বড়দিনে নানা আয়োজনের মধ্যে প্রধান আকর্ষণ ক্রিসমাস ট্রি। ঝাউগাছের মতো দেখতে পিরামিডের মতো এই গাছটি বেশ যত্ন সহকারে সাজানো হয় বড়দিনে। অনেকেরই কৌতুহল থাকে বড়দিনে উৎসবে কেন ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়।
অনেকে বিশ্বাস করেন, এই গাছ যত সুন্দর করে সাজানো যাবে, আগামী বছর তত ভালো যাবে। এই কারণে ক্রিসমাস ট্রি আরও সুন্দর করে তুলতে ক্রিসমাস বল, ক্রিসমাস বেল, রিবন, ক্যান্ডি, মোজা লাগানো হয়। এই ট্রির সামনে দাড়িয়ে সান্তা ক্লজ সবাইকে উপহার দেন। নাচে গানে মেতে উঠেন।
ইতিহাসবিদদের মতে, যিশুখ্রিস্ট কোথাও কিছুই বলে যাননি। বড়দিন পালনে এই গাছটির বিশেষত্বের কথাও কোথাও নেই। জার্মানিতে এক সময় শীতকালে এই বিশেষ গাছটি দিয়ে ঘর সাজানোর রীতি প্রচলিত ছিল। ১৭৫০ সালে এই গাছ দিয়ে ঘর সাজানোর নিয়ম প্রথম দেখা গিয়েছিল ট্রাসবুর্গ শহরে।
কয়েক বছর পর ১৭৭১ সালে জোহান উলফগাং বহন গেটে নামের এক বিখ্যাত লেখক বড়দিনের ছুটি কাটানোর জন্য জার্মান ঘুরতে আসেন। সেখানে তিনি স্ট্রাসবুর্গ শহর ঘুরে দেখেন। তখনই শীতের মৌসুমে তিনি প্রতিটি বাড়িতে বড়দিনের সময় ক্রিসমাস ট্রি সাজানো দেখেন। এই সজ্জায় তিনি খুবই মুগ্ধ হন।
এরপর তিনিই শীতকালের এই গাছের সাজ এবং বড়দিনকে একাকার করে ফেলেন। তিনি ভুল করে বড়দিন উপলক্ষে এই সাজ ভাবতে থাকেন।
উলফগাং বহন গেটে তার ‘দ্য সাফারিং অব ইয়ং ওয়েরথার’ বইতে এই গাছের কথা লিখেছেন। পরে ১৮২০ সালে তার সেই বইয়ের লেখা নিয়ে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী দেশগুলোতে শুরু হয় হইচই। ওই বছরই জার্মান রাজকুমার অ্যালবার্টের সঙ্গে বিয়ে হয় রানি ভিক্টোরিয়ার।
রাজকুমার অ্যালবার্ট বিয়ের পর ইংল্যান্ডকে ক্রিসমাস ট্রি দিয়ে সাজিয়ে বড়দিন পালন করেন। সেই থেকে শুরু হয় ক্রিসমাস ট্রি সাজানোর প্রথার। এছাড়া আরও মিথ রয়েছে যে, যিশু খ্রিস্টের জন্মের সঙ্গেও ক্রিসমাস ট্রি যুক্ত রয়েছে।
যিশুর জন্মের পরে যারা তার বাবা-মা জোসেফ ও মেরিকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, তারা নিজেদের বাড়ির এই চিরসবুজ ফার গাছ আলো দিয়ে সাজিয়ে দেন। সেই থেকেই এই প্রথা চলছে।