সন্তান জন্ম হওয়া আল্লাহর বড় নেয়ামতের একটি। নেক সন্তান থাকলে দুনিয়া ও আখিরাতের সুখ-শান্তির নিশ্চয়তা পাওয়া যায়। তাই সন্তান জন্মের পর মহান আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করতে হয়। কোরআনে বলা আছে, মৃত্যুর পরও নেক সন্তানের কারণে মৃত মানুষের সওয়াব জারি থাকে।
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, “কোনো কোনো ব্যক্তি জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা লাভ করে বলবে এতো মর্যাদার অধিকারী কীভাবে হলাম? তাকে বলা হবে, তোমার জন্য তোমার সন্তানের দোয়া ও ইস্তেগফারের কারণে তুমি এতো মর্যাদা পেয়েছ। (সুনানে ইবনে মাজা, মুসনাদে আহমদ)”
মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, “আসমানসমূহ ও জমিনের রাজত্ব আল্লাহরই। তিনি যা চান সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন, যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। অথবা তাদের পুত্র ও কন্যা উভয়ই দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করেন। তিনি তো সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান। (সুরা শুরা: ৪৯-৫০)
তাই একমাত্র আল্লাহ ছেলে কিংবা মেয়ে সন্তান দেওয়ার মালিক। তাই যে সন্তানই জন্ম হোক তাতে সন্তুষ্টি আদায়ের কথা বলা হয়েছে। আল্লাহর ফয়সালায় সন্তুষ্ট থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মেয়ে সন্তান জন্মের কারণে মায়ের নিন্দা করা এবং তাকে দোষারোপ করা ঠিক নয়। ইসলামপূর্ব জাহেলি যুগের কাফেররা মেয়ে সন্তান জন্মে অখুশি থাকতো। কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এর নিন্দা করে বলেন, “ যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়; তখন তার চেহারা কালো হয়ে যায়। আর সে থাকে দুঃখ ভারাক্রান্ত। তাকে যে সংবাদ দেয়া হয়েছে, সে দুঃখে সে কওম থেকে আত্মগোপন করে। ভাবে আপমান সত্ত্বেও কি একে রেখে দেবে, না মাটিতে পুঁতে ফেলবে? জেনে রেখো, তারা যা ফয়সালা করে, তা কতই না মন্দ! (সুরা নাহল: ৬৮, ৬৯)
সন্তান যাই হোক তাতেই সন্তুষ্টি আদায় করা উচিত। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে সিজদায় লুটিয়ে পড়া উচিত। কারণ নবিজি (সা.) কোনো খুশির সংবাদ শুনেই সিজদায় শুকরিয়া আদায় করতেন। (সুনানে আবু দাউদ)
আল্লাহ তাআলা বলেন, “এমনও হতে পারে যে তোমরা যাকে অপছন্দ করছো, তার মধ্যেই আল্লাহ বহু কল্যাণ দিয়ে রেখেছেন।“ (সুরা নিসা: ১৯)
পবিত্র কোরআনে শুকরিয়া আদায় করলে নেয়ামত বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ও অকৃতজ্ঞতার জন্য কঠোর শাস্তির দেওয়া ঘোষণা রয়েছে। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, “তোমরা যদি কৃতজ্ঞতা আদায় কর, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের আরও বাড়িয়ে দেবো, আর যদি তোমরা অস্বীকার করো, তাহলে আমার আজাব অবশ্যই কঠিন। (সুরা ইবরাহিম: ৭)”