বিশ্বজুড়ে এখন ইন্টারনেটের জয়জয়কার। প্রযুক্তির অন্যতম আশীর্বাদ এটি। যুগ বদলের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তির উন্নতি হয়েছে। আর প্রযুক্তির কল্যানে ঘরে ঘরে পৌছে গেছে ইন্টারনেট। ফোন বা কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই গোটা বিশ্ব হাতের মুঠোয় চলে আসে। ঘরে বসেই বিশ্বের সব খবর জানা যায়। দেশ-বিদেশের জনপ্রিয় অনুষ্ঠানও দেখা যায় ইন্টারনেটের বদৌলতে। আর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগের বিস্তর পরিসর সৃষ্টি হয়েছে।
দেশজুড়েই ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে। বলা যায়, ইন্টারনেট ছাড়া এক মুহূর্ত থাকাও যায় না। বাড়ি, অফিস, রেস্টুরেন্ট, এমনকি স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কাজই এখন ইন্টারনেট নির্ভর। তবে ইন্টারনেট ব্যবহারে টাকাও গুণতে হয়। বিশ্বজুড়েই ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়। গ্রাহকরা টাকার বিনিময়ে ইন্টারনেট সেবা নিয়ে থাকেন। এই ইন্টারনেট সেবা যদি ফ্রি পাওয়া যায় তবে তা হবে সোনায় সোহাগা।
বিশ্বের এমন একটি দেশ রয়েছে যেখানে ইন্টারনেট সেবা একদম ফ্রি। গ্রাহকরা সব ধরণের কাজে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা পেয়ে থাকেন। সেই দেশে ফোনের ডাটা ব্যবহার কিংবা ব্রডব্যান্ড কানেকশনে কোনো টাকাই খরচ হয় না। তাই অন্যান্য দেশের মতো নাগরিকদের আয়ের টাকা দিয়ে ইন্টারনেট সেবা কিনতে হয় না।
বিশ্বের বুকে এই দেশটি হলো ইউরোপের এস্তোনিয়া। ইউরোপের উত্তর-পূর্বে বাল্টিক সাগরের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত এই দেশটি দেশটির রাজধানী হলো তাল্লিন। এস্তোনিয়া পৃথিবীর প্রথম ই-কান্ট্রি। এই দেশের নাগরিকদের ইন্টারনেট ব্যবহারে কোনো টাকা খরচ করতে হয় না। ২০০০ সাল থেকেই দেশটির সরকার বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা দেয় নাগরিকদের। কারণ দেশটিতে সবকিছুই ইন্টারনেট নির্ভর। প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করেন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে জানা যায়, এস্তোনিয়ায় ভোট দেওয়া থেকে শুরু করে সিগনেচার পর্যন্ত ডিজিটাল সেবায় হয়। বিশ্বের যেকোন দেশে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে এস্তোনিয়ায় ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগও রয়েছে। এমনকি ইন্টারনেট সুবিধায় দেশটির ব্যাংকে অ্যাকাউন্টও খোলা যায় বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকেই।
আমেরিকার একটি বেসরকারি সংস্থা ফ্রিডম হাউসের মতে, বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে এস্তোনিয়া হলো বিশ্বের একটি মডেল দেশ। ফ্রি ইন্টারনেট সেবাসহ আরও বেশকিছু সুবিধা নিশ্চিত করে দেশটির সরকার।
২০১৩ সালে এস্তোনিয়ার রাজধানী তালিনের তৎকালীন মেয়র এডগার সাভিসার প্রথম বিনামূল্যে পাবলিক ট্রান্সপোর্টের পরিষেবা চালু করেন। মুক্তমত কিংবা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার দিক থেকেও দেশটি সেরা। এখানে মুক্ত মত প্রকাশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে হয়রানি করবে না বা জেলেও দেবে না।
১৯৯১ সালে এই দেশ রাশিয়া থেকে পৃথক হয় এস্তোনিয়া। স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই দেশটির নাগরিকরা বিভিন্ন সুবিধা পান। তাই দেশটির বর্তমান সময়ের অর্থনীতির সূচক দ্রুত উন্নতি হয়েছে।
সূত্র: ওয়াই-ফাই গ্লোবাল