গ্রীষ্মকালে ত্বক নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো র্যাশ বা চুলকানির সমস্যা। গরমে অতিরিক্ত ঘাম, ধুলাবালি, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ এবং সংক্রমণের কারণে ত্বকে লালচে ফুসকুড়ি বা দানাদানা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় এসব র্যাশ অস্বস্তিকর চুলকানিরও কারণ হয়ে উঠে। বিশেষ করে শিশু ও সংবেদনশীল ত্বকের মানুষদের জন্য এটি খুব সাধারণ সমস্যা। কয়েকটি সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। চলুন জেনে নেই, গরমে র্যাশ উঠলে কী করবেন এবং কী এড়িয়ে চলবেন।
ত্বক পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন
র্যাশ মূলত ঘামের কারণে হয়। অতিরিক্ত ঘাম ত্বকের ছিদ্র বন্ধ করে দেয়, ফলে সেখানে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে। তাই র্যাশ প্রতিরোধের প্রথম ধাপ হলো ত্বক পরিষ্কার এবং শুষ্ক রাখা। দিনে অন্তত দুইবার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করুন। বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর অবশ্যই গোসল করুন। যেসব অংশে বেশি ঘাম হয় যেমন গলা, বগল, পিঠ, ঘাড় ও কুচকির অংশ, সেগুলো আলাদাভাবে ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করুন
র্যাশ প্রতিরোধে ট্যালকম পাউডার খুব উপকারী। এটি ঘামের আর্দ্রতা শুষে নিয়ে ত্বক শুষ্ক রাখতে সাহায্য করে। তবে খুব বেশি পাউডার ব্যবহার না করে হালকা করে প্রয়োগ করুন। বেবি পাউডারও ব্যবহার করা যেতে পারে। কারণ এটি ত্বকে কোমল এবং সংবেদনশীল ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত।
আরামদায়ক কাপড় পরুন
গরমে র্যাশের অন্যতম কারণ হলো ঘাম আটকে যাওয়া। তাই চেষ্টা করুন হালকা, ঢিলেঢালা পোশাক পরতে। কৃত্রিম ফাইবার বা সিনথেটিক কাপড়ে ঘাম আটকে যায় এবং ত্বক ঘেমে র্যাশ তৈরি করে। রঙের দিক থেকেও হালকা রঙ বেছে নেওয়া উচিত। কারণ তা সূর্যের তাপ প্রতিফলিত করে।
প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করুন
র্যাশ নিরাময়ে কিছু প্রাকৃতিক উপাদান খুবই কার্যকর। এলোভেরা জেল, এটি ত্বকের প্রদাহ কমায়। ঠাণ্ডা অনুভূতি দেয় এবং চুলকানি দূর করে।চন্দন ও গোলাপ জল একসঙ্গে মিশিয়ে লাগালে র্যাশে ঠাণ্ডা আরাম পাওয়া যায়। শসার পেস্ট লাগালে ত্বকের জ্বালাভাব কমবে।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
গরমে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়ে, যার প্রভাব পড়ে ত্বকেও। পর্যাপ্ত পানি পান করলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ঘামের মাধ্যমে ক্ষতিকর টক্সিন বেরিয়ে যায়। এতে করে র্যাশ হওয়ার প্রবণতা কমে যায়। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন।
বাইরে বের হওয়ার সময় সতর্ক থাকুন
রোদে বের হওয়ার আগে ছাতা ব্যবহার করুন। হালকা রঙের ঢিলেঢালা জামা পরুন এবং চেষ্টা করুন সরাসরি সূর্যের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে। দীর্ঘ সময় রোদে থাকার পর ঘরে ফিরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করুন বা মুখ-হাত ধুয়ে নিন।
ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিন
যদি ঘরোয়া উপায়ে র্যাশ কমে না যায় বা র্যাশ খুব বেশি ছড়িয়ে পড়ে, ফুসকুড়ি ফেটে পানি বের হতে থাকে বা ইনফেকশনের মতো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অনেক সময় ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন বা ফাঙ্গাসজনিত সমস্যাও র্যাশের কারণ হতে পারে, যেগুলোর জন্য ওষুধ প্রয়োজন হয়।