• ঢাকা
  • সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১, ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ডেঙ্গু প্রতিরোধে যা যা করতে হবে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম
ডেঙ্গু প্রতিরোধে যা যা করতে হবে
সূত্র: সংগৃহীত

ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ, যা এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। বিশেষ করে বর্ষাকালে এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে সঠিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডেঙ্গু থেকে বাঁচার জন্য কিছু কার্যকর পরামর্শ দেওয়া হলো এই আয়োজনে।

মশার কামড় এড়ানো

এডিস মশা সাধারণত ভোরবেলা এবং সন্ধ্যার সময় বেশি সক্রিয় থাকে।  তাই মশার কামড় এড়ানোর জন্য এই সময়ে বিশেষ সতর্ক থাকা প্রয়োজন। ঘুমানোর সময় সবসময় মশারি ব্যবহার করুন। বিশেষ করে শিশুদের জন্য এটি খুবই জরুরি।

মশার প্রতিরোধক লোশন বা স্প্রে ব্যবহার

ঘরে বা বাইরে থাকাকালীন মশারোধক ক্রিম বা স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। মশারোধক লোশনে DEET, পিকারিডিন বা ইকারিডিন থাকলে তা মশার কামড় প্রতিরোধে কার্যকর।

দীর্ঘ পোশাক পরা

মশার কামড় এড়ানোর জন্য হাত এবং পা পুরোপুরি ঢেকে থাকবে এমন পোশাক পরুন। বিশেষ করে সন্ধ্যা ও ভোরে বাইরে গেলে লম্বা বা শরীর ঢাকা পোশাক পরতে হবে।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ রাখা

মশার বংশবিস্তারের জন্য জমে থাকা পানি আদর্শ স্থান, তাই আশেপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি। ঘরের আশেপাশে  কোনো জায়গায় পানি জমতে দেওয়া যাবে না। ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, পুরানো টায়ার, বা কন্টেইনারে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করুন। এডিস মশা পরিষ্কার পানিতে ডিম পাড়ে। তাই নিয়মিত পানি জমার স্থানগুলো পরিষ্কার করতে হবে।

পানির ট্যাঙ্ক ও পাত্র ঢেকে রাখা

পানির ট্যাঙ্ক, ড্রাম বা বড় পাত্রের মুখ ঢেকে রাখুন। যাতে মশা সেখানে ডিম পারতে না পারে। নালা-নর্দমা পরিষ্কার রাখুন। নালা বা নর্দমায় পানি জমতে দেবেন না এবং নিয়মিত সেগুলো পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করুন।

মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ করা

মশার সংখ্যা কমানোর জন্য কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন। যা ডেঙ্গুর ঝুঁকি কমাবে। বাড়ির আশেপাশে মশার স্প্রে বা ফগিং করার ব্যবস্থা করতে পারেন, যা মশা নিধনে কার্যকর।

মশারোধক গাছ-ঝাল লাগান

তুলসী, লেবু ঘাস এবং নিম গাছের মতো মশারোধক গাছ লাগাতে পারেন। যা মশাকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। জানালা ও দরজায় মশার জাল লাগান। যাতে মশা ঘরে প্রবেশ করতে না পারে।

পর্যাপ্ত হাইড্রেশন এবং পুষ্টি নিশ্চিত করা

ডেঙ্গু হলে শরীরের পানি শূন্যতা হতে পারে, তাই হাইড্রেটেড থাকা  গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায়। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন যাতে শরীরে পানির ঘাটতি না হয়।  ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, যেমন ফল, শাকসবজি, প্রোটিন ইত্যাদি।

সচেতনতা বৃদ্ধি

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা দরকার। বিশেষ করে যারা মশা-বাহিত রোগ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদেরকে সচেতন করে তোলা উচিত। স্কুল, কলেজ বা কর্মস্থলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ নিয়ে প্রচারণা চালানো যেতে পারে, যাতে সবাই সচেতন হয়।

সামাজিক উদ্যোগ

সমাজের সবাই মিলে মশা নির্মূল অভিযানে অংশগ্রহণ করতে পারে, যেমন আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখা, মশা নিধন স্প্রে ব্যবহার করা ইত্যাদি।

ডেঙ্গুর লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকা

ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া যায়। ডেঙ্গুর সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে জ্বর, মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, গিঁটে এবং মাংসে ব্যথা, র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি, এবং ক্লান্তি উল্লেখযোগ্য। যদি ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দেয় তবে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।

ডেঙ্গুর প্রাথমিক চিকিৎসা

ডেঙ্গু হলে যথাযথ চিকিৎসা নেওয়া এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। প্যারাসিটামল দিয়ে জ্বর নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে, তবে অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন এড়িয়ে চলা উচিত। ডেঙ্গু হলে শরীরে পানির ঘাটতি হতে পারে, তাই পর্যাপ্ত পানি এবং ফলের রস পান করতে হবে।

ডাক্তারি পরামর্শ

ডেঙ্গু প্রতিরোধে বা আক্রান্ত হলে সবসময় একজন পেশাদার ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ডেঙ্গুর সঠিক চিকিৎসা দ্রুত নিশ্চিত করতে একজন বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া অপরিহার্য।

Link copied!