• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাচ্চার স্কুলব্যাগের ওজন কত হওয়া উচিত


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৪, ০৫:৩৯ পিএম
বাচ্চার স্কুলব্যাগের ওজন কত হওয়া উচিত
ছবি: সংগৃহীত

সময় যত যাচ্ছে, লেখাপড়ার চাপ ততই বাড়ছে। ছোট বয়সেই বেশি পড়া পড়তে হয়। স্কুলে যেতে সঙ্গে নিতে হয় পাঠ্য বই আর খাতা। প্রায় বেশ কয়েকটি বই-খাতা প্রতিদিনই বহন করতে হচ্ছে খুদে বাচ্চাদের। এতে স্কুল ব্যাগের ওজনও বাড়ছে। প্রতিদিন ভারী ব্যাগ বহন করে অনেক বাচ্চা পিঠের ব্যথায় ভুগছেন। এমনকি মেরুদণ্ডের সমস্যাও জচ্ছে। যা থেকে পরিত্রানের উপায় পেতে ছুটতে হচ্ছে চিকিত্সকের কাছে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, খুদে পড়ুয়াদের অধিকাংশই পিঠের ব্যথা আর মেরুদণ্ডের সমস্যায় ভুগছে। প্রতিদিন পিঠে ভারী স্কুলব্যাগ নেওয়ায় তাদের মেরুদণ্ডে চাপ পড়ছে। যার ফলে অল্প বয়সেই  মেরুদণ্ড বেঁকে যেতে পারে এবং শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। স্কুলব্যাগের ওজন বহনের কারণে পিঠে, মেরুদণ্য ও স্নায়ুতে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়তে পারে। মেরুদণ্ডের জটিল অসুখ স্কোলিয়োসিসে আক্রান্ত হতে পারে খুদে পড়ুয়ারা।

বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, স্কোলিয়োসিস হলো মেরুদণ্ডের গঠনগত সমস্যা। প্রচণ্ড চাপ পড়লে মেরুদণ্ড সোজা হয়ে বাড়তে পারে না। এক্ষেত্রে মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে বৃদ্ধি পায়। ভারী স্কুলব্যাগ বহন করার কারণে ছোটরা ‘জুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক স্কোলিয়োসিস’-এ আক্রান্ত হচ্ছে। যা ছোটদের ফিটনেসের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ১০ বছর বয়সের পর থেকে শিশুদের মেরুদণ্ড দ্রুত বাড়তে থাকে। ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত তাদের উচ্চতা বাড়ে। কিন্তু এর আগেই যদি মেরুদণ্ডের বৃদ্ধি থমকে যায়, তা বিপজ্জনক হতে পারে। ভারী ব্যাগ বহনে মেরুদণ্ডের হাড়, দুই হাড়ের মাঝের ‘ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্ক’, লিগামেন্ট, মাংসপেশি, মেরুদণ্ডের মাঝে যে স্নায়ু আছে, সবই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যার কারণে অস্ত্রোপচার ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।

এই অবস্থা থেকে পরিত্রানের জন্য ভারী স্কুলব্যাগ বহন থেকে বিরত থাকতে হবে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, স্কুলব্যাগের নির্দিষ্ট ওজন থাকা প্রয়োজন। যা শিশুরা সহজেই বহন করতে পারবে। বিশেষ করে স্কুল পড়ুয়াদের ব্যাগের ওজন শরীরের ওজনের থেকে ১৫ শতাংশের বেশি হওয়া একেবারেই উচিত নয়। ভারী ব্যাগ প্রতিদিন যেন বহন করতে না হয়, সেজন্য স্কুলে পৃথক লকারের ব্যবস্থা রাখতে পারে।

সাধারণত স্কুল ব্যাগে ৭-৮টা বই, একগুচ্ছ খাতা, স্কুল ডায়েরি, পেন বাক্স, টিফিন বাক্স, পানির বোতল, ছাতা বা রেইনকোর্ট, ক্যারাটে বা পিটি-র ক্লাসের জন্য আলাদা পোশাক থাকে। সবমিলিয়ে ওজন বেশি হবেই। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষের উচিত, বয়স অনুযায়ী শিশুর স্কুল ব্যাগের বহন ক্ষমতা যাচাই করা। কারণ শিশুর ভবিষ্যত গড়তে গিয়ে যেন স্বাস্থ্য কোনোভাবেই হুমকির মুখে না পড়ে। তাই শিশুর বয়স অনুযায়ী পিঠের ব্যাগের ওজন হওয়া জরুরি।

স্কুল ব্যাগের ওজন কত হওয়া জরুরি

প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির স্কুলপড়ুয়াদের ব্যাগের ওজন হতে হবে ১ থেকে দেড় কেজি। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের ব্যাগের ওজন হওয়া উচিত ২-৩ কেজি। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের স্কুল ব্যাগের ওজন ৩-৪ কেজি। নবম এবং দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের ব্যাগের ওজন ৫ কেজি।

তাছাড়া শিশুদের ব্যাগের ভার দুই কাঁধেই সমানভাবে নিতে হবে। তাই স্কুল ব্যাগে অবশ্যই দুটো স্ট্র্যাপ থাকা জরুরি। ব্যাগ যেন কোমরের নীচে না ঝুলে থাকে। এক কাঁধে ব্যাগ নিলেই পিঠ-কোমরে চাপ পড়ে। টিফিন বাক্স, পানির বোতলের জন্য হাতব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে। শিশু পিঠ বা কোমরে ব্যথা অনুভব করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Link copied!