এপ্রিল মাসে পূর্ণিমার চাঁদকে ‘পিংক মুন’ বা ‘গোলাপি চাঁদ’বলা হয়। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতের আকাশে দেখা মিলেছে এই চাঁদের। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভোর পর্যন্ত এই চাঁদ দেখা যাবে।
চাঁদ যখন তার কক্ষপথে পৃথিবীর নিকটতম বিন্দুতে থাকে তখনই তা পূর্ণিমা রূপে আকাশকে আলোকিত করে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানায়, দেশটির স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ৪৯ মিনিটে পূর্ণ গোলাপি চাঁদের দেখা পাওয়া যাবে। ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায় এই চাঁদ পূর্ণরূপে দেখা বুধবার (২৪ এপ্রিল)।
গোলাপি চাঁদ নিয়ে সাধারণ মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। বিরল এই চাঁদ দেখতে অনেকে ঘটা করে আয়োজনও করে থাকে। কিন্তু কেন একে গোলাপি চাঁদ বলা হয় জানেন?
গোলাপি পূর্ণিমা আসলে গোলাপি রঙের চাঁদের কথা বলে না। মূলত মস পিঙ্ক নামের একটি ফুল রয়েছে। যাকে আবার creeping phlox, moss phlox, mountain phlox এসব নামেও ডাকা হয়। এই ফুল বসন্তের প্রতীক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসন্তের শুরুতে এই ফুল দেখা যায়। এই ফুলের নামেই চাঁদের নামকরণ করা হয়েছে পিঙ্ক মুন বা গোলাপি চাঁদ। এই চাঁদকে স্প্রাউট মুন, এগ মুন, ফিশ মুন, ফাশায় মুন, ফেস্টিভাল মুন, ফুল পিঙ্ক মুন, ব্রেকিং আইস মুন, বডিং মুন, বিগিনিং মুনও বলা হয়।
এদিকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানান, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে থাকা অত্যন্ত সূক্ষ্ম ধূলিকণা এবং বিভিন্ন ধরনের গ্যাসের শক্তির কারণে অনেক সময় চাঁদের রঙের দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখা যায়। এছাড়া অন্যান্য ধোঁয়া দূষণও পৃথিবীতে আলো পৌঁছাতে বাধা সৃষ্টি করে। পৃথিবীতে আসা আলো তাদের নিজ নিজ তরঙ্গ দৈর্ঘ্য অনুযায়ী অনেক প্রকারে বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়, যার মধ্যে নীল রঙকে সবচেয়ে দ্রুত বিক্ষিপ্ত হতে দেখা যায়। লাল রঙও বহু দূর যায়। এই কারণে, যখন চাঁদকে পৃথিবী থেকে দেখা হয় তখন বাদামী, নীল, হালকা নীল, রূপালি, সোনালি, হালকা হলুদ রঙের দেখায়। আর বিভ্রমের কারণে একে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বড়ও দেখায়। জ্যোতির্বিদ্যার ভাষায় একে রিলে স্ক্যাটারিং বা আলোর বিচ্ছুরণও বলা হয়।
জ্যোতির্বিদ রিচার্ড নোল্লে প্রথম ‘সুপার মুন’ শব্দটির প্রবর্তন করেন। ১৯৭৯ সালে রিচার্ড এই শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন। নতুন ফুল মুন বা পূর্ণিমার চাঁদকে সুপার মুন বলা হয়। এই সময় চাঁদ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি থাকে। তখনই চাঁদ তার বিশাল রূপ দিয়ে চারপাশকে আলোকিত করে। এটি বছরের সবচেয়ে বড় এবং উজ্জ্বল চাঁদ হয়। এপ্রিল মাসের এই সুপার মুনকেই পিঙ্ক মুন বা গোলাপি চাঁদ নামে আখ্যায়িত করা হয়।
বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে আধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত স্মার্টফোন দিয়ে কিংবা ফটোগ্রাফারের ক্যামেরায় বন্দী হবে এই সুপার মুনের দারুণ ছবি।
সূত্র: সিবিএস নিউজ