• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিশুর গোসলের সময় যা খেয়াল রাখা জরুরি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২৪, ০৫:২৪ পিএম
শিশুর গোসলের সময় যা খেয়াল রাখা জরুরি
ছবি: সংগৃহীত

শিশুর গোসল করানো একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। যা সঠিক যত্ন ও সচেতনতা নিয়ে করতে হয়। শিশুর ত্বক খুবই সংবেদনশীল এবং তার শারীরিক গঠন সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হয় না। তাই গোসলের সময় বিশেষ  সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। শিশুর গোসল করানোর সময় যেসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে_

তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ

শিশুর ত্বক প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় অনেক বেশি সংবেদনশীল। তাই গোসলের পানির তাপমাত্রা অবশ্যই সঠিক হওয়া উচিত। শিশুর জন্য ঠাণ্ডা কিংবা অতিরিক্ত গরম পানি বিপজ্জনক হতে পারে। সাধারণত ৩৭-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার পানি শিশুর জন্য আরামদায়ক। যদি তাপমাত্রা পরিমাপ করার থার্মোমিটার না থাকে, তাহলে কনুই দিয়ে পানির তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে পারেন। গোসলের আগে পানি  গরম করুন। দীর্ঘ সময় পানি রেখে দিলে তাপমাত্রা কমে যাবে।

গোসলের স্থান এবং পরিবেশ

শিশুর জন্য একটি নিরাপদ এবং আরামদায়ক গোসলের স্থান তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুরা গোসলের সময় বেশি নড়াচড়া করতে পারে। তাই তাদের গোসলের স্থানটি সুরক্ষিত হওয়া উচিত। বাথটাব বা গোসলের টবের নিচে একটি অ্যান্টি-স্লিপ মাদ বিছিয়ে রাখুন। যাতে পিছলে না যায়। ছোট একটি বেবি বাথটাবও ব্যবহার করতে পারেন। গোসলের ঘরটি আরামদায়ক এবং হালকা গরম হওয়া উচিত। শীতল পরিবেশ শিশুর জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে। গোসলের সরঞ্জাম আগে থেকে প্রস্তুত রাখুন। তেল, শ্যাম্পু, তোয়ালে এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম হাতের নাগালের মধ্যে রাখুন। শিশুকে একা রেখে অন্য জায়গায় গেলে খুবই বিপজ্জনক হতে পারে।

শিশু ধরে রাখার পদ্ধতি

শিশুরা ছোট এবং দুর্বল হয়। তাদের ধরে রাখার সঠিক পদ্ধতি জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর মাথা এবং ঘাড়ের সঠিক সাপোর্ট দেওয়া খুব জরুরি। সাধারণত এক হাতে শিশুর মাথা এবং ঘাড় ধরে রাখুন, আরেক হাতে তার শরীর ধুতে থাকুন। শিশুরা সহজে স্লিপ করতে পারে, তাই খুব ধীরে ধীরে এবং কোমলভাবে শিশুকে ধরে রাখুন।

সঠিক সাবান ও শ্যাম্পুর ব্যবহার

শিশুর ত্বক ও চুলের জন্য আলাদা সাবান এবং শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত। বাচ্চাদের জন্য যেসব পণ্য ব্যবহার করা হয়, তা সাধারণত অতিরিক্ত রাসায়নিকমুক্ত এবং কোমল হয়। শিশুদের জন্য তৈরি বিশেষ সাবান ও শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। যাতে কোনো ক্ষতিকর রাসায়নিক না থাকে। এ ধরনের প্রোডাক্ট শিশুদের সংবেদনশীল ত্বকের জন্য উপযোগী। শিশুর মাথায় শ্যাম্পু করার সময় চোখে যেন না ঢুকে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। শ্যাম্পু খুব অল্প পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত।

পরিষ্কার করার পদ্ধতি

শিশুর গোসলের সময় পরিষ্কার করার জন্য সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা প্রয়োজন। শিশুর শরীর ধোয়ার জন্য নরম এবং মোলায়েম কাপড় ব্যবহার করুন। সরাসরি শিশুর ত্বক ঘষা উচিত নয়। কারণ এটি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। শিশুর শরীরের বিভিন্ন ভাঁজ, যেমন- গলা, হাতের নিচ, এবং পায়ের ফাঁক, ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। এই জায়গাগুলোতে সহজেই ময়লা জমে যেতে পারে।

গোসলের পরে যত্ন

গোসলের পর শিশুর যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গোসলের পর শিশুর ত্বক একটু শুষ্ক হতে পারে। শিশুর ত্বক ধীরে ধীরে তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন। খুব বেশি ঘষা উচিত নয়, কারণ শিশুর ত্বক নরম। শিশুর ত্বককে নরম এবং ময়েশ্চারাইজ রাখতে বেবি লোশন বা তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে অতিরিক্ত তেল বা লোশন ব্যবহার করবেন না। শিশুকে গোসলের পরপরই উষ্ণ এবং আরামদায়ক পোশাক পরিয়ে দিন। যেন ঠাণ্ডা না লাগে।

শিশুর প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ

গোসলের সময় শিশুর প্রতিক্রিয়ার দিকে খেয়াল রাখুন। যদি শিশু অস্বস্তি বোধ করে বা কান্না করে, তাহলে গোসলের সময় পরিবর্তন বা পরিবেশে পরিবর্তন আনুন। শিশুর নিরাপত্তা, আরাম এবং সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে গোসল করানো উচিত।

Link copied!