স্মার্টফোন দিয়ে এখন নানাভাবে মানুষকে ট্র্যাক করা সম্ভব। সাইবার অপরাধীরা স্মার্টফোনে আড়ি পাততে সক্ষম অ্যাপ বা স্পাইওয়্যার যুক্ত করে দূর থেকে তার টার্গেটকৃত ব্যক্তির অনলাইন বা দৈনন্দিন কার্যক্রম নজরদারি করে থাকে। আবার সরকারি সংস্থাগুলোও নজরদারির কাজ করে। বাংলাদেশে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) ফোনে আড়ি পাতা ও ফোন ট্র্যাকিংয়ের (অবস্থান শনাক্ত করা) কাজটি করে প্রযুক্তির মাধ্যমে।
ফোনে আড়ি পেতে সহজেরই একজন আপনার ফোনে থাকা তথ্য সব জেনে যেতে পারবে। আপনার ফোন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। এমনকি আপনার ফোনে থাকা তথ্য দিয়ে আপনাকেই ব্ল্যাক মেইল করতে পারবে। আপনি কোথায় যাচ্ছেন এসবও সহজেই ট্র্যাক করতে পারবে। তাই অনেকেই আতঙ্কে থাকেন। ভাবেন এই বুঝি তার ফোন কেউ ট্র্যাক করছে। আর কারও ফোনে কেউ আড়ি পাতছে কি না সেটা ব্যবহারকারীর পক্ষে নিশ্চিত হওয়া খুব সহজ না। তবে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে পারেন। ফোনের কিছু আচরণে বুঝতে পারবেন আপনার ফোনে কেউ আড়ি পাতছে কি না। চলুন দেখে নেই, সেগুলো কি কি-
- ওয়েবসাইটে ঢুঁ মারার সময় নিজের অজান্তেই ব্রাউজারের সেটিংস পরিবর্তন হয়ে গেলে বা বারবার পপআপ বার্তা এলে বুঝতে হবে আপনার স্মার্টফোনে ইতিমধ্যেই স্পাইওয়্যার ঢুকে পড়েছে।
- ফোনে কথা বলার সময় যদি শব্দের মান ভালো না থাকে বা অস্বাভাবিক শব্দ (ক্লিক বা ট্যাপ করার) হয় তখন একটু সতর্ক হোন। অনেক সময় অন্য কেউ আড়ি পাতলে এরকম হয়। তবে অপর প্রান্তে কেউ যদি কথোপকথন ধারণ করে রাখেন (কল রেকর্ড), সে ক্ষেত্রে আইফোন এবং নতুন সংস্করণের অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলো নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে জানিয়ে দেয়।
- অচেনা নম্বর থেকে অদ্ভুত মেসেজ আসলেও বুঝবেন স্পাইওয়্যার দিয়ে ফোনে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলছে। এমন অবস্থায় নিরাপদ থাকার উপায় হলো ‘ফ্যাক্টরি রিসেট’ (ফোনের সেটিংস প্রাথমিক অবস্থায় নিয়ে যাওয়া) করা। ট্র্যাক বা ট্যাপড করা হচ্ছে, এমন সন্দেহ হলে সব সময় ভিপিএনও (ভার্চ্যুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক) ব্যবহার করা যেতে পারে।
- ফোন পড়ে আছে কিন্তু ফোনের পর্দার (ডিসপ্লে) আলো জ্বলছে—এ ধরনের লক্ষণও ইঙ্গিত দেয় ফোন আড়ি পাতার।
- ফোনের ক্যামেরা, মাইক্রোফোন অন্য কেউ ব্যবহারের চেষ্টা করলে আইফোনের অপারেটিং সিস্টেমে সেটি ধরা পড়ে। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আইফোনের পর্দায় কমলা বা সবুজ একটি বিন্দু ভেসে ওঠে।
- আপনার ফোন যদি একা একা বন্ধ হয়ে আবার চালু হয়, চার্জ কম থাকে তখন সতর্ক হোন। কেউ যদি দূর থেকে আপনার ফোনে প্রবেশের চেষ্টা করে, সে ক্ষেত্রে এমনটা হতে পারে।
- ফোন বন্ধ বা অন হতে যদি সময় লাগে তাতেও সতর্ক হোন। কারণ বন্ধ হওয়ার আগে স্পাইওয়্যার আপনার ফোনের তথ্য নির্দিষ্ট জায়গায় পাঠিয়ে দেয়। তাই ফোন বন্ধ (শাটডাউন) হতে সময় বেশি লাগে।
- যদি আপনার ফোনে এলোমেলো মেসেজ আসে এবং আপনার ফোনের স্টোরেজ দ্রুত ভরে যাচ্ছে এটিও স্পাইওয়্যারের কারণে হতে পারে।
- আপনার ব্যবহৃত অ্যাপগুলো ছাড়াও ফোনে যদি এমন অ্যাপ দেখেন যা আপনার অচেনা, তবে সচেতন হতে হবে। আবার স্পাইওয়্যার ফোনের পর্দার স্বাভাবিক চেহারা বদলে দেয়। তখন বুঝবেন আপনার ফোনে কেউ ঢুকেছে।