবাসে না। মায়ের ভালোবাসার কোনো তুলনা হয় না। তাই তো বড় হয়েও একটু ব্যথা পেলে অবচেতনভাবে মুখ থেকে বেরিয়ে আসে ‘মা’। অনেক সময় বাবার চেয়েও মায়েরা সন্তানকে অনেক বেশি ভালোবাসেন বলেই প্রচলিত।
তবে মা-সন্তানের এই অকৃত্রিম ভালোবাসার পেছনে একটি বৈজ্ঞানিক কারণ অনেক আগেই বের করেছেন গবেষকেরা। বিশেষ এই বন্ধনের জন্য রয়েছে একটি বিশেষ হরমোনের প্রভাব।
একাডেমিক জার্নাল আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্সের তথ্যানুযায়ী, অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসরণের ফলে মা তাঁর সন্তানকে ভালোবাসেন।
ইসরায়েলের বার-ইলান ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় এমনটিই বলা হয়েছে। আর এটা করেছেন রুথ ফেল্ডম্যান। এতে বলা হয়েছে, অক্সিটোসিন হরমোনের কারণেই মা ও সন্তানের মধ্যে সম্পর্কের গভীরতা বেশি হয়ে থাকে। আর এ জন্যই মায়েরা অন্য যে-কারও চেয়ে সন্তানকে বেশি ভালোবাসেন।
গবেষণায় আরও জানানো হয়, যখন একজন মা তার সন্তানকে স্পর্শ করেন বা কোলে নেন, তখন অক্সিটোসিন হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায়। এতে মায়ের ভালো লাগা বা সুখানুভূতিও বাড়ে। আনন্দে থাকেন মা। আবার যখন মা সন্তানকে স্পর্শ করতে পারেন না বা সন্তান থেকে দূরে থাকেন, তখন এই হরমোন নিঃসরণ কমে যায়। তখন মায়েদের মন খারাপ থাকে, বিষণ্নতা বেড়ে যায়।
প্রকৃতির নিয়মেই সন্তান প্রসবের সময় মায়ের শরীরে অক্সিটোসিন নিঃসরণ বেড়ে যায়। আর এতেই প্রসবকালীন ব্যথা অনেকটা প্রশমিত হয়। একজন নারীর জীবনে সন্তান জন্মদানের পরের কয়েকটি মুহূর্তে এই হরমোন নিঃসরিত হয় সবচেয়ে বেশি। এ জন্য এই সময় মায়েরা সন্তানের প্রতি বেশি আকর্ষণ বা ভালোবাসা অনুভব করেন। মায়ের কাছে সন্তান জন্মদানের সময়টি শ্রেষ্ঠ সময় বলে মনে হয়।
এই হরমোনের কারণেই মূলত মায়েরা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো উপভোগ করেন। এ সময়টা তারা তুলনামূলক বেশি প্রফুল্ল থাকেন। সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ালে মা-সন্তানের বন্ধন দৃঢ় হয়।