• ঢাকা
  • বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৬

গরমে শিশুর ত্বকের যত্নে যা অবশ্যই করতে হবে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৫, ২০২৫, ০৮:০০ পিএম
গরমে শিশুর ত্বকের যত্নে যা অবশ্যই করতে হবে
ছবি: সংগৃহীত

গ্রীষ্মকাল মানেই প্রচণ্ড রোদ, ঘাম, ধুলাবালি এবং পানিশূন্যতা। এই সময় বেশি সমস্যায় পড়ে ছোট শিশুরা। শিশুদের ত্বক খুবই কোমল ও সংবেদনশীল। গরমে সঠিক যত্ন না নিলে ঘামাচি, র‍্যাশ, চুলকানি, রোদে পোড়া ত্বকসহ নানা সমস্যা হয়। তাই গরমকালে শিশুদের ত্বকের বিশেষ যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন
শিশুর ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে। প্রতিদিন কুসুম গরম পানিতে গোসল করতে হবে। গোসল করলে শরীরে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া দূর হয় এবং ত্বক  সতেজ থাকে। শিশুর ত্বকে হালকা সাবান ব্যবহার করুন। যেন ত্বক শুষ্ক না হয়।

আরামদায়ক কাপড়
গরমে শিশুর আরাম ও ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য নরম, সুতির কাপড় সবচেয়ে উপযুক্ত। আঁটসাঁট ও সিনথেটিক কাপড় পরালে শিশুর ঘাম বেশি হয়, যা ঘামাচির সৃষ্টি করে। শিশুকে হালকা রঙের এবং ঢিলেঢালা জামা পরিয়ে রাখুন যাতে বাতাস চলাচল করতে পারে।

ঘামাচি প্রতিরোধে পাউডার
ঘামাচি গরমে খুব সাধারণ একটি সমস্যা। শিশুর ঘাড়, পিঠ, বগল বা কুঁচকিতে এটি বেশি দেখা যায়। গোসলের পর হালকা পাউডার ব্যবহার করুন। অবশ্যই মেডিকেটেড বা বেবি পাউডার ব্যবহার করবেন। অতিরিক্ত পাউডার ব্যবহারম করা যাবে না। এটি শিশুর শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা করতে পারে।

রোদ থেকে রক্ষা করুন
গ্রীষ্মকালে রোদের তীব্রতা শিশুদের ত্বকের জন্য খুব ক্ষতিকর। বিশেষ করে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রোদে শিশুকে বাইরে নেওয়া এড়িয়ে চলুন। যদি বের করতেই হয়, তাহলে ছাতা, টুপি বা পাতলা স্কার্ফ ব্যবহার করে মাথা ও শরীর ঢেকে রাখুন। শিশুদের উপযোগী সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে তা অবশ্যই শিশুর ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী করতে হবে।

পর্যাপ্ত পানি ও তরল খাবার
গরমে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বেরিয়ে যায় ঘামের মাধ্যমে। শিশুদের হাইড্রেটেড রাখতে পর্যাপ্ত পানি, ডাবের পানি, ফলের রসসহ (যদি বয়স উপযুক্ত হয়) অন্যান্য তরল খাবার দিতে হবে। শিশুর বয়স ৬ মাসের নিচে হলে শুধুমাত্র বুকের দুধই যথেষ্ট, এতে সে হাইড্রেটেড থাকবে।

মশার কামড় ও অ্যালার্জি থেকে সুরক্ষা
গরমে মশার প্রকোপ বেড়ে যায়, যা শিশুর ত্বকে র‍্যাশ, লালচে দাগ বা ইনফেকশন করতে পারে। তাই শিশুকে মশার কামড় থেকে বাঁচাতে চাইলে মশারি ব্যবহার করুন এবং ঘরের আশেপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। বাইরে গেলে বেবি-ফ্রেন্ডলি মশা নিরোধক লোশন বা স্টিকার ব্যবহার করা যেতে পারে।

ঘন ঘন ডায়াপার পরিবর্তন
গরমে ডায়াপার ব্যবহারে শিশুর ত্বকে র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি হতে পারে। তাই ঘন ঘন ডায়াপার পরিবর্তন করুন এবং প্রতিবার ডায়াপার পরিবর্তনের পর জায়গাটি পরিষ্কার করে ভালোভাবে শুকিয়ে নিন। প্রয়োজনে জিঙ্ক অক্সাইড যুক্ত ডায়াপার র‍্যাশ ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার 
অনেকে মনে করেন গরমে ত্বক শুষ্ক হয় না, তবে শিশুর ত্বক অতিরিক্ত গোসল বা ঘামের কারণে শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। গোসলের পর হালকা, পারাবেন-মুক্ত বেবি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে শিশুর ত্বক নরম ও সজীব থাকবে।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুম
শিশুর ত্বক সুস্থ রাখার জন্য ঘুম এবং বিশ্রাম খুব গুরুত্বপূর্ণ। গরমে অস্বস্তি বেড়ে গেলে শিশুর ঘুম ব্যাহত হতে পারে। তাই ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার ব্যবস্থা করুন। প্রয়োজনে ফ্যান বা এসি ব্যবহার করতে পারেন, তবে শিশুর সরাসরি শরীরে হাওয়া না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ডাক্তারের পরামর্শ যখন নেবেন
যদি শিশুর ত্বকে লালচে ফুসকুড়ি, চুলকানি, ফোলা বা জ্বালাভাব দেখা যায় এবং তা ২-৩ দিনের মধ্যে না সারে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। অনেক সময় এগুলো তাপঘামাচি নয়, বরং অন্য কোনো ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারে।

Link copied!