বড়দিন বা ক্রিসমাস ডে একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। যা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিকভাবে উদযাপন করা হয়। এই দিনটি সান্তা ক্লজ, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ, উপহার বিনিময় এবং বিশেষ খাবারের জন্য পরিচিত। তবে বড়দিনের উৎসবের সঙ্গে পোশাকেরও একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। এই উত্সবে ট্রেন্ডি ও ফ্যাশনেবল পোশাক পরিধান করা হয়। এই বছর বড়দিনের উৎসবে ট্রেন্ডি পোশাক কেমন হতে পারে, তা নিয়েই থাকছে আজকের আলোচনা।
থিমড পোশাক
বড়দিনের উৎসবের জন্য থিমড পোশাক পরিধান করা বেশ জনপ্রিয়। এই পোশাকগুলো সাধারণত ক্রিসমাসের বিভিন্ন চিহ্ন যেমন সান্তা ক্লজ, রেনডিয়ার, ক্রিসমাস ট্রি, হলি, স্টার ইত্যাদি নকশায় তৈরি হয়। তরুণ-তরুণীরা এই ধরনের পোশাক পরিধান করতে পছন্দ করে। এছাড়া বড়দিনের উৎসবে থিমড সুইটসও প্রচলিত। যেখানে গ্রাফিক্যাল ডিজাইন থাকে। যা উৎসবের আনন্দকে দ্বিগুণ করে।
ক্রিসমাস কালার
ক্রিসমাসের ঐতিহ্যবাহী রঙগুলো রয়েছে লাল, সবুজ, সোনালি, রূপালি, সাদা ইত্যাদি। এই উৎসবে এসব রং ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এই রঙগুলোর মধ্যে লাল এবং সবুজ সবচেয়ে জনপ্রিয়। কারণ এটি সান্তার জামা এবং ক্রিসমাস ট্রি থেকে প্রাপ্ত। বড়দিনের উৎসবে ট্রেন্ডি পোশাকের মধ্যে লাল এবং সবুজ রঙের পোশাক, সোয়েটার, শার্ট বা স্কার্ট পরিধান করা বেশ জনপ্রিয়। এছাড়া গোল্ড বা সিলভার রঙের লাইট এবং অ্যাকসেসরি পোশাককে আরো দৃষ্টিনন্দন করে তোলে।
সোয়েটার
শীতকালীন বড়দিনের উৎসবে সোয়েটার পরিধান করার রীতি বেশ পুরনো। তবে এবারের ট্রেন্ডি সোয়েটারের ডিজাইন আরও আধুনিক এবং সৃজনশীল হয়ে উঠেছে। নানান ধরনের গ্রাফিক ডিজাইন, হালকা উজ্জ্বল রঙ, নেকলাইন এবং কাটিংয়ের মধ্যে আকর্ষণীয় সোয়েটার পাওয়া যায়। ইন্টেরেস্টিং প্যাটার্ন এবং রঙের সমন্বয়ে ডিজাইন করা সোয়েটার বড়দিনের সজ্জা এবং ট্রেন্ডের সঙ্গেও মানানসই। টাইট প্যান্ট বা স্কিনি জিন্সের সঙ্গে মানানসই সোয়েটার পরিধান করা যেতে পারে।
ট্রেন্ডি পোশাক
বড়দিনের উৎসবের জন্য সালোয়ার কামিজ, গাউন বা স্কার্ট পরিধান করা বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে নারীদের কাছে উজ্জ্বল এবং শাইনিং ম্যাটেরিয়ালের গাউন বেশ পছন্দের। এটি শীতকালীন পোশাকের জন্য আদর্শ। কারণ এটি শরীরকে উষ্ণ রাখবে এবং একইসঙ্গে আভিজাত্যও ফুটিয়ে তুলবে। সোনালি, লাল, রূপালি কিংবা সাদা রঙের গাউন বা স্কার্ট এবারের বড়দিনের অন্যতম ট্রেন্ড।
জ্যাকেট ও কোট
বড়দিনের উৎসব শীতেই হয়। তাই সঠিক এবং স্টাইলিশ জ্যাকেট বা কোট পরিধান অত্যন্ত জরুরি। এবারের ট্রেন্ডে সোফট ফ্যাব্রিকের স্যুইং কোট অথবা ফুল কোটের মধ্যে ডাবল ব্রেস্টেড ডিজাইন খুবই জনপ্রিয়। খোলামেলা কোট, ফার কোট, ডেনিম জ্যাকেটও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এমন ডিজাইনগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন রঙ যেমন কালো, ধূসর, বাদামি ইত্যাদি পোশাকের সঙ্গে বেশ মানানসই।
এক্সেসরিজ
বড়দিনের পোশাকের সঙ্গে উপযুক্ত এক্সেসরিজ পরিধান করলে পুরো লুক আরো ট্রেন্ডি হয়ে উঠবে। বড়দিনে লাল, সবুজ, রূপালি, সোনালি বা সাদা রঙের এক্সেসরিজ খুবই জনপ্রিয়। যেমন সান্তার হ্যাট, স্নোফ্লেক ডিজাইন করা কানের দুল, ক্রিসমাস স্টাইলের নেকলেস, চমকপ্রদ রিং, কিংবা ব্রেসলেট এসব দিয়ে সাজানো যেতে পারে। এছাড়া বড়দিনের উৎসবে ক্রিসমাস ট্রি কিংবা গিফট বক্সের নকশায় ডিজাইন করা ব্যাগও বেশ জনপ্রিয়।
মাচিং অ্যাটায়ার
আগে কেবল এককভাবে পোশাক পরিধান বা সাজার প্রচলন থাকলেও, বর্তমান সময়ে পরিবারের সবাই মিলে মাচিং পোশাক পরিধান করা একটি বড় ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেমন পুরো পরিবার এক রঙের সোয়েটার পরিধান করতে পারে। যেখানে সবার পোশাকের ডিজাইন একরকম হবে। তবে কিছুটা বৈচিত্র্য থাকতে পারে। পরিবারের সদস্যদের জন্য নানা ধরনের সোয়েটার, ড্রেস, স্কার্ট বা শার্টের ডিজাইন নিয়ে মাচিং অ্যাটায়ার তৈরি হয়।
ফ্যাশনেবল স্নিকারস
বড়দিনের পার্টি বা আউটডোর ইভেন্টের জন্য ফ্যাশনেবল স্নিকারস পরিধানও জনপ্রিয়। এটি কেবল আরামদায়ক নয়, বরং স্টাইলিশও বটে। বিভিন্ন ধরনের ব্র্যান্ডের ট্রেন্ডি স্নিকার্স বড়দিনের পোশাকের সঙ্গে পরিধান করে খুব ভালো মানানসই হয়। ধূসব, কালো, সাদা বা ক্রিসমাস রঙের স্নিকার্স পরিধান করলে পুরো লুক আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
বড়দিনের উৎসবে ঐতিহ্যবাহী রঙ, ডিজাইন, এক্সেসরিজ, এবং আধুনিক ফ্যাশনেবল পোশাকের মিলিত প্রয়োগ আপনার লুককে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। সুতরাং বড়দিনের আনন্দকে দ্বিগুণ করতে, নিজের পছন্দমতো স্টাইলিশ পোশাক নির্বাচন করুন।