• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ জানুয়ারি, ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩০, ৯ রজব ১৪৪৬

বিমান যাত্রীদের কেন প্যারাসুট দেওয়া হয় না


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৫, ০৬:৩৬ পিএম
বিমান যাত্রীদের কেন প্যারাসুট দেওয়া হয় না
সূত্র: সংগৃহীত

বিমান দুর্ঘটনার খবর প্রায়ই শোনা যায়। বিমান দুর্ঘটনা ঘটলে বাঁচার সম্ভাবনা থাকে না বললেই চলে। বিমানে নিরাপদে চলাচলের জন্য সবধরণের ব্যবস্থাই থাকে। তবে দুর্ঘটনার কবলে পড়লে প্রাণ বাঁচানোর জন্য় তেমন কোনো উপায় থাকে না। এমনকি যাত্রীদের নিরাপত্তায় রাখা হয় না প্যারাসুটও। প্যারাসুট দিয়ে আকাশ থেকে ভূমিতে অবতরণ করা হয়। বিমান দুর্ঘটনায় সময় যাত্রীরা প্যারাসুটের মাধ্যমে বিমান থেকে ভুমিতে অবতরণের চেষ্টা করতে পারেন। কিন্তু তবুও কেন জীবন বাঁচানোর এই অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ বিমানের যাত্রীদের জন্য সরবরাহ করা হয় না। এর পেছনে বেশকিছু কারণ রয়েছে। জানেন কি, সেই কারণগুলো কী কী?

জানা যায়, অধিকাংশ যাত্রীবাহী বিমান প্রায় ৩৫০০০ ফুট উচ্চতা দিয়ে উড়ে যায়। এই উচ্চতা প্যারাসুট দিয়ে স্কাইড্রাইভ করার উচ্চতার থেকেও অনেক বেশি। তাছাড়া এই উচ্চতায় বায়ুর চাপ অনেক কম থাকে। তাই বিমান থেকে লাফ দিলেও প্যারাসুট খুলবে না।

প্রতিটি প্যারাসুট ওজনে কমপক্ষে ২২ থেকে ৩০ কেজি। একটি বিমানের যাত্রীর আসন সংখ্যা ১০০ হলে, প্যারাস্যুটসহ তাদের গড় ওজন হবে ৭৫ কেজির বেশি। প্যারাসুটে মাথাপিছু ওজন গড়ে ২৫ কেজি বেড়ে যাবে। অতিরিক্ত ওজন বহন করতে হলে বিমানের আকৃতিও বড় হবে। বিশাল আকৃতির বিমান উড়ানো মুশকিল হয়। বিমানে প্রচুর জ্বালানি খরচ হবে। যাত্রীদের ভাড়াও বাড়বে।

এছাড়াও প্যারাসুট বেশ ব্যয়বহুল। এর সর্বনিম্ন দাম ৪০,০০০ টাকা। ১০০ যাত্রীর জন্য প্যারাসুটের ব্যবস্থা করতে বিমান কোম্পানির বাজেট বেড়ে যাবে। সেই টাকা বিমান কোম্পানি যাত্রীর ভাড়ার সঙ্গে যুক্ত করবে। ভাড়ার পরিমাণ দিগুণ হবে। এতে বিমানযাত্রীর সংখ্যা কমে যাবে।

প্যারাসুট ব্যবহার করার জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। যা সাধারণ যাত্রীর পক্ষে সম্ভব নয়। প্রত্যেককে একজন ইন্সট্রাকটরের কাছে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। অন্তত ৩ দিন প্রশিক্ষণ নিলে প্রাথমিক ধারণা পাবে। তবে সেই ব্যবস্থা বিমান কোম্পানি থেকে করা সম্ভব নয়। আবার অধিকাংশ যাত্রীর জন্যই প্যারাসুট চালনা শেখার মতো অর্থও থাকে না। তাই প্যারাসুট চালানো সাধারণ যাত্রীদের জন্য কষ্টকর হবে।

শুধু তাই নয়, বিমান ৩৫০০০ ফুট উচু দিয়ে উড়ে। যাত্রীরা প্যারাসুট নিয়ে লাফ দিলে কম বায়ুচাপ ও স্বল্প অক্সিজেনের কারণে সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফুসফুসে বাতাস ভরে রাখার জন্য দম বন্ধ করলে, ফুসফুস ফেটে যাবে। কম অক্সিজেন ঘনত্বের কারণে অজ্ঞানও হতে পারেন যাত্রীরা। তাই গন্তব্যে নামার কোনো উপায়ও থাকবে না। সবদিক বিবেচনা করেই বিমানে প্যারাসুটের ব্যবস্থা থাকে না।

Link copied!