পবিত্র রমজান মাসে রোজা পালন করে বিশ্বের মুসলিমপ্রধান দেশগুলো। ধর্ম অনুসারে রোজা রাখার নিয়ম একই। তবে ভিন্নতা রয়েছে রীতিনীতি ও খাবারে। ভিন্নতা রয়েছে আয়োজনেও।
বিশ্বে মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইরান। ভূ-রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ এটি। যার ৯২ শতাংশ মানুষ মুসলিম। এই দেশেও পবিত্র রমজান মাসে রোজা রাখা হয়। ইফতার ও সাহরিতে থাকে নানা আয়োজন। জানেন কি, ইরানে মুসলিমরা সাহরি ও ইফতারে কেমন আয়োজন করেন।
জানা যায়, ইরানে ইফতার আয়োজন হয় বিশাল পরিসরে। বাংলাদেশের মতোই ফল, পানীয় থাকে ইফতারের প্রধান খাবার। সেই সঙ্গে মিষ্টি পদ যোগ হয়। সেখানকার জনপ্রিয় মিষ্টি পদ জুলবিয়ে। যা দেখতে পাতলা চিকন পেঁচানো। বলা যায়, বাংলাদেশের জিলাপিকেই ইরানে জুলবিয়ে নামে পরিচিত। তবে বাংলাদেশে জিলাপি সারাবছর পাওয়া গেলেও ইরানে এই খাবারটি পাওয়া যায় শুধু রমজান মাসেই। অনেকের ধারণা,বাংলাদেশের জিলাপি নাকি ইরানের এই জুলবিয়ে থেকে এসেছে। যদিও এর কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
ইরানে ইফতার আয়োজনে আরও থাকে বামিয়ে। এটিও মিষ্টি পদ। যা স্বাদে অনেক মিষ্টি হয়। এর সঙ্গে জাফরান ও গোলাপজলের স্বাদ মেশানো থাকে। যা রোজাদারদের তৃপ্তি দেয়। আরও থাকে স্যান্ডউইচ, চা, তাবরেজি চিজ ইত্যাদি।
ইরানে ইফতারে আরও একটি জনপ্রিয় খাবার হচ্ছে শোলে জার্দ। প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরেই এটি বানানো হয়। চাল, চিনি আর জাফরান এই খাবারের মূল উপাদান। এটি এক ধরনের পুডিং। যা ইরানিদের খুব প্রিয়।
এছাড়াও রুটি, স্যুপ, র্যাপ, কাবাবের মতো সুপরিচিত খাবারও থাকে ইফতারের আয়োজনে। ঘরে ঘরে তৈরি হয় জাফরানের ঘ্রাণযুক্ত এক ধরনের ঐতিহ্যবাহী পার্শিয়ান হালুয়া। পার্শিয়ান নুডুলস, সবজি, পেঁয়াজ, বিন ইত্যাদি দিয়ে তৈরি হয় আশ রাসতেহ নামক ঘন স্যুপ ও হালিম। ইফতারের আয়োজনে বেশ আগ্রহ নিয়ে খাওয়া হয় এই খাবার।
ইরানিদের ইফতারে আরও জনপ্রিয় ফল। সেখানে ইরানি ফলের সমারোহ দেখা যায়। এর মধ্যে খেজুর তো থাকেই। ইফতার টেবিলে এর উপস্থিতি অনেকটাই অপরিহার্য। সঙ্গে আরও থাকে আপেল, চেরি, তরমুজ, তলেবি বা একধরনের বাঙ্গি, কলা ও আঙুর। সারাদিন রোজা শেষে ফল খেতে তারা বেশ পছন্দ করেন।