দুধ স্বয়ংসম্পূর্ণ খাবার। যা নিয়মিত পানে শরীর অনেক পুষ্টি পায়। তবে পুষ্টিগুণ ঠিক রাখতে দুধকে সঠিক উপায়ে জ্বাল করে নেওয়া উচিত। নয়তো দুধের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদরা।
১ জুন বিশ্ব দুগ্ধ দিবস। দুধ পানের প্রয়োজনীয়তা এবং এর পুষ্টিগুণের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতেই দিবসটি বিশ্বজুড়ে পালন হয়। ছোট বড় সবারই নিয়মিত দুধ পান করতে হয়। হাড় শক্ত করতে, শরীরে ক্যালসিয়ামের যোগান দিতে দুধ পানের জুড়ি নেই।
খাওয়ার আগে দুধ জ্বাল করে নেওয়া হয়। জ্বাল দেওয়ার সময় সামান্য ভুলের কারণ পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই এই বিষয়ে সঠিক ধারণা থাকা প্রয়োজন।
আগের দিনে গৃহপালিত পশু থেকে দুধ সংগ্রহ করা হতো। সেই দুধ জ্বাল করে পান করা হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে প্যাকেটজাত তরল দুধই কিনে খাওয়া হয়। বিশেষ করে শহরাঞ্চলের মানুষেরা প্যাকেটের দুধই পান করেন। প্যাকেটের দুধ জ্বাল করে ফুটিয়ে পান করা হয়। অনেকে তো একাধিকবার একই দুধ গরম করেও পান করে থাকেন। যা কতটা স্বাস্থ্যসম্মত তা কি জানেন? দুধ ঠিক কতবার জ্বাল দেওয়া যায় কিংভা বেশি দুধ গরম করলে কিংবা বারবার জ্বাল দিলে দুধের পুষ্টিগুণ কমে বা নষ্ট হয়ে যায় কিনা তা ধারণা রাখতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, প্যাকেটজাত দুধে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। যা পেটের সংক্রমণ বাড়াতে পারে। তাই দুধ ফুটিয়ে নেওয়া ভালো। তবে যে ধরনের দুধই দুইবার জ্বাল দেওয়াই যথেষ্ট। এর থেকে বেশি জ্বাল দিলে দুধে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়াগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। পুষ্টিগুণও কমে যায়। বার বার দুধ জ্বাল করে নিলে দুধে থাকা প্রোটিন, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। দুধে উপস্থিত ভিটামিন ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। বারবার দুধ জ্বাল দিলে এই ভিটামিনের পরিমাণও কমে যায়। যার ফলে দুধের সঠিক পুষ্টিগুণ শরীর পায় না। হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্যও উন্নত হয় না।
যা করতে হবে
দুধের পুষ্টিগুণ ঠিক রাখতে সামান্য পানি মিশিয়ে অল্প আঁচে জ্বাল করে নিতে হবে। অনেকে পুরো দুধ একবার ফুটিয়ে ফ্রিজে রেখে দেন। এরপর প্রয়োজনমতো দুধ গরম করে পান করেন। এটিও দুধের পুষ্টিগুণ কমিয়ে দেয়। তাই দুধ যতটুকু খাবেন ততটুকুই জ্বাল করে নিন।
যতক্ষণ দুধ জ্বাল করবেন, ততক্ষণ একটি চামচ দিয়ে নেড়ে দিন। এতে দুধের উপরে সর পড়বে না। দুধের যাবতীয় পুষ্টিগুণও ঠিক থাকবে। বেশি আঁচে দুধ জ্বাল দেওয়া যাবে না। এতে পুষ্টিগুণ কমে যাবে। তাই বেশি আঁচে কিছুক্ষণ রেখে এরপর আঁচ কমিয়ে দিন। অল্প আঁচে দুধ ফুটিয়ে নিন। ফুটতে শুরু করলেই চুলার আঁচ বন্ধ করে নিন। এরপর প্রয়োজনমতো ঠান্ডা করে পান করুন। দুধের সঠিক পুষ্টিগুণ পাওয়া যাবে।
সূত্র: এবিপি নিউজ