পাওয়া-না পাওয়া নিয়েই জীবন। কিছু আশা পূরণ হবে, আবার কিছু অপূরণই রয়ে যাবে। জীবনকে পারফেক্ট করার চেষ্টায় মশগুল থাকে সবাই। যখনই ব্যর্থ হয় তখনই মানসিক চাপ ভর করে। কারো কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত ব্যবহার না পেলেও মানসিক অশান্তি গ্রাস করে। মানসিক চাপের কারণে বাড়ে অস্থিরতা। অতি উত্তেজনায় মন অশান্ত হয়ে যায়। কাজে অমনোযোগী হওয়া, রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটানো, কারো সঙ্গ ভালো না লাগা, একাকীত্ব, বোধশক্তহীন হয়ে পড়া, কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলাসহ কত সমস্যাই না হতে থাকে। দীর্ঘ সময় এমন উত্তেজনা ও বোধশক্তিহীনতার মধ্যে থাকলেই হতে পারে মানসিক রোগও। তাই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে নিজের অশান্ত মনকে শান্ত করার উপায় জানতে হবে। কাজের গতিকে স্বাভাবিক রাখতে এখনই আত্মমমতার চর্চা করুন।
কঠিন সময়ে কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো পরিস্থিতিতে নিজের মনকে শান্ত করার জন্য কী করতে পারেন এবং কীভাবে আত্মমমতার চর্চা করবেন, চলুন জেনে নেই এই আয়োজনে।
কোনো ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই সাময়িক উত্তেজনায় নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া যাবে না। অনেকে খুব বেশি নার্ভাস হয়ে পড়েন। আবার অনেকে বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এই অবস্থায় বুক ধড়ফড় করছে কি না, হাত–পা কাঁপছে কি না, মাথা, ঘাড় বা শরীরের আর কোথাও কোনো অস্বস্তি হচ্ছে কি না তা খেয়াল করুন। ধীরস্থির থাকুন। এই সময় মস্তিষ্কের যৌক্তিক ও সমস্যা সমাধানকারী অংশ সক্রিয় হবে। যার কারণে মন শান্ত হবে।
কোনো ঘটনা ঘটার পর অস্থিরতা বেড়ে গেলে শরীরে অক্সিজেন ও পানির স্বল্পতা হয়। যার কারণে অনেকের ঠোঁট ও গলা শুকিয়ে যায়। দমবন্ধ অনুভব হয়। তাই অস্থিরতা বেড়ে গেলেই পানি পান করুন। জোরে শ্বাস নিন। শরীরে অক্সিজেন ও পানির ঘাটতি পূরণ হবে। নাক দিয়ে ধীরে ধীরে নিশ্বাস নিন এবং মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এই মাইন্ডফুল ব্রিদিং শরীরে অক্সিজেনকে স্বাভাবিক রাখে। শরীর ও মন কিছুক্ষণের মধ্যেই শান্ত হবে।
কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলে সমস্যা সমাধানের জন্য প্রস্তুত করুন। নিজের প্রতি সদয় হোন। নিজের ভালো দিকটা ভাবুন। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও মনোবিজ্ঞানী ক্রিস্টিন নেফ একাধিক গবেষণায় দেখেছেন, কঠিন পরিস্থিতিতে নিজের যত্ন নিয়ে, নিজের প্রতি সদয় হলে নিজের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করা সহজ হয়। মনও শান্ত থাকে।
নিজের মনকে শান্ত রাখতে পছন্দের কাজগুলো করুন। যা করতে ভালো লাগে, যেখানে যেতে ভালো লাগে ঘুরে আসুন। বই পড়া, বাগান করা, নিয়মিত হাটতে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোসহ বিনোদনের মাধ্যমগুলোতে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়।