বিশ্বের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন দেশ হিসেবে জাপানের নাম রয়েছে তালিকার বেশ উপরের দিকেই। কারণ দেশটির দক্ষ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা। এই শহরের রাস্তাঘাটে কোনো ডাস্টবিন নেই। এ দেশের অধিবাসীরা রাস্তায় ময়লা ফেলেন না। জাপানে যারা প্রথমবার বেড়াতে যান তারা অবাক হন দেশটির এতো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা দেখে। বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে যারা যান তাদের জন্য বিস্ময়কর সে দেশের রাস্তাঘাট।
জাপানিরা বাইরে গেলে ময়লা ফেলেন না। ময়লা বহন করেন। তারা এতোটাই সচেতন যে, যতক্ষণ না সঠিকভাবে ময়লা ফেলার ব্যবস্থা করা সম্ভব, ততক্ষণ তারা সেই আবর্জনা নিয়ে রাস্তায় বের হন না। তাই সেখানে কোনো ডাস্টবিন নেই।
জাপানিদের একটি নিজস্ব ধর্ম আছে, তা হলো ‘শিনতো’। এর মূল মর্মবাণীই হলো পরিচ্ছন্নতা। জাপানের স্কুলের ছাত্ররা তাদের শিক্ষকদের সাথে প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময় করে স্কুল পরিষ্কার করে। তাছাড়া শহরের বাসিন্দারা নিজেরাই আবর্জনা পরিষ্কার করেন।
জাপানের অধিবাসীরা যখন-তখন বাড়ির ডাস্টবিনে রাখা আবর্জনা নিয়ে বাইরে বেরোতে পারেন না। যখন-তখন রাস্তার ধারে আবর্জনা ভর্তি ব্যাগ রেখে দেওয়া জাপানে সম্ভব হয় না। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সময়ে এলাকায় আবর্জনা পরিষ্কার করতে আসেন পুরকর্মীরা। তখনই সকলকে আবর্জনা নিয়ে বেরোনোর নির্দেশ দেওয়া রয়েছে।
তাছাড়া জাপানিরা পুরনো জিনিসকেই পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলেন। এরা নিজেরাই আবর্জনা বাছাই করেন, যতটা সম্ভব পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে বিপজ্জনক উপকরণগুলি সঠিক জায়গায় ফেরত পাঠান।
দু’দশক আগে ১৯৯৬ সালে টোকিও’র সাবওয়েতে হয়েছিল এক রাসায়নিক হামলা। পাতাল রেলে সারিন গ্যাস হামলার পর বেশিরভাগ ডাস্টবিন সরিয়ে নেয় দেশটির প্রশাসন।
জাপানের ওম শিনরিকিও নামে গুপ্ত সংগঠনের সদস্যরা পাতাল ট্রেনের ডাস্টবিনে সারিন নামে মারাত্মক গ্যাস রেখেছিল। এতে ১৩ জন যাত্রীর মৃত্যু ও ৫৪ জন গুরুতর আহত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে আরও ৯৮০ জন এই গ্যাসের প্রভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন।