ভবিষ্যত সুন্দর করার জন্য সঞ্চয় করতে হয়। প্রতিদিন একটু একটু করে জমানোর অভ্যাস করা উচিত। খরচের অংশ বাদ দিয়ে অতিরিক্ত কিছু টাকা নিয়মিত জমিয়ে রাখাকেই সঞ্চয় বলে। সঞ্চয়ী হতে টাকা রোজগার করতেই হবে তা কিন্তু নয়। বরং যে কেউ চাইলেই সঞ্চয় করতে পারেন। ছাত্রজীবন থেকেই সঞ্চয়ী হয়ে উঠতে পারেন। এই অভ্যাস থাকলে নিজের ভবিষ্যতও সুন্দর হবে।
শুধুমাত্র সঞ্চয় করার ইচ্ছে থাকলেই আপনি এই অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। অনেকে সঞ্চয় করা শুরু করবেন করবেন বলেও, আর শুরু করা হয় না। সময় গড়িয়ে যাচ্ছে। জীবনের অনেকটা সময় পারও হয়ে গেছে। তাই সময় নষ্ট না করে এখন থেকেই সঞ্চয়ের অভ্যাস করুন।
শৈশব থেকেই সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলুন। নিজের ছোট ছেলে মেয়েকে সঞ্চয় করা শেখান। ছোটরা মাটির ব্যাংকে পয়সা বা টাকা জমিয়ে রাখতে পারে। যা দিয়ে পরবর্তী সময়ে শখের জিনিস কিনতে পারে। সন্তানকে নির্দিষ্ট জায়গা করে দিন। যেখানে টাকা সঞ্চয় করতে পারবে। সন্তানের আগ্রহ বাড়ানোর জন্যে প্রিয় কোনো জিনিস কেনার কথা বলে সঞ্চয় করতে শেখান। কিংবা প্রিয় মানুষকে নিজের জমানো টাকা দিয়ে উপহার দেওয়া যাবে বললেও সন্তানদের আগ্রহ বাড়বে।
বাচ্চাদের টিফিনের জন্য টাকা দেন অভিভাবকরা। সেই টাকা থেকেই কিছু আলাদা করে জমিয়ে রাখতে পারে। টিফিনের টাকা থেকে সামান্য কিছু সঞ্চয় হলেও তাদের উত্সাহ বাড়বে। আবার ঈদ সালামি কিংবা জন্মদিনের উপহারে টাকা পেলে তাও সঞ্চয় করতে পারে। বাচ্চার সঞ্চয় করা টাকা দিয়ে প্রিয় খাবার, প্রিয় পোশাক, প্রিয় খেলনা কিনে দিতে পারেন। বাচ্চার আগ্রহ বাড়বে এবং সঞ্চয়ের অভ্যাস হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা অনেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি টিউশনি করেন। আবার খন্ডকালীন কাজও করে থাকেন। যা দিয়ে নিজেদের খরচ চালান। খরচের পর বাড়তি টাকা সঞ্চয় করে রাখতে পারেন। সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে শখের কিছু কিনতে বা কোথাও বেড়াতে যেতে পারেন।
পড়াশোনা শেষ করেই কর্মজীবনে প্রবেশ করছেন। রোজগারের শুরু থেকেই সঞ্চয় করুন। হিসেব করে খরচ করুন। খরচের টাকা আলাদা করে রাখুন। এরপর বাড়তি টাকা ব্যাংকে সঞ্চয় করে রাখুন। প্রতি মাসে যেকোনো পরিমাণ অর্থই সঞ্চয় করে রাখতে পারেন। যা ক্যারিয়ার গড়তেও কাজে দেবে।
ক্যারিয়ারের যে পর্যায়ে আয় বাড়বে সঞ্চয়ের অর্থও বাড়িয়ে নিন। বেশি আয় হচ্ছে বলে বেশি খরচ করবেন তা কিন্তু নয়। বরং খরচ কমিয়ে সঞ্চয় বাড়ান।
নতুন জীবনে প্রবেশ করেছেন? বিয়ে করে সংসার করার শুরু থেকেই পরিবারের জন্য সঞ্চয় করুন। সঞ্চয়ের টাকা সন্তানের লেখাপড়া খরচ মেটাতে সাহায্য করবে। কিংবা বয়স্ক বাবা মায়ের শখ পূরণ কিংবা অসুস্থের খরচ চালাতেও আপনার বেগ পেতে হবে না।
সবসময় হয়তো কাজ করার শক্তি থাকবে না। বয়স হলেই শরীরে নানা রোগ বাধবে। তাই ভালোভাবে সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে সঞ্চয়ী হওয়া প্রয়োজন। নিজের জন্য সঞ্চয় করা প্রয়োজন। সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে নিজের স্থায়ী ঠিকানা করুন। জীবনের শেষভাগটা যেন শান্তিতেই কাটিয়ে দিতে পারেন।
সূত্র : ফোর্বস অ্যাডভাইজর