ব্যস্ত জীবনে ওয়াশিং মেশিন গৃহস্থালির অন্যতম অপরিহার্য সরঞ্জাম হয়ে উঠেছে। এটি সময় এবং শ্রম দুটোই বাঁচায়। কাপড় পরিষ্কারের কাজকে করে তোলে আরও সহজ। তবে অনেকেই সঠিক নিয়ম না জানার কারণে ওয়াশিং মেশিন ব্যবহারে নানা সমস্যায় পড়েন। কাপড় ঠিকমতো পরিষ্কার না হওয়া, মেশিনের আয়ু কমে যাওয়া বা অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসা। তাই ওয়াশিং মেশিন সঠিকভাবে ব্যবহার করা জরুরি।
উপযুক্ত মেশিন নির্বাচন
প্রথমেই, আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত ওয়াশিং মেশিন বেছে নেওয়া দরকার। ওয়াশিং মেশিন মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে_সেমি-অটোমেটিক, এতে দুটি আলাদা অংশ থাকে। একটি ধোয়ার জন্য এবং অন্যটি শুকানোর জন্য। এটি অপেক্ষাকৃত কম দামে পাওয়া যায়, তবে কিছুটা ম্যানুয়াল কাজ করতে হয়। ফুল অটোমেটিক, সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে। শুধু কাপড় ও ডিটারজেন্ট দিয়ে দিলেই বাকি কাজ নিজে করে। এটি সময় ও শ্রম সাশ্রয়ী।
কাপড় বাছাই করে ধোয়া
সব ধরনের কাপড় একসঙ্গে ধোয়া উচিত নয়। হালকা ও ভারী কাপড় আলাদা করে ধোয়া ভালো। রঙিন ও সাদা কাপড় আলাদা করে রাখলে রঙ ছড়ানোর ঝুঁকি কমে। এছাড়া কাপড়ের ট্যাগে দেওয়া নির্দেশনা দেখে তাপমাত্রা ও ধোয়ার নিয়ম বুঝে নেওয়া উচিত।
সঠিক ডিটারজেন্ট ব্যবহার
ওয়াশিং মেশিনে ব্যবহারের জন্য আলাদা ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা উচিত। সাধারণ সাবান বা গুঁড়া ডিটারজেন্ট অনেক সময় অতিরিক্ত ফেনা তৈরি করে। যা মেশিনের কার্যক্ষমতায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে। হাই-এফিশিয়েন্সি ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা সবচেয়ে নিরাপদ।
নির্দিষ্ট পরিমাণে কাপড় ও ডিটারজেন্ট দিন
ওয়াশিং মেশিনে নির্ধারিত পরিমাণ কাপড় ও ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা জরুরি। অতিরিক্ত কাপড় দিলে মেশিন ঠিকভাবে পরিষ্কার করতে পারে না। আবার বেশি ডিটারজেন্ট দিলে মেশিনে অবশিষ্ট ফেনা জমে সমস্যা হতে পারে।
ধোয়ার উপযুক্ত মোড নির্বাচন
প্রতিটি মেশিনেই বিভিন্ন ওয়াশ মোড থাকে_ডেলিকেট, কুইক ওয়াশ, হেভি ডিউটি, কটন, সিনথেটিক ইত্যাদি। কাপড় অনুযায়ী সঠিক মোড বেছে নেওয়া জরুরি। এতে করে কাপড়ও ভালো থাকে, আবার ধোয়ার কার্যকারিতাও বাড়ে।
মেশিনের পরিষ্কার-পরিচর্যা
ওয়াশিং মেশিন ব্যবহারের পাশাপাশি নিয়মিত পরিষ্কার করাও অত্যন্ত জরুরি। অন্তত মাসে একবার ড্রাম পরিষ্কার করুন। অনেক মডেলে "ড্রাম ক্লিন" অপশন থাকে, সেটি ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া ফিল্টার, পাইপ ও গ্যাসকেট পরিষ্কার রাখা উচিত যাতে দুর্গন্ধ বা ছাঁচ না পড়ে।
শুকানোর পর ঢাকনা খোলা রাখুন
ধোয়া শেষ হলে মেশিনের ঢাকনা বা দরজা কিছুক্ষণ খোলা রাখুন যেন ভেতরের আর্দ্রতা শুকিয়ে যায়। এতে করে ব্যাকটেরিয়া বা ছাঁচের জন্ম হয় না এবং দুর্গন্ধও হয় না।
বিদ্যুৎ সংযোগ নিরাপদে রাখুন
মেশিন চালানোর সময় সঠিকভাবে প্লাগ ইন করুন এবং ব্যবহারের পর সুইচ বন্ধ করে রাখুন। পানির সংস্পর্শে বিদ্যুৎ লাইনে ঝুঁকি থাকে, তাই নিরাপত্তার দিকে সচেতন থাকা জরুরি। শিশুরা যেন দুর্ঘটনাক্রমে চালু করে ফেলতে না পারে সেদিকেও খেয়াল রাখুন।
নিয়মিত পরিচর্যা, সঠিক ব্যবহারে এই যন্ত্রটির সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে পারবেন। যত্ন করে ব্যবহার করলেই ওয়াশিং মেশিন হবে দৈনন্দিন জীবনের নির্ভরযোগ্য সহকারী।