শহীদ মিনার জাতীয় চেতনার প্রতীক। যেখানে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে লাখো মানুষ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনে যান। এই দিনে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি। খেয়াল রাখতে হবে শ্রদ্ধা নিবেদন যেন সম্মানজনক ও শৃঙ্খলাপূর্ণভাবে সম্পন্ন করা যায়।
পরিচ্ছন্নতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা
শহীদ মিনারে গিয়ে আমাদের সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। ফুল দেওয়ার পর খালি পলিথিন, প্লাস্টিক বোতল বা যেকোনো আবর্জনা যেখানে-সেখানে না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে। শহীদ মিনার সম্মানজনক স্থান। তাই জুতা বা স্যান্ডেল পরে সেখানে ওঠা উচিত নয়।
পোশাক নির্বাচনে সংযমী হওয়া
শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কালো অথবা সাদা পোশাক পরিধান করা বাঞ্ছনীয়। এই রঙগুলো আমাদের জাতীয় শোক ও শ্রদ্ধার প্রতীক। ব্যানার, ফেস্টুন বা দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করে ব্যক্তিগত কিংবা দলগতভাবে শ্রদ্ধা জানানো উচিত।
শ্রদ্ধা নিবেদনের সঠিক নিয়ম মেনে চলা
শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার সময় কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। শহীদ মিনারে প্রবেশের আগে জুতা খুলে ফেলতে হবে। ফুল দেয়ার সময় পুষ্পস্তবকের উপর রাজনৈতিক প্রতীক ব্যবহার না করাই ভালো।শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নিরবতা পালন করা এবং উচ্চস্বরে কথা বলা উচিত হবে না।
যানজট ও ভিড় সামাল দেওয়া
২১শে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়, তাই আগে থেকে পরিকল্পনা করা জরুরি। গাড়ি বা বাইক নিয়ে শহীদ মিনারের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা না করাই ভালো। কারণ রাস্তাগুলো সাধারণত যান চলাচলের জন্য বন্ধ থাকে। গণপরিবহন ব্যবহার করা কিংবা কিছু দূর হেঁটে যাওয়ার মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। ভিড় সামাল দিতে ধৈর্য ধরতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
অপরিচিতদের সঙ্গে সাবধানতা অবলম্বন
যেহেতু শহীদ মিনারে অনেক মানুষের সমাগম হয়, তাই পকেটমার বা প্রতারকদের উপস্থিতি থাকতে পারে। মূল্যবান জিনিসপত্র সাবধানে রাখা উচিত।
পরিচিত দল বা পরিবারের সঙ্গে থাকা ভালো। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা
প্রচন্ড ভিড়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে মাস্ক পরুন। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। ব্যস্ত এলাকায় বেশি সময় না কাটিয়ে দ্রুত বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
জাতীয় সংগীতের প্রতি শ্রদ্ধা
শহীদ মিনারে অনেক সময় জাতীয় সংগীত হয়।জাতীয় সংগীত চলাকালীন দাঁড়িয়ে থাকা এবং শ্রদ্ধার সাথে গাওয়া উচিত। শোক প্রকাশের সময় হাসাহাসি, উচ্চস্বরে কথা বলা বা অন্য কোনো অনুপযুক্ত আচরণ এড়িয়ে চলা উচিত।
ফুল সংগ্রহ ও উপস্থাপনা
ফুল শ্রদ্ধা জানানোর প্রধান প্রতীক, তাই ফুল কেনার সময় সতর্ক থাকা উচিত। ভালো মানের ফুল কেনা উচিত, যাতে শ্রদ্ধা প্রকাশের উপযোগী হয়। শহীদ মিনারে প্রবেশের সময় ফুলে থাকা প্লাস্টিক বা রিবন খুলে ফেলুন।
ফটোগ্রাফি ও সামাজিক মাধ্যমে সচেতনতা
শ্রদ্ধা নিবেদনের মুহূর্ত স্মরণীয় করতে অনেকে ছবি তোলেন, তবে শহীদ মিনারে অতিরিক্ত ফটোগ্রাফি করা বা ছবি তোলার জন্য অন্যদের ব্যাহত করা উচিত নয়। সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করার আগে ভাবা উচিত, যেন তা শ্রদ্ধাজনক হয়।
শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি যত্নশীল
অনেকেই পরিবারসহ শহীদ মিনারে যান, তাই শিশু ও বৃদ্ধদের বিশেষ যত্ন নেওয়া দরকার। শিশুদের হাত ধরে রাখা উচিত। বেশি ভিড়ের মধ্যে বৃদ্ধদের নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি।