‘ইশ, আমার ভাগ্যটা যদি ভালো হতো!’- এমন বাসনা সবার মনেই থাকে। তবে কজনের ভাগ্য ভালো হয় বলুন তো। যদিও ভাগ্যবান ব্যক্তির সন্ধান পেলে সবাই ঈর্ষে করে। সবার কাছেই ভাগ্যবান ব্যক্তি কৌতুহলেও কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠে। যেমনটা ঘটেছে, ফ্রেন সিলাককে ঘিরে। কারণ ফ্রেন সেলাককে বিশ্বের সবচেয়ে ভাগ্যবান মানুষ মনে করা হয়। এরপেছনে কারণও রয়েছে।
ক্রোয়েশিয়ার বাসিন্দা ফ্রেন সেলাকের জীবনে বিপর্যয় ও বিপত্তির কমতি ছিল না। বলা যায়, বিপত্তি তার জীবনের বড় অংশ জুড়েই রয়েছে। বার বারই তিনি বিপদে পড়েছেন। বারবার তিনিই সেই বিপদ অলৌকিকভাবে কাটিয়ে উঠেছেন। তাইতো বিশ্বের সবচেয়ে ভাগ্যবান ব্যক্তি মনে করা হয় ফ্রেন সেলাককে।
১৯২৯ সালের ১৪ জুন জন্ম নেন ফ্রেন সেলাকের। বর্তমানে তার বয়স ৯৫ বছর। কর্মজীবনে তিনি ছিলেন একজন সংগীত শিক্ষক। এখনও তিনি ‘ওয়ার্ল্ড’স লাকিয়েস্ট ম্যান’ এবং ‘ওয়ার্ল্ড’স লাকিয়েস্ট আনলাকিয়েস্ট ম্যান’হিসেবে আখ্যায়িত রয়েছেন। কেনই বা নয়, ৭ বার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন এবং ৪ বার ব্যর্থ বিয়ের আঘাতও সহ্য করেছেন। তবুও দিব্যি জীবন কাটিয়ে দিচ্ছেন ফ্রেন সেলাক।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, ৩২ বছর বয়সে ১৯৬১ সালে ফ্রেন সেলাক প্রথম বিমান যাত্রা করেন। এর আগে কখনোই তিনি বিমানে ওঠেন নি। একদিন কাজের সুবাদে বিমানে যাত্রা করেন। সেই বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। মাঝ আকাশে বিমান থেকে একটি দরজা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, বিমান গিয়ে একটি খাদের মধ্যে বিধ্বস্ত হয়। বিমানের উনিশ জন আরোহী প্রাণ হারান। ভাগ্যক্রমে ফ্রেন সিলাক বিমান থেকে সোজা খড়ের গাদার উপর ভূপতিত হন এবং বেঁচে ফিরেন।
এর আগে ১৯৬২ সালে সারাজেভো থেকে ডুব্রোভনিকের রেলপথে যাওয়ার সময় ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়েন। ট্রেনটি নদীতে পড়ে যায়। সতেরো জন যাত্রী নিহত হন। কিন্তু ভাঙা হাত সাতার কেঁটে তীরে ফিরেন সেলাক।
এছাড়াও ১৯৬৬ সালে ফ্রেন বাসদুর্ঘটনায় পড়েন। বাসটি নদীতে পড়ে যায়। তিনি অক্ষত অবস্থায় থাকেন। ১৯৭০ সাল পর্যন্ত অস্বাভাবিক আরও কিছু ঘটনা ঘটে। তার গাড়ির জ্বালানি ট্যাঙ্ক মোটরওয়েতে বিস্ফোরিত হয়েছিল। সেখান থেকেও তিনি জীবিত ফিরে আসেন। ১৯৭৩ সালে এবং ১৯৯৫ সালে আবারও বাস দুর্ঘটনার শিকার হন।
১৯৯৬ সালেও ফ্রেন সপ্তমবারের মতো দুর্ঘটনার শিকার হন। একটি পাহাড়ি রাস্তায় তার গাড়ি বিস্ফোরিত হয়। কিন্তু এ আগেই তিনি প্রাণ নিয়ে বেঁচে ফেরেন।
এছাড়াও লটারিতে জিতে ১ লাখ মার্কিন ডলারও অর্জন করেছেন ফ্রেন সেলাক। ভাগ্যের পরিক্রমায় বারবার বেঁচে যাওয়া আর লটারিতে জয়ী হওয়ার মতো ঘটনাগুলোই তাকে বিশ্বের সবচেয়ে ভাগ্যবান ব্যক্তির তকমা দিয়েছে।