• ঢাকা
  • রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

প্লাস্টিকের বক্সে খাবার সংরক্ষণ করলে কী হয়


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৪, ১২:১১ এএম
প্লাস্টিকের বক্সে খাবার সংরক্ষণ করলে কী হয়
ছবি: সংগৃহীত

প্রায় প্রত্যেকটি বাড়িতেই প্লাস্টিকের বক্সের ব্যবহার বেড়েছে। খাদ্য সরবরাহ কিংবা মশলা সংরক্ষণের জন্য প্লাস্টিকের বক্স ব্যবহার হচ্ছে। বিশেষ করে ওয়ান টাইম কিংবা টেক আউট বক্স ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কিন্তু এসব বক্স নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত নয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা জানান, প্লাস্টিকের বক্সের গরম খাবার রাখা এবং পরবর্তী সময়ে তা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই অভ্যাস শরীরে  ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। কারণ গরম খাবার বহন করার সময় প্লাস্টিকের  বক্স থেকে বিষাক্ত পদার্থ নির্গত হয়। যা হরমোনের ব্যাঘাত ঘটায়। সেই সঙ্গে বন্ধ্যাত্ব, মস্তিষ্কের বিকাশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়া, ডায়াবেটিস এবং স্থূলতার মতো সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।

সম্প্রতি হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল কর্তৃক হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিংয়ের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্লাস্টিক তাপের সংস্পর্শে এলে অধিক মাত্রায় দ্রুত ক্ষরণ হয়। তাই প্লাস্টিকের বক্সে থাকা খাবার খেলে অনেক ক্ষতিকর রাসায়নিকও শরীরে প্রবেশ করে। 

ইউএস সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) দ্বারা পরিচালিত এক গবেষণায় জানা যায়, প্লাস্টিকের বক্সে পাওয়া ক্ষতিকর যৌগগুলোর মধ্যে থ্যালেটস অন্যতম। এর কারণে প্লাস্টিক আরও টেকসই হয়। কিন্তু এটি মানুষের প্রজনন ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে হাঁপানির সমস্যাও বাড়িয়ে দেয়।

এছাড়াও তাপের কারণে খাবারে প্লাস্টিকের আরেকটি ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপাদান বিসফেনল-এ প্রবেশ করে। গবেষকদের মতে, বিসফেনল স্তন ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। এটি শরীরের হরমোনের সঙ্গে মিশে যায়। যার কারণে বন্ধ্যাত্ব এবং স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। সৃষ্টি করে।

এদিকে নবজাতক ও শিশু মস্তিষ্ক এবং প্রজনন ক্ষমতা হ্রাসের কারণে প্রস্তুতকারকরা প্লাস্টিকের বক্সে বিপিএ ফ্রি করার জন্যে বিসফেনল-এ এর পরিবর্তে বিসফেনল এস (বিপিএস) এবং বিসফেনল (বিপিএফ) ব্যবহার করছেন বলে দাবি করেন। কিন্তু এতেও প্লাস্টিকের বক্সের গুণগত মানের কোনো উন্নতি হচ্ছে না বলে সতর্ক করেছেন গবেষকরা।

প্লাস্টিকের বক্সের বিকল্প হিসেবে আরও সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী পণ্যের ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল কন্টেইনার সাশ্রয়ী এবং প্লাস্টিকের বক্সের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, প্লাস্টিকের বক্সের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। প্লাস্টিক পণ্য থেকে গরম খাবার খাওয়ার যে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ে তা জনসাধারণকে জানাতে হবে। রেস্তোরাঁ কিংবা বাড়িতে প্লাস্টিকের বক্সের ব্যবহার কমিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা নিলেই স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানো সম্ভব হবে।

Link copied!