সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পূণ্যলগ্ন শুভ মহালয়া আজ। এর মধ্য দিয়ে শুরু হলো দেবীপক্ষের। চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। আর এই চন্ডীতেই আছে দেবী দুর্গার সৃষ্টির বর্ণনা।
শারদীয় দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো মহালয়া।
পুরাণ মতে, এ দিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। এ দিন থেকেই দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয়। মহালয়া মানেই আর ৬ দিনের প্রতীক্ষা মায়ের পূজার। আর এই দিনেই দেবীর চক্ষুদান করা হয়।
আগামী ৯ অক্টোবর থেকে ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে দুর্গাপূজা শুরু হলেও মূলত আজ থেকেই দুর্গাপূজার আনন্দধ্বনি শোনা যাবে। আগামী ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে উৎসবের। পূজার এই সূচনার দিনটি সারা দেশে আড়ম্বরের সঙ্গে উদ্যাপিত হচ্ছে। ভোরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য মন্দিরে এ উপলক্ষে চলছে বিশেষ অনুষ্ঠান।
দেবী দুর্গা সব অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীক রূপে পূজিত। মহামায়া অসীম শক্তির উৎস। পুরাণে আছে, মহালয়ার দিনে, দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী কোনো মানুষ বা দেবতা কখনো মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না। ফলত অসীম ক্ষমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে এবং বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চায়।
ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব সম্মিলিতভাবে ‘মহামায়ার’ রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন এবং দেবতাদের ১০টি অস্ত্রে সুসজ্জিত সিংহবাহিনী দেবী দুর্গা ৯ দিনব্যাপী যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও হত্যা করে।
মহালয়ার আর একটি দিক হচ্ছে, এই তিথিতে যারা বাবা-মা ছাড়া তারা তাদের পূর্বপুরুষদের স্মরণ করে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে অঞ্জলি প্রদান করেন। সনাতন ধর্ম অনুসারে এই দিনে প্রয়াত আত্মাদের মর্ত্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রয়াত আত্মার যে সমাবেশ হয় তাকেই বলা হয় মহালয়া।
মহালয়া উপলক্ষ্যে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরসহ দেশের বিভিন্ন মন্দিরে আজ বুধবার ভোর থেকেই চন্ডীপাঠসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা চলছে।
অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে, রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে সকাল সাড়ে ৭টায় পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তি কামনায় তিল-তর্পণ। সকাল সাড়ে ৮টায় মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজা অনুষ্ঠান। এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। ভোর সাড়ে ৬টা থেকে শুরু হয়েছে এসব আনুষ্ঠানিকতা।