• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩০, ১ শা'বান ১৪৪৬

বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে যা জানা দরকার


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৫, ০৮:১৮ পিএম
বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে যা জানা দরকার
সূত্র: সংগৃহীত

লাখো মুসল্লির মানবিক প্রেরণার উত্স বিশ্ব ইজতেমা। যেখানে সমাবেত হয়ে পাপমুক্ত নির্মল জীবন গঠন, ধৈর্য, পরোপকার ও শৃঙ্খলার জীবন গঠনে অঙ্গীকার করা হয়। ইসলামের পথে অগণিত মানুষ আলোর দিশা খুঁজে পান। নবী ও সাহাবীদের আদর্শে জীবন গঠনে দৃঢ় শপথ নেন। সকল প্রকার বৈষম্য দূর করে এক কাতারে দাড়িয়ে মহান আল্লাহ্র ধ্যানে মগ্ন হন লাখো মুসল্লি।

প্রতিবছরের মতো এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যেখানে জড়ো হচ্ছেন লাখো মুসল্লি। প্রিয় নবীজি তাঁর উম্মতকে দায়িত্ব দিয়ে বলেছিলেন, “আমার একটি বাণীও যদি তোমার কাছে থাকে তা অন্যের কাছে তাবলিগ কর অর্থাৎ পৌঁছে দাও।“ নবীজির সেই বাণীর উপর ভিত্তি করেই, সেই চেতনার উত্তরাধিকার বহন করেই বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করা হয়।

পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর পথে চলার জন্য বিশ্ব ইজতেমায় ৬টি বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।

ঈমান আনা

ইসলামের প্রতি ঈমান আনা। ঈমান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও দামি সম্পদ। যেকোনো প্রতিকূলতার মুখেও ঈমানের প্রশ্নে আপস করা যাবে না। ঈমানের পথে নিজের প্রিয় জীবন বিলিয়ে দিতেও প্রস্তুত থাকবেন মুসল্লিরা। পবিত্র কোরআনে কারীমে আল্লাহতায়ালা বলেন, “যে ব্যক্তি আমার হেদায়েত থেকে বিমুখতা প্রদর্শন করে অবশ্যই তার জীবনযাপন হবে সংকুচিত এবং কেয়ামতের দিন তাকে অন্ধ করে উপস্থিত করব। সূরা তহা: ১২৪”

“ঈমানহীন ব্যক্তির নাজাতের জন্য  দুনিয়াতে যা কিছু আছে তা এবং এর সমপরিমাণ জিনিস বদলা দিলেও তা গৃহীত হবে না এবং তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। সূরা মায়েদা: ৩৬

“আর যারা ইমানহীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে তাদের জন্য পৃথিবী সমান স্বর্ণ দিয়ে দিলেও তা কবুল করা হবে না, বরং তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। সূরা আল ইমরান,আয়াত : ৯১

নামাজ কায়েম করা

বিশ্ব ইজতেমায় নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। কারণ কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়অ হবে। ঈমানদার ব্যক্তি ও বেইমান ব্যক্তি মাঝে পার্থক্য সৃষ্টিকারী হচ্ছে এই নামাজ।

ইলিম ও জিকির করা

বিশ্ব ইজতেমার তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকে ইলিম ও জিকির। ইলিম ছাড়া সঠিক ইবাদত করা অসম্ভব। সেই সঙ্গে জিকিরের গুরুত্বও রয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, “তোমরা আমার জিকির করো আমিও তোমাদের স্মরণ করব।“ সূরা বাকারা, ১৫২

হাদিসে নবীজি বলেন, “জান্নাতে প্রবেশের জান্নাতিরা দুনিয়ার কোনো কিছুর জন্য আফসোস বা আক্ষেপ করবে না। তবে আফসোস করবে ওই সময়টুকুর জন্য যে সময়টুকু সে আল্লাহর স্মরণ ছাড়া অতিবাহিত করেছে।“

ইকরামুল মুসলিমিন বা পরোপকার

বিশ্ব ইজতেমায় ইকরামুল মুসলিমিন বা পরোপকারের বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। অন্যের দুঃখে পাশে দাঁড়ানো, সহমর্মী হওয়া এবং অন্যের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করতে মুসল্লিদের অনুপ্রাণিত করা হয়। নবীজি বলেন, “তোমরা জগত বাসীর প্রতি সদয় হও, তাহলে  আল্লাহতায়ালাও তোমাদের প্রতি সদয় হবেন।“ সুনানে তিরমিজি: ১৮৪৭

নবীজি আরও করেন, “অবশ্যই দান খয়রাত মানুষের হায়াত বৃদ্ধি করে। অপমৃত্যু থেকে বাঁচায় এবং অহমিকা দূর করে।“ আল-মুজামুল কাবীর: ১৩৫০৮

সহীহ নিয়ত

যেকোনো আমলের গ্রহণযোগ্যতার প্রথম শর্ত হলো সহীহ নিয়ত। বিশ্ব ইজতেমায় এই বিষয়ের উপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়। নিয়ত অশুদ্ধ হলে আমল নষ্ট হয়। ব্যক্তিকেও বিপদের মুখে পড়তে হয়।

হাদিসে নবীজি বলেন, “আল্লাহতায়ালা কারো বাহ্যিক সুরত ও সম্পদ দেখেন না। বরং তিনি দেখেন বান্দার অন্তর এবং আমল।“ সহীহ মুসলিম: ৬৫৪৩

নবীজি আরও বলেন, “আল্লাহতায়ালা শুধু সেই আমলটুকুই কবুল করেন, যা ইখলাসের সাথে তার সন্তুষ্টির জন্য করা হয়।“ সুনানে নাসাই, হাদীস নং ৩১৪২

ইখলাসের সঙ্গে শুদ্ধ নিয়তে আমলের প্রতিদানের কথা জানিয়ে নবীজির ইরশাদ করেন, “ইখলাসের সঙ্গে আমলকারীদের সুসংবাদ দাও। কেননা তারা অন্ধকারে প্রদীপস্বরূপ। তাদের দ্বারা ফেৎনার অন্ধকার দূর হয়ে যায়।“ বায়হাকী, হাদিস: ৩৪৩

দাওয়াত ও তাবলিগ

বিশ্ব ইজতেমায় সবশেষে গুরুত্ব দেওয়া হয় দাওয়াত ও তাবলিগের উপর। মহান আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন হওয়া, ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন- “হে রাসূল! আপনি তাবলিগ করুন বা পৌঁছে দিন, যা আপনার কাছে আপনার রবের তরফ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। যদি তা না করেন, তবে আপনি আল্লাহর পয়গাম পৌঁছালেন না।“ সূরা মায়েদা: ৬৭

মহান আল্লাহতায়ালা বলেন- “তোমাদের মানুষের জন্য বের করা হয়েছে। তোমরা ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে।“ সূরা আল ইমরান আয়াত :১১০

Link copied!