যারা শখ করে পাখি পোষেন লাভ বার্ড তাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে। লাভ বার্ড একটি বিদেশি জাতের পাখি। অনেক দামি হলেও বর্তমানে গ্রামে বা শহরে অনেকেই বাড়িতে পোষেন এই পাখি। এদের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকে। আগে থেকে জানা থাকলে এর যত্ন নেওয়া সহজ হয়। আজ জানিয়ে দেব লাভ বার্ড পাখির বৈশিষ্ট্য ও কীভাবে পালন করবেন-
লাভ বার্ডের বৈশিষ্ট্য
- লাভ বার্ড টিয়া প্রজাতির পাখি।
- এই পাখি শান্তি প্রিয়, চঞ্চল প্রকৃতির হয়।
- এরা খুব রোমান্টিক হয় ও আনন্দপূর্ণ থাকে।
- এই পাখি মাত্র ৫-৭ ইঞ্চি বা ১৩-১৭ সেন্টিমিটার লম্বা হয় ।
- এরা ১০-১২ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।
- খুব সহজেই এবং অল্প জায়গাতেই এদের লালন পালন করা যায় ।
- লাভ বার্ড এই পাখির লালনপালন খরচ অনেক কম ।
- সবচেয়ে ভালো বিষয় হলো এই পাখি বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে খুব ভালোভাবে মানিয়ে চলতে পারে।
এদের পালনে যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে
লাভ বার্ড খুব কম খায় ও খাবার নষ্টও করে কম। লাভ বার্ড এর খাবার তালিকায় রয়েছে- কাউন, চিনা, বারজা, তিসি, সূর্যমুখী ফুলের বিচি, কুসুম ফুলের বিচি, সরিষা, ধান, বিভিন্ন ধরনের ফল এবং কচি ঘাসের পাতা ও সবজি। একটি পাখি দিনে প্রায় ৪০-৬০ গ্রাম খাবার খেতে পারে। লাভ বার্ড প্রতিদিন প্রচুর পানি পান করে। এদের খুব নিরিবিলি পরিবেশে রাখতে হয় কারণ এরা শান্তি প্রিয় পাখি।
- লাভ বার্ড তাদের ধারাল দাঁত দিয়ে সারাক্ষণ কামড়ায়। তাই খেয়াল রাখতে হবে পাখির খাঁচায় যেন পলিথিন বা প্লাস্টিক জাতীয় পাত্র না থাকে । কোনো কারণে প্লাস্টিক কেটে খেয়ে ফেললে, অসুস্থ বা মারা যেতে পারে।
- একটি খাঁচায় তিন জোড়া পাখি থাকলে সবগুলো বাক্স বা কলসি একই উচ্চতায় দিতে হবে । তা না হলে বাসা নিয়ে মারামারি করে সকলেই আহত হতে পারে।
- লাভ বার্ড মূলত ১০ বা ১১ মাস বয়সেই ডিম দেয়। তাই উক্ত সময়েই প্রতি জোড়া পাখির জন্য ৮ x ৮ x ৮ মাপের কাঠের বাক্স বা মাঝারি সাইজের পাখির জন্য তৈরি কলসি দিতে হবে।
- এ পাখি প্রতিবারে ৫-৮ টি ডিম দিয়ে থাকে কিন্তু এর মধ্যে সাধারণত ৪ টি বাচ্চা পাওয়া যায়।
- লাভ বার্ড ডিম দেওয়ার ২২–২৫ দিনের মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়। এদের বাচ্চাদের মুক্ত করে দিতে সময় লাগে ৪০-৫০ দিন। কারণ বাচ্চা ২০-২৫দিন পাখির বাসার ভেতর থাকে। তারপর পূণরায় ডিম দেওয়ার জন্য এরা নিজেকে প্রস্তুত করে।
- খাঁচায় থাকার কারণে পাখি অনেক ভিটামিন, মিনারেল গ্রহণ করতে পারে না। এজন্য পাখি চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ও মিনারেল খাওয়াতে হবে।
এদের জীবাণুমুক্ত খাবার এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে।